ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ চায় বিএনপি

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১৫, ২৫ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ চায় বিএনপি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ বের করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

সরকারকে পজিটিভ রাজনীতিতে আহ্বান জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশের স্বার্থে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি রাস্তা বের করুন, যাতে সকলের নিকট একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা যায় এবং যাতে মানুষ ভোট দিতে পারে। ’

বুধবার দুপুরে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে এই কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকারের সময় শেষ হয়ে গেছে, পায়ের নিচে মাটি নেই। ক্ষমতায় টিকে থাকতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে চায়। কিন্তু এই দেশের ইতিহাস আছে, যাদের ওপর ভর করে ক্ষমতা চালাচ্ছেন, জনগণ জেগে উঠলে সময় এলে এরাও পাশে থাকবে না। তাই যা হয়েছে সেই নেতিবাচক বিষয় বাদ দিয়ে আসুন পজিটিভ রাজনীতি করি। দেশের মানুষের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিন। আমরা বলি না বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন।’

সুষ্ঠু নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যে সংলাপ করছে এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি অবাধ নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘ইসি দুই মাস ধরে যে সংলাপ করেছে সেটি একটা লোক দেখানো আইওয়াস। সংলাপে অংশ নেওয়া সবাই বলেছে যে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এখন জাতি তাকিয়ে আছে ইসি কী করে? কিন্তু ইসি কিছুই করতে পারবে না। কারণ সরকারের বাইরে গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কাজ করার শক্তি নেই। এরপরও আমরা পর্যবেক্ষণ করছি, তারা নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে কি না।’

নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মামলার মাধ্যমে তাদের সাজা দিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। সব মামলাকে শেষ পর্যায়ে নিয়ে সাজা দিতে চায়। মামলা দিয়েই তারা খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ শীর্ষ নেতাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার কৌশল নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই সরকার মানুষকে ভয় পায়। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তারেক রহমানকে সবচেয়ে বেশি ভয় পায়। সেজন্য তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হচ্ছে। এই সরকার সম্পূর্ণরুপে মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে গেছে। এজন্য ক্ষমতায় টিকে থাকতে অপকৌশল নিতে হচ্ছে। এজন্য মামলার অপকৌশল নিয়েছে তারা।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সরকার খালেদা জিয়ার মামলা শেষ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় নিম্ন কোর্ট থেকে খালাস পেলেও হাইকোর্ট থেকে সাজা দিয়েছে। বিএনপির এমন কোনো নেতা নেই যার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা নেই। এম কে আনোয়ার চলে গেলে শুধু মামলার কারণে। শেষ পর্যায়ে এসে তাকে এমন মামলা দিলো যে তিনি নিতে পারলেন না।’

সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা, ‘সরকার মুখে উন্নয়নের কথা বলে আর মেগা প্রজেক্টের উদ্দেশ্য হচ্ছে মেগা চুরি। হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট করবে আর হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেবে। এই যে উড়াল সেতু কিছুদিন পরে দেখবেন তা ভাঙতে শুরু করেছে। রাস্থাঘাটে চলাফেরা করা যায় না এতো খারাপ অবস্থা।’

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘বাজারে এমন কোনো সবজি নেই, যা মানুষের ক্রয় ক্ষমতার ভেতরে আছে। গ্যাস, পানি বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। জনগণের পকেট খালি করছেন আর নিজেদের পকেট ভরছেন। ইতিহাস বলে মানুষ দীর্ঘদিন এসব সহ্য করবে না। তখন কামান দিয়ে কিছু হবে না।’

নগর বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, সহ-সভাপতি ইউনুস মৃধা, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পটু, রফিকুল ইসলাম রাসেল, তানভীর আহমেদ রবিন, শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতু করিম বাদরু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু প্রমুখ।        

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ অক্টোবর ২০১৭/রেজা/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়