ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

আগে সহায়ক সরকারের ফয়সালা চায় বিএনপি

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ২৩ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আগে সহায়ক সরকারের ফয়সালা চায় বিএনপি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে ‘সহায়ক সরকার’ নিয়ে সমাধানে আসতে চায় বিএনপি।

নির্বাচনকালীন ব্যবস্থা নিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধান না হলে রাজপথে দাবি আদায়েরও ঘোষণা দিয়েছে দলটি।

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনে নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট’ নামের একটি সংগঠন।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের দেওয়া রোডম্যাপের আগে সহায়ক সরকারের ফয়সালা দিতে হবে। এই ফয়সালা হতে পারে টেবিলে, হতে পারে মাঠে। তবে আমরা চাই সহায়ক সরকারের এই ফয়সালা হোক শান্তিপূর্ণভাবে।’

আওয়ামী লীগের রূপরেখাকে বাস্তবায়ন করতেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকে সামনে রেখে রোডম্যাপ দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।

প্রধানমন্ত্রী পদে শেখ হাসিনাকে রেখে একাদশ নির্বাচন ‘প্রহসন’ হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এদেশের জনগণ আপনাকে (শেখ হাসিনা) বিশ্বাস করে না, আমরা যারা বিরোধী দল, তারাও আপনাকে বিশ্বাস করি না। বিএনপিসহ বাংলাদেশের বহু রাজনৈতিক দলের আপনার ওপর আস্থা নেই।

‘আমাদের সোজা কথা- আগামী সংসদ নির্বাচনের সময়ে আপনি যদি ক্ষমতায় থাকেন সেই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। সেটা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো প্রহসন এবং গণতন্ত্রকে হত্যা করা হবে।’

নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীনরা আবারো নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়- মন্তব্য করে তিনি বলেন, নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী, নিজেদের সুবিধার জন্য নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের রদবদল করা হচ্ছে, কিন্তু কমিশন তা কিছুই জানে না। এরকম কমিশনের দ্বারা কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

সংবিধানের বাইরে কিছুই করা যাবে না বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করেন খন্দকার মোশাররফ।

‘এদেশে সংবিধানের বাইরে নির্বাচন হওয়ার উদাহরণ আছে। উদাহরণ ১৯৯১ সালে প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ সাহেব। আবার আমরা অতীতে দেখেছি, জনগণের প্রত্যাশা, জনগণের প্রয়োজনে সংবিধান পরিবর্তন করা হয়েছে। আগামী দিনেও সহায়ক সরকারের ব্যাপারে যদি প্রয়োজন হয়, জাতি চায়, সংবিধান পরিবর্তন করে, সংশোধন করে সেই সহায়ক সরকারের রূপরেখা সংবিধানে সন্নিবেশিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আজকে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, এটা করতে হবে। এটা না করলে জনগণ তাদের বাধ্য করবে। তাহলেই সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হবে।’

‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তো ১৯৯৬ সালেই এদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন উপলব্ধি করেছিলেন। কিন্তু আজ তিনি ক্ষমতায় থাকার জন্য, নিজেদের স্বার্থের জন্যে সংবিধান কাটা-ছেঁড়া করে নিজেদের মতো করে নিয়েছেন। আজ যদি দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকত, তাহলে নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্নই থাকত না’, বলেন খন্দকার মোশাররফ।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে ফিরেই সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন জানিয়ে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘দেশে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য বেগম খালেদা জিয়া একটি সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন। এই রূপরেখা কারো পক্ষেও নয় আবার কারো বিপক্ষেও নয়। এটি একটি সমঝোতার বা আলোচনার প্রস্তাব। সব দলের সমঝোতা না হলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আর কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে মোশাররফ বলেন, ‘জনগণের প্রয়োজনে, জনগণ যদি চায়, তাহলে এই সংবিধান পরিবর্তন করে একটি সহায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় এই দাবি নিয়ে জনগণ মাঠে নামবে। এবং তারা তাদের অধিকার আদায় করে নেবে।’

আয়োজক সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুকোমল বড়ুয়া প্রমুখ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ জুলাই ২০১৭/রেজা/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়