ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ধা‌নের শী‌ষে ভোট চাই‌লেন খা‌লেদা

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪০, ১৪ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ধা‌নের শী‌ষে ভোট চাই‌লেন খা‌লেদা

‌জ্যেষ্ঠ প্র‌তি‌বেদক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বুধবার রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেশন সেন্টারে মহানগর বিএনপি আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে ভোট চান তিনি।

আগামী নির্বাচন একতরফা হতে দেওয়া হবে না, এ কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘ঢাকা সিটি নেতারা আরো ঐক্যবদ্ধ হোন। আসুন, ধানের শীষকে আমরা ভোট দিয়ে বিজয়ী করি। এ দেশের মানুষকে আবার শান্তি-উন্নতি-গণতন্ত্রের পথে নিয়ে যাব।’

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন জেলা সফরে গিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট চাইলেও বিএনপি প্রধান এই প্রথম একাদশ নির্বাচন উপলক্ষে দলীয় প্রতীকে ভোট চাইলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে সবচেয়ে বেশি ভয় পায়। তারা ভাবছে, আগামী নির্বাচনেও তারা চুরি করে ক্ষমতায় বসবে। না, তাদেরকে এবার আর চুরি করে ক্ষমতায় বসতে জনগণ দেবে না। আওয়ামী লীগ চাইবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মামলা-হামলা ও হয়রানি করে একতরফা নির্বাচন করবে। আমি বলতে চাই, আওয়ামী লীগকে এবার একতরফা নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। একতরফা নির্বাচন এ দেশে আর হবে না। সেটা কারো কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।’

তিনি আরো বলেন ‘এবারকার নির্বাচন হবে সকলের অংশগ্রহণে।শেখ হাসিনা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, কিন্তু ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে পারবে না। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। মানুষ বুঝে গেছে, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করলে ফলাফল কী হয়। নির্বাচন হবে সহায়ক সরকারের অধীনে। সেখানে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে। ইনশাআল্লাহ এই লুটেরা, খুনি, চোর, জনগণের হত্যাকারী, মা-বোনদের নির্যাতনকারী, ছাত্র-ছাত্রীদের অত্যাচারকারী এই সরকারকে জনগণ নির্বাচনে কেমনভাবে প্রত্যাখান করে, তাদের পরিণতি কী হয়, সেদিন তারা নিজেরা দেখে নিতে পারবে।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমরা নির্বাচনকে ভয় পাই না, আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাই। কিন্তু সেই নির্বাচন হতে হবে নির্বাচনের মতো নির্বাচন। সেই নির্বাচন হবে সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন ও সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন।'

নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির ঢাকা মহানগরের নতুন কমিটিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগঠন শক্তিশালী করার তাগিদও দেন দলের চেয়ারপারসন।

পার্বত্য জেলায় পাহাড় ধসে সেনাবাহিনীর সদস্যসহ ব্যাপক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করে আহতদের সুচিকিৎসা দাবি করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

দেশে দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের দুরবস্থার জন্য সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘সরকার গরিব মানুষের সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাদের সময় ফুরিয়ে এসেছে, তারা বুঝে গেছে। সেজন্য এখন তারা লুটপাট করে সেগুলো পাচার করতে ব্যস্ত। তাদের যে সেক্রেটারি জেনারেল, সে বলে দিয়েছে, যত পারো লুটেপুটে নিয়ে চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করো। সেজন্য তারা লুটপাট করছে।’

নরসিংদী ছাত্রদলের নেতা সিদ্দিকুর রহমান নাহিদের ছবি দেখিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এই সরকার পবিত্র রমজান মাসেও বিএনপির নেতা-কর্মীদের গুম করছে।'

পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তারা মনে করছে, পুলিশ দিয়ে জনগণকে দমন করে রাখবে। পুলিশ বাহিনীকে খারাপ কাজে সরকার ব্যবহার করছে। আমি পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে বলতে চাই, আপনার জনগণের সেবক, আপনাদের দায়িত্ব হলো জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া। আপনারা ঠিক থাকেন, তাদের পাশে থাকেন। আওয়ামী লীগের এই গুণ্ডা-সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে জেলখানায় নিন। ভবিষ্যতে আপনারা ভালো থাকবেন। আপনার জন্য আমাদের অনেক কর্মসূচি রয়েছে।’

বিদেশে থাকা বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের নতুন সভাপতি এম এ কাইয়ুমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিও জানান খালেদা জিয়া।

উল্লেখ্য, রাজধানীর গুলশানে ইতালীয় নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যা মামলার আসামি এম এ কাইয়ুম।

ইফতার মাহফিলে মূল মঞ্চে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপাররসের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেল, উত্তরের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসান, সহ-সভাপতি আব্দুল আলী নকি, মো. সাহাবুদ্দিন প্রমুখকে নিয়ে ইফতার করেন খালেদা জিয়া।

ইফতার অনুষ্ঠানে আরো ছিলেন- বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ইনাম আহমেদ চৌধুরী, রুহুল আলম চৌধুরী, আতাউর রহমান ঢালী, ফরহাদ হালিম ডোনার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সানাউল্লাহ মিয়া, নুরী আরা সাফা, আমিনুল হক, সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, হাফেজ এম এ মালেক, শাহ নেসারুল হক, বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতাদের মধ্যে আতিকুল ইসলাম মতিন, মাসুদ খান, নবী সোলায়মান, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, আবুল হোসেন, আবুল হাশেম, শাহিনুর আলম মারফত, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, এ জি এম শামসুল হক, কফিলউদ্দিন আহমেদ, শামীম পারভেজ, দক্ষিণের কাজী আবুল বাশার, ইউনুস মৃধা, মোশাররফ হোসেন খোকন প্রমুখ।



রাই‌জিং‌বি‌ডি/ঢাকা/১৪ জুন ২০১৭/‌রেজা/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়