কাদেরের ব্যর্থতার কারণে ঘরমুখী মানুষের দুর্ভোগ : বিএনপি
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : দেশের রাস্তাঘাটের খারাপ পরিস্থিতির কারণে ঈদে ঘরমুখী মানুষ 'চরম দুর্ভোগের মুখোমুখি হচ্ছে' অভিযোগ করে এজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে দায়ী করেছে বিএনপি।
দলটি বলছে, মানুষ স্বস্তি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছে বলে সেতু মন্ত্রীর বক্তব্য জনগণের সঙ্গে ইয়ার্কি ঠাট্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। সড়ক ও সেতুমন্ত্রী হিসেবে ওবায়দুল কাদের সাহেব সম্পূর্ণ ব্যর্থ। বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘ঈদের বাড়িমুখী যাত্রীদের দুর্ভোগকে আমলে না নিয়ে ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, রাস্তাঘাটে কোন যানজট নেই, মানুষ স্বস্তিতে বাড়ি যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ঈদে ঘরমুখী মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় বৃষ্টির পানি ও কাদায় লুটোপুটি খাচ্ছে ঈদে বাড়িমুখো মানুষ। ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-উত্তরাঞ্চল, ঢাকা-ময়মনসিংহসহ সকল সড়ক-মহাসড়কে দীর্ঘ যানযটে পড়ে মানুষকে সীমাহীন কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। শুধু টঙ্গী-জয়দেবপুর পার হতেই লাগছে ৫ ঘণ্টা থেকে ১০ ঘন্টা।’
রিজভী বলেন, ‘সেতুমন্ত্রী বছরজুড়ে অমৃত বচন শুনিয়ে মানুষের মনকে জয় করার চেষ্টা করেছেন কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। কথার ফুলঝুরি ছাড়া বছরব্যাপী রাস্তাঘাট নির্মাণে সেতু মন্ত্রীর উদ্যমী প্রচেষ্টা ছিল না। খানাখন্দে ভরা সড়কের কারণে অর্ধেক জনগোষ্ঠী ঈদে বাড়ি যায়নি। বেশীর ভাগ লোক ঝুঁকছে ট্রেনের দিকে, সেখানে দুর্ভোগের সীমা নেই, সিডিউল বিপর্যয় আর যাত্রীদের ভিড়ে জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে বাদুড়ঝোলা ঝুলে বাড়ি যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে মানুষ।'
সরকার খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, 'কারাগারের ভগ্নস্তুপের গুমোট পরিবেশে দেশনেত্রী ট্র্যানজিয়েন্ট স্কিমিক অ্যাটাক (টিআইএ) এ আক্রান্ত হয়ে অজ্ঞান হলেও তার চিকিৎসার বিষয়টির সুরাহা এখনও করেনি সরকার। তার জীবন আশঙ্কার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলেও দীর্ঘসূত্রিতা করে বেগম জিয়াকে কোন বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে কীনা তা নিয়ে দেশের সর্বত্র মানুষের মনে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে।'
খালেদা জিয়ার পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে না দেয়ার সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, 'শেখ হাসিনা যখন বন্দি ছিলেন তখন তিনি বেসরকারি স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন, প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বিদেশে চিকিৎসা করিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম আব্দুল জলিল সাহেবও ল্যাব এইডে চিকিৎসা নিয়েছিলেন, বর্তমান স্বাস্থ্য মন্ত্রী মো: নাসিমও কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক তাকে ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।'
‘তাহলে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের প্রধান, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, তিনবারের বিরোধী দলীয় নেতা, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আপোষহীন নেত্রী এবং দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে যার অবদান অপরিসীম, তার মতো জননন্দিত একজন নেত্রীকে চিকিৎসার নামে শর্ত আরোপ হচ্ছে, তাকে চিকিৎসা না দিয়ে সরকার বিপজ্জনক নীল নকশা আঁটছে। চিকিৎসা সেবা না দেয়ার জন্যই সরকারের এসব শর্তারোপ। আর শেখ হাসিনার নির্দেশেই দেশনেত্রীকে যথাযথ চিকিৎসা না দিতে দুরভিসন্ধিমূলক বিলম্ব ঘটিয়ে তার জীবন নিয়ে গভীর চক্রান্ত করা হচ্ছে,’ বলেন রুহুল কবির রিজভী।
খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, 'তিনি ইউনাইটেড হাসপাতাল ছাড়া কোথাও চিকিৎসা নেবেন না। যে নির্দয়, অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরণ দেশনেত্রীর সঙ্গে করা হচ্ছে তাতে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। এই গভীর ক্ষোভ থেকেই একদিন কড়া জবাব পাবে সরকার প্রধান ও তার সরকার। অন্যায়ের প্রতিবাদে খুব শীঘ্রই জনতা রাস্তায় বাঁধভাঙা ঢলের সৃষ্টি করবে।'
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ জুন ২০১৮/রেজা/শাহনেওয়াজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন