ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নির্বাচন ভণ্ডুলে ‘লন্ডনচক্রান্ত’ শুরু হয়ে গেছে

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৪, ২৫ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নির্বাচন ভণ্ডুলে ‘লন্ডনচক্রান্ত’ শুরু হয়ে গেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির কথাবার্তায় আগামী জাতীয় নির্বাচন ভণ্ডুল করার আশঙ্কা করছেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এ কারণে ‘লন্ডনচক্রান্ত’ শুরু হয়ে গেছে বলে দাবি করেন তিনি।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমাদের জাতীয় নির্বাচনের আর বেশি সময় বাকি নেই। আমরা আশা করছি, সংবিধান অনুযায়ী ১৮ ডিসেম্বর অথবা ১৯ জানুয়ারির মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৪ দল সবসময় গণতন্ত্রের ধারাকে অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর। অতীতেও আমরা যেকোনো চক্রান্তকে মোকাবেলা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় নির্বাচন করতে সমর্থ হয়েছি।

জোটনেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রেখে নাসিম আরো বলেন, এবারও আগামী জাতীয় নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন পরিচালনা করবে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তারা যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

ইসিকে ১৪ দল যেকোনো বিষয়ে সহযোগিতা করবে এমন অঙ্গীকার করে মুখপাত্র নাসিম বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে আগামী নির্বাচন সম্পন্ন করবে। আমাদের আস্থা আছে নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তারা নিশ্চয়ই নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পারবে।

এ ব্যাপারে আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে নাসিম বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি এবং আমাদের শঙ্কা আছে। তাদের(বিএনপি) কথাবার্তা এবং কার্যকলাপ প্রমাণ করে, তারা চিরদিন চক্রান্তের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। তারা চক্রান্তের বাইরে কোনোদিন রাজনীতি করে নাই। এবারও তাদের চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি, ২০০১ সালের মতো আবারও তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মধ্য দিয়ে সাহাবুদ্দিন মার্কা নির্বাচন করার জন্য পাঁয়তারা শুরু করেছে। বিএনপি-জামায়াত জোট অতীতেও গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করার জন্য চক্রান্ত করে নির্বাচনকে প্রতিহত করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছিল।

‘আমরা এবারও লক্ষ্য করছি লন্ডনচক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে। বিএনপির কথাবার্তায় বোঝা যায় তারা একটি নীলনকশা সামনে রেখে আগামী নির্বাচন ভণ্ডুল করার জন্য তৎপর হয়ে গেছে।’

তিনি আরো বলেন, আমরা বারবার বলেছি, সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। সংবিধান অনুযায়ীই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সহায়ক সরকারের নামে বিভিন্ন ভিশন দিয়ে তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও ভণ্ডুল করতে চায়। সবার নির্বাচন করার অধিকারও আছে আবার সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন বর্জন করার অধিকারও সবার আছে। আমরা জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করব এবং শেখ হাসিনার অর্জনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ১৪ দল ঐক্যবদ্ধ আছে। আগামী নির্বাচনে জনগণের রায়ের মধ্য দিয়ে আবারও আমরা ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পারব বলে আশা করছি।

বিএনপি যদি তাদের চক্রান্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখে তাহলে জনগণই তাদের প্রতিহত করবে দাবি করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, অতীতেও আমরা দেখেছি, বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের কথা বলে জ্বালাও-পোড়াও করে নির্বাচন ভণ্ডুলের চেষ্টা করেছেন। তারা এবারও নীলনকশায় আছে। তারা আবারও ২০০১ সালের মতো সাহাবুদ্দিন মার্কা নির্বাচন করতে চায়। এটা আমরা করতে দেব না।

চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে একাধিকবার জামায়াতের এমপি প্রার্থী ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মুমিনুল হক চৌধুরীর মেয়ে রিজিয়া নদভী মহিলা আওয়ামী লীগের পদ পাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এটা প্রথম শুনলাম। মহিলা আওয়ামী লীগ আমাদের (অঙ্গ সংগঠন) সহযোগী সংগঠন। তার মধ্যে কে আছে, না আছে; এটা জানি না। জানার কথাও না। আপনারা বলেছেন, এটা নিশ্চয়ই খোঁজ-খবর নেব। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা, এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না। ওদের সঙ্গে কী কারণে আলোচনা করব, বলেন। যারা হত্যাকারীকে আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিয়েছে। ২০১৪ সালে মানুষকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে মেরেছে। তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না। আলোচনা হবে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে। নির্বাচন কমিশন ওদের ডেকেছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে। মওদুদ সাহেব হচ্ছে ফর্মুলা দেওয়ায় অভ্যস্ত। তার অতীত দেখেন, সব সময় ওনি কত ফর্মুলা দিয়েছেন।

গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আব্দুস সবুর, সুজিত রায় নন্দী, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, এসএম কামাল হোসেনসহ ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, জেপির শেখ শহিদুল ইসলাম, জাসদের শিরীন আখতার, শরীফ নুরুল আম্বিয়া, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম, অসিত বরণ রায়, বাসদের রেজাউর রশিদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ জুলাই ২০১৭/নৃপেন/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়