ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

মিয়ানমারের গণহত্যার বিষয় জাতিসংঘে না তোলায় প্রশ্ন ফখরুলের

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২১, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মিয়ানমারের গণহত্যার বিষয় জাতিসংঘে না তোলায় প্রশ্ন ফখরুলের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘে দেওয়া তার বক্তব্যে  মিয়ানমারের গণহত্যার বিষয়টি জোরালভাবে তুলে ধরে নিন্দা না জানানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে রোহিঙ্গাদের সমস্যার কথা বলেছেন, কিন্তু কী বলেছেন? মিয়ানমার যে গণহত্যা চালাচ্ছে, একবারের জন্যও সেটা তিনি বলেননি। মিয়ানমারের নিন্দা করেননি।’

‘অথচ এটা সবচেয়ে বড় প্রয়োজন ছিল। আজকে এই জিনিসটি (রোহিঙ্গা ইস্যু) না বলার মানেই হচ্ছে, মূল জায়গাটিতে তিনি যাচ্ছেন না। মূল জায়গাতেই বেশি যাওয়া দরকার। মিয়ানমার এর আগেও কয়েক দফায় রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও হত্যা চালিয়েছে, তাদের জাতিগতভাবে নির্মূল করার জন্য কাজ করছে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘কারামুক্তি দিবস’ উপলক্ষে শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।

রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে মিয়ানমারের ভেতরে ‘সেফ জোন’ গড়ার যে প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন সেটির প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখানে সেফ জোনের কথা বলা হয়েছে। সেফ জোন বলতে কী বুঝানো হয়েছে, সেটি আমরা বুঝতে পারিনি। বলা হয়েছে, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সেফ জোন, অর্থাৎ এখানে কি আরেকটি প্যালেস্টাইন সৃষ্টি করতে চান?’

‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। তাদের সম্পূর্ণ নাগরিক মর্যাদা দিয়ে ফেরত নিতে হবে। তা না করা হলে তারা বিচ্ছিন্নভাবেই থেকে যাবে এবং তাদের ওপর নির্যাতন চলতেই থাকবে। রোহিঙ্গাদের সমস্ত নাগরিক অধিকার দিয়ে সম্মানের সঙ্গে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ইস্যুর মূল জায়গাটিতে যাচ্ছেন না বলেও এ সময় মন্তব্যে করেন বিএনপি মহাসচিব।

জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করা ছাড়া রোহিঙ্গা সংকট থেকে সমাধান মিলবে না মন্তব্যে করে তিনি বলেন, ‘এককভাবে আপনি আপনার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য এসব কাজ করবেন, সেখানে যদি পুরো জাতিকে সম্পৃক্ত না করেন তাহলে সমস্যা সমাধান করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার হয়ে যাবে।’

‘পুরো জাতিকে একসঙ্গে নিয়ে যদি এই বিষয়ে কথা বলেন, মিয়ানমারকে গণহত্যার জন্য দায়ী করেন এবং মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যদি অর্থনৈতিক অবরোধের কথা বলেন; তাহলেই শুধু মিয়ানমার বাধ্য হবে তাদের গণহত্যা বন্ধ করতে এবং রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিবে। আজকে সেটা (ঐক্য) না করা হলে আপনার হাত শক্তিশালী হবে না। দেশের যে সমস্যা আছে, তার সমাধানও হবে না”, বলেন বিএনপির এই মুখপাত্র।

সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে মন্তব্যধ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এজন্য তারা অভ্যন্তরীণভাবে একনায়কতন্ত্র ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যযবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. ফখরুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আওয়াল খান, শাহবাগ থানা কৃষক দলের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম, আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ বি এম রুহুল আমিন আকন্দ প্রমুখ।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭/রেজা/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়