ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট ভয়াবহ চক্রান্ত’

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫৫, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট ভয়াবহ চক্রান্ত’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধির গেজেট প্রকাশকে ‘ভয়াবহ চক্রান্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে বিরোধী মতকে দমন করতেই এটি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ‘সাগর-রুনি মিলনায়তনে’ কমরেড মো. তোযাহার-এর ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী ও রাজশাহীর তানোরে সাম্যবাদী বিপ্লবী শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠান আয়োজন করে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল।

বিচারকদের শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধির গেজেট প্রকাশের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৮ বছর ধরে মামলা চললো, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মামলা। সেই মামলা রায় হয়ে গেলো যে, বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করতে হবে। বিচার বিভাগে প্রশাসনের কোনো কর্তৃত্ব থাকবে না। এ ব্যাপারে রায় দিয়েও দিয়েছিলেন, রায় বাস্তবায়নও করতে বলেছিলেন শাসন বিভাগকে। এই বলার কারণে আমাদের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘সরকারের হাতেই থাকছে নিয়ন্ত্রণ। বিচার বিভাগের যে শৃঙ্খলা বিধান করেছে, এটি ভয়াবহ রকমের একটি বিচ্যুতি, চক্রান্ত। এর মাধ্যমে বিচারবিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করেই ভিন্ন মতকে তারা নিয়ন্ত্রণ করবে।’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে কল্পিত সম্পদের তথ্য দিয়ে তার বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। কল্পিত গল্প দিচ্ছে যে, তার নামে বিদেশে সম্পদ রয়েছে। যেসব গণমাধ্যমের কথা বলা হচ্ছে তার কোনো অস্তিত্ব নেই। এই ধরনের মিথ্যা, ভিত্তিহীন তথ্য তারাই প্রচার করে যাদের পায়ের নিচে কোনো মাটি নাই।’

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারি দলের কোনো কোনো বড় নেতা যারা বেশিরভাগ সময় বিদেশে থাকেন তারা মাঝে মাঝে এসে বড় বড় কথা বলেন। আগে একবার বলেছেন, তার কাছে তথ্য আছে আওয়ামী লীগ জিতবেই। এখন বলছেন, আওয়ামী লীগ জিতবেই আরো বেশি ভোটে জিতবেই।’

‘আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে কোন তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ কথা বলেন। দেন না একটা নির্বাচন তাহলেই তো প্রমাণ হয়ে যাবে। নির্বাচন দিন যে নির্বাচনে আপনারা সরকারে থাকবেন না। নিরপেক্ষ ভোট হবে জনগণ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। প্রমাণ হয়ে যাক।’ বলেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘জনগণই হচ্ছে একমাত্র শক্তি যার ওপর আমরা নির্ভর করি। আমাদের বাইরে থেকে ঘুরে এসে বলতে হয় না আমরা জিতব।’

‘নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে। ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না। তারা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন চায়, যার মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্বাচিত করবে। ধানাই-পানাই করে সংবিধানের দোহাই দিয়ে নির্বাচন হবে না।’

এ সময় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধান থেকে বাদ দেওয়ায় এর কঠোর সামলোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘সংবিধান বাইবেল নয়, জনগণের জন্য পরিবর্তন করতে হবে। অন্যথায় মানুষ তা গ্রহণ করবে না।’

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চালের দাম ৬০ টাকা, দশ টাকায় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো সরকার। প্রতিজ্ঞা করেছিলো বিনা খরচে সার দেবে। সারের দাম এখন আগের তুলনায় তিন-চারগুণ বেশি। মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। পেঁয়াজ ১২৫ টাকা। প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে সবকিছু মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। আর শাসক গোষ্ঠী তৃপ্তি লাভ করেছে তারা দেশকে উন্নয়নের রোল মডেল করেছে।’

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাঈদ আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সভাপতি রেহেনা প্রধান, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ ডিসেম্বর ২০১৭/রেজা/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়