ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সড়ক আইনে সংশোধনী আনার দাবি করেছে বিএনপি

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫০, ১০ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সড়ক আইনে সংশোধনী আনার দাবি করেছে বিএনপি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : শিক্ষার্থীদের দাবী মানার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে মন্ত্রিসভা সড়ক পরিবহন আইনের যে সংশোধনী অনুমোদন করেছে তাতে সংশোধনী আনার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই আইন ইতোমধ্যেই পরিবহণ মালিক সমিতি ছাড়া সবাই প্রত্যাখ্যান করেছে। সংশোধিত এই আইনে ছাত্র-ছাত্রীদের দাবীকৃত নিরাপদ সড়ক অর্জিত হবে না। কারণ, এই আইনে সড়ক পরিবহণ খাতে মানুষ হত্যা ও অনাকাক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানোর স্পষ্ট দিক নির্দেশনা কিংবা কঠোর শাস্তির বিধান নেই।’

‘চালক নিয়োগ, গাড়ির ফিটনেস যথাযথ করা এবং চালকদের বেতন, ভাতা, অবসর, শারিরীক সুস্থতা ইত্যাদি দেখার দায়িত্ব যে মালিকদের তাদের ব্যাপারে এই আইনে কার্যকর কোন পদক্ষেপ তথা বিআরটিএ-এর অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি দমনের কোন বিধান রাখা হয়নি। দুর্ঘটনায় মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলা হবে কি না এটা নির্ধারণের জন্য নিরপেক্ষ, যোগ্য, সংশ্লিষ্ট কাউকে রাখা হয়নি। এ ব্যাপারে হাইকোর্টের মতামতেরও গুরুত্ব দেয়া হয়নি।’

দীর্ঘদিন ধরে যারা নিরাপদ সড়কের জন্য কাজ করছেন তাদের সঙ্গে অর্থবহ আলোচনা করে প্রস্তাবিত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার দাবী জানান বিএনপির মহাসচিব।

আন্দোলন ও সড়কে শৃঙ্খলা সৃষ্টিতে শিক্ষার্থীরা ইতিহাস সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে তাদের ন্যায্য ও জরুরী এসব দাবী দাওয়ার প্রতি আমাদের নৈতিক সমর্থন ঘোষণা করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে জনগণের জানমাল রক্ষায় ক্রমাগত ব্যর্থ ও অযোগ্য সরকার প্রথম দিন থেকেই এই আন্দোলনে ষড়যন্ত্র ও উষ্কানী আবিস্কারের অপচেষ্টা চালাতে শুরু করে। কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে জনগণের সব ন্যায্য আন্দোলনেই এই সরকার একই কাজ করেছে এবং এই সুযোগে বিরোধী দলের ও ভিন্ন মতের নেতা-কর্মী ও আন্দোলনে সক্রিয়দের বিরুদ্ধে হায়েনার মত হামলা চালিয়েছে।’

সরকারি দলের অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা হেলমেট পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবী করেছেন যে, এসব আক্রমন নাকি বিএনপি-জামায়ত কর্মীরা করেছে। এদেশের এমন কোন পাগলও নেই যে তারা বিশ্বাস করবে যে পুলিশের সহায়তায় এবং তাদের সামনে বিএনপি-জামায়ত কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি-সোটা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মারপিট করবে, দায়িত্বপালনরত সাংবাদিকদের কোপাবে, ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ অফিস আক্রমন করবে আর তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে না। হেলমেট পড়া ও মুখোশধারী আক্রমনকারীরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মী ছিল এটা আহত সব সাংবাদিক এবং ছাত্র-ছাত্রীরা বলার পরেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাদের বিচার করার জন্য নাম চান।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পত্রিকায় আক্রমনকারীদের অনেকেরই ছবি ছাপা হয়েছে, কোন কোন ইলেকট্রনিক মিডিয়া, অনলাইন পত্রিকা এবং সোসাল মিডিয়ায় আক্রমনকারীদের ছবির ছড়াছড়ি থাকার পরেও অপরাধীদের গ্রেপ্তারের জন্য ওবায়দুল কাদের সাহেব কেন ছবি ও নাম চান? কেন তথ্যমন্ত্রীকে সাংবাদিকদের উপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাতে হয়। কি বিচিত্র এই দেশ! আর বিচিত্র বলেই তারা অপরাধ করে তার দায় চাপানোর চেষ্টা করছে আমাদের উপর।’

হেলমেট ও মুখোশ পড়ে সাংবাদিকসহ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার আমরা জোর দাবী জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘গুজব তো তখনই ছড়ায় যখন আপনি সত্য প্রকাশে বাধা দেবেন, কথা বলতে দেবেন না। যারা সত্য প্রকাশ করবে, বলবে তাদের গ্রেপ্তার নির্যাতন করবেন- তখনই গুজব ছড়াবে। তাই এসব বন্ধ করতে হলে সত্য প্রকাশ করতে দিতে হবে, কথা বলতে দিতে হবে।'

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল ম্ঈন খান, জ্যোষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ আগস্ট ২০১৮/রেজা/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়