ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলেননি সুষমা’

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ২৩ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলেননি সুষমা’

নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশে সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আগামী জাতীয় নির্বাচন সহায়ক সরকারের অধীনে হবে এমন কোনো প্রতিশ্রুতি বিএনপিকে দেননি।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের এক বছর পূর্ণ হওয়ায় সম্পাদকমণ্ডলীর এ সভা করা হয়।

রোববার রাতে ঢাকার একটি হোটেলে সুষমা স্বরাজের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ওই সাক্ষাতের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী নির্বাচনের বিষয়টি খালেদা জিয়া বৈঠকে তুলে ধরেছেন এবং ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেগুলো শুনেছেন। তিনি আমাদের বলেছেন, গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত প্রত্যাশা করে, তার প্রতিবেশী দেশগুলোতেও যাতে গণতন্ত্র বজায় থাকে, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হয় এবং নির্বাচন কমিশনও যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করে।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে বলেছেন, একটা পার্টিসিপেটরি ইলেকশন হবে, এটা হওয়া উচিত। তাতে ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব আশাবাদী হয়েছেন। আমরাও তো আশাবাদী। আমরাও তো এই ইলেকশনই চাই। আমাদের তো এখানেই আশাবাদের বিষয়ই। আমরাও একটা ইনক্লুসিভ, ফ্রি, ফেয়ার, পার্টিসিপেটরি, ক্রেডিবল, অ্যাকসেপ্টেবল একটা ইলেকশন করতে চাই। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই এই কথাটি উচ্চারণ করে আসছেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কখনো শ্রাবণের আকাশের সব মেঘ তাদের মুখমণ্ডলে আসে। তারা কখনো খুশি, কখনো বেজার। কখনো হাস্যময়, কখনো বিষাদ। এটা আমাদের হয় না। আমরা একরমই আছি।

তিনি আরো বলেন, এই যে তারা বলল, আওয়ামী লীগকে ২৫ সিট দেবে। তারা কি ২৫ সিট দেওয়ার মালিক। তাদের কি মনে নেই, তারা যেবার ৩০ সিট আমাদের দিতে চেয়েছিল, সেবার তারাই ৩০ সিট পেয়েছিল (প্রকৃতপক্ষে ২৯ সিট)। তারা সেবার ৩০ সিট আমাদের দিতে চেয়েছিল কিন্তু সেটা তারাই পেয়েছিল। সিট কে কতটা পাবে, এটা বাংলাদেশের জনগণ ঠিক করবে। আর কার ভাগ্যে কত সিট সেটা ঠিক করবেন আল্লাহ। এখানে আর কারো কিছু করার নেই। আমাদেরকে ২৫ সিট বাদ দিলে বাকিটা তো ওনাদের? তারপরও তারা ইলেকশনে আসুক। এই অতিরিক্ত আশাবাদের ফলে ইলেকশনটা হউক। ইলেকশনে আসুন, বয়কট করবেন না। আমাদের অনুরোধ, এইটুকু। জাতীয় স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা চাই, একটা বড় দল ইলেকশনে আসুক। আপনারা ইলেকশনে আসবেন, এটা জনগণেরও প্রত্যাশা, আমাদেরও প্রত্যাশা। আমরাও চাই, আপনারা ভোটে আসুন।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে সহায়ক সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সহায়ক সরকার নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। তারপরও সেখানে আপনারা এই ইস্যু নিয়ে গেছেন। সুষমা স্বরাজ কিন্তু সহায়ক সরকারের অধীনে ইলেকশন হবে এমন কোনো প্রতিশ্রুতি আপনাদের দেন নাই। যতটুকু শুনেছি, এই প্রশ্ন করার পর তিনি বলেছেন, আমাদের দেশে এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন তো এভাবেই হয়। অর্থাৎ যারা ক্ষমতাসীন সরকার তারাই সহায়ক সরকারের দায়িত্ব পালন করে। এটা অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো ভারতেও তাই। কাজেই ভারত তাদের দেশে যেভাবে হয়, সেটাই বলবে। অন্যকিছু তারা বলবে না।

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সেনাবাহিনীর নির্বাহী ক্ষমতা চেয়েছে, তাহলে আওয়ামী লীগ কেন চাইল না? এ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুর কাদের বলেন, আপনাকে কে বলল, আওয়ামী লীগ সেনাবাহিনী মোতায়নের বিরুদ্ধে? বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন আর্মি ডিপ্লয়মেন্টে তারা ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার এলাউ করেছিল? তারা করেছে কখনো? নিজে যা প্র্যাকটিস করে না সেটা কেন বলে? আমরা সেনা মোতায়নের বিরুদ্ধে নই। আমাদের বক্তব্য সেনা মোতায়েন প্রয়োজনে হলে সেটা হবে আইন অনুযায়ী। নির্বাচন কমিশন যদি প্রয়োজন মনে করে সেনা মোতায়েন কোথাও করবে, তাহলে নির্বাচন কমিশন করতে পারে। আমরা তো এটার বিরোধিতা করিনি। অহেতুক এই প্রচার-অপপ্রচারটা কেন হচ্ছে, আমরা জানি না।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তিনি একজন অভিজ্ঞ পলিটিশিয়ান, একজন কমিটেড পার্লামেন্টারিয়ান, তিনি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন, যে আশ্বাস দিয়েছেন, আমি আশাবাদী।

ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সভায় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা ছাড়াও কার্যনির্বাহী সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এ কে এম এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, অসীম কুমার উকিল, আবদুস সোবহান গোলাপ, আব্দুস সবুর, দেলোয়ার হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, ফরিদুন্নাহার লাইলী, ডা. রোকেয়া, শাম্মী আহম্মেদ, টিপু মুনশি, হাছান মাহমুদ, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আমিনুল ইসলাম আমিন, এস এম কামাল হোসেন, ইকবাল হোসেন অপু, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ অক্টোবর ২০১৭/নৃপেন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়