ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে রাজশাহীতে উৎসবের আমেজ

31,63 || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে রাজশাহীতে উৎসবের আমেজ

রাজশাহী থেকে নৃপেন রায় ও তানজিমুল হক : তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে আগামীকাল বৃহস্পৃতিবার বিভিন্ন উন্নয়ন উপহার নিয়ে রাজশাহী আসছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে রাজশাহী উৎসবের শহরে পরিণত হয়েছে। বৃহস্পতিবার নতুন আটটি থানাসহ ২৫ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সরেজমিনে রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভাস্থলসহ শহর ঘুরে এমন চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে।

বুধবার রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের প্রাক্তন মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, একদিনের রাজশাহী সফরে প্রধানমন্ত্রীর নতুন আটটি থানাসহ ২৫ উন্নয়ন প্রকল্পের  উদ্বোধন করবেন। এছাড়া আরো চারটি নতুন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এটি রাজশাহীবাসীর জন্য আনন্দের খবর ও বড় পাওয়া। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহীর মাদ্রাসা ময়দানে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে রাজশাহী ছেয়ে গেছে পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানারে। প্রচার চলছে মাইকে মাইকে। সভা, সমাবেশ, প্রতিনিধি সভা ও গণসংযোগ করেও প্রচার চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, সিটি করপোরেশন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সফরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যে ঐক্য গড়ে উঠছে তা আগামী নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহী আসছেন আগামীকাল বৃহস্পতিবার। এদিন রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেবেন তিনি।

সাত বছর আগে রাজশাহীর এই ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে দলীয় জনসভায় ভাষণ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর বাগমারা, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চারঘাটে আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দেন তিনি। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর পবায় দলীয় জনসভায় উপস্থিত হয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

সরেজমিনে জনসভাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নৌকাসদৃশ বিশালাকার মঞ্চ নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। জনসভাস্থলের আশপাশে প্রতিটি মোড়ে পোস্টার সাঁটানো ও তোরণ করা হয়েছে। তবে অধিকাংশ ব্যানার-ফেস্টুন তোরণে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর নামে দলীয় নেতাকর্মীদের আত্মপ্রচারের প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। জনসভাস্থলের আশপাশে সড়ক ও প্রবেশপথগুলোর কোথাও সরকারের উন্নয়নের তথ্যসম্বলিত বিলবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন তেমন লাগানো হয়নি। তবে নগরীর প্রধান সড়কে বড় বড় তোরণের পাশাপাশি কোথাও কোথাও আলোকসজ্জা করা হয়েছে। জনসভা সফল করার লক্ষ্যে বুধবার রাত অবধি নগরবাসীকে জনসভায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে রাজশাহী।



এদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বৃহত্তর রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারাও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা এবং শীর্ষ নেতাদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করে বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণ টাঙ্গিয়েছেন। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবারের জনসভায় একাদশ জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেবেন বলে আশা ব্যক্ত করেছেন নেতারা।

ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে রাজশাহী নগরীসহ বিভাগের আট জেলায় সভা, সমাবেশ এবং প্রতিনিধিসভাসহ সমস্ত ধরনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। রাজশাহী জেলা ও মহানগর নেতাদের পাশাপাশি বিভাগীয় সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারাও বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন। রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বুধরার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত জনসভাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী সাইফুজ্জামান শেখরও মঞ্চ সংশ্লিষ্ট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে বিভিন্ন পরামর্শ করছেন। এদিকে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমও ইতোমধ্যে দুই দফায় রাজশাহী সফর করেছেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নৌকাসদৃশ বিশাল মঞ্চ করা হয়েছে। আমরা আশা করি, আগামীকাল মাননীয় নেত্রী দেশরত্ম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় মানুষের ঢল নামবে। আমরা ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আশা করি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে।

রাজশাহীবাসীর পক্ষ থেকে মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পে গ্যাস সংযোগ, যমুনায় রেল সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন ও শিল্পকলকারখানা স্থাপনে ঋণ সুবিধাসহ ১১ দফা দাবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা পেশ করবেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার জানান, রাজশাহীতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও দুটি স্কুল সরকারি করা, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, প্রস্তাবিত চামড়া শিল্পনগরী স্থাপন, বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণসহ নয়টি উন্নয়ন ভাবনা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, এই জনসভার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ঐক্য আরো সুদৃঢ হয়েছে। দলের নেতাকর্মী ছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকারের উপকারভোগী সকল পর্যায়ের মানুষ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনার জন্য জনসভায় অংশ নেবেন। ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

আগামীকাল প্রায় ৫ লাখ মানুষের সমাগম ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করার টার্গেট নিয়ে কাজ করছে নেতারা। এ বিষয়ে তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাজশাহীবাসী আমাদের প্রিয় নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় যোগ দিতে মুখিয়ে আছে। বৃহস্পতিবার তার প্রমাণ হবে।

মাদ্রাসা মাঠ ছাড়াও আশপাশের এলাকায় জনসভায় আগতদের অবস্থান করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জনসভা ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে কাজ এগিয়ে চলেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর রাজশাহী সফর ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রাক্তন সভাপতি ও নাটোর-৪ আসন থেকে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী আহম্মদ আলী মোল্লা বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মাননীয় নেত্রী দেশরত্ম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে মানবতার জননী হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছেন। আমার নির্বাচনী এলাকার দলীয় নেতাকর্মীরাসহ সাধারণ মানুষও তাকে একনজর দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা আগামীকালের জনসভায় যে নির্বাচনী বার্তা দেবেন আমরা সেই বার্তা নিয়ে আগামীতে কাজ শুরু করব।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/তানজিমুল/নৃপেন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়