ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

‘ঐক্যের পথে একধাপ এগিয়েছে বিএনপি’

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৮, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘ঐক্যের পথে একধাপ এগিয়েছে বিএনপি’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :‘কার্যকর গণতন্ত্র ফেরানো’র লক্ষ্য নিয়ে গড়া জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশে একাত্মতা জানাতে এসে বিএনপির নেতারা বলেছেন, তারা এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে ঐক্যের ব্যাপারে একধাপ এগিয়েছে।

খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায়ে সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনেরও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’র আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন নাগরিক সমাবেশে যোগ দিয়ে বিএনপি নেতারা তাদের বক্তব্য উপাস্থাপন করেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আসুন আমরা নুন্যতম কর্মসূচির ভিত্তিতে, নুন্যতম দাবি-দাওয়া নিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটা আন্দোলন শুরু করি। যে আন্দোলনে মধ্য দিয়ে এই সরকারকে বাধ্য করবো খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে এবং সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীকে মুক্তি দিতে। একই সঙ্গে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে হবে। এজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

‘আমরা ইতিমধ্যে একধাপ এগিয়ে গেছি ঐক্যের পথে। আমরা আশা করবো, তাদের (ড. কামাল-বদরুদ্দোজা চৌধুরী) নেতৃত্বে অতিদ্রুত সেই ঐক্য অর্জন করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।’

এ সময় নির্বাচনের আগে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেয়া, নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং ইভিএম বাতিলের দাবি জানান নেতারা।

‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’ গড়ে তোলায় ড. কামালকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘কারাগারে যাওয়ার আগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্য গড়তে বলেছিলেন। জাতির দুর্দিনে তিনি এটা করেছেন সেজন্য ধন্যবাদ জানাই। এই সরকারকে সরাতে না পারলে দেশের স্বাধীনতা থাকবে না। সেজন্য জাতীয় ঐক্য ছাড়া বিকল্প নেই।’

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ও গণফেরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘কেউ কেউ আমাদের এই জাতীয় ঐক্য প্রচেষ্টাকে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে। যারা জনগণের শক্তিকে ভয় পায়, তারা জনগণের সংগঠিত হওয়ার প্রচেষ্টাকে ষড়যন্ত্র বলে জনগণকেই অপমান করছে।’

‘আমরা জনগণের ভোটাধিকারসহমৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকারসমুহ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কার্যকর গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যেবৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’ 

একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, ‘গণতন্ত্রের স্বপক্ষ শক্তির সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সংসদে, মন্ত্রিসভায়, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি করতেই হবে। না হলে স্বেচ্ছাচারমুক্ত বাংলাদেশের নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তিকে সাথে নিয়ে ভারসাম্যের ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য বেগবান হতে পারে। আমরা বিভিন্ন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি এবং বিএনপির সাথে আলোচনা করছি। আশা করি ফলপ্রসূ হবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকে ঐক্যের সূচনা হলো। দেশের মানুষ এখন এই ঐক্যের দিকে তাকিয়ে আছে। জাতির সামনে চ্যালেঞ্জ রাষ্ট্র মেরামত করার। আসুন দল, মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদধ করে এগিয়ে যাই।’

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন,‘আজকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মাইলফলক, নতুন যাত্রা শুরু হলো। এই ঐক্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের সবশ্রেণির মানুষ ঐক্যবদ্ধ হবে।’

‘আশা করবো এর মাধ্যমে ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে আপনারা কাজ করবেন। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। এভাবে আগামীতে আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক চর্চা ফিরে পেতে চাই।’

ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও নাগরিক ঐক্যের সদস্য সচিব আবম মোস্তফা আমিনের পরিচালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন-  স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, জাসদের সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণসংহতির আহ্বায়ক জোনায়েদ সাকি, ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী,গণফোরামের মহাসচিব মোস্তফা মহসীন মন্টু, সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, নাগরিক ঐক্যর মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।

সমাবেশে অংশ নেন বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমী, ডাকসুর প্রাক্তন ভিপি সুলতান মো. মনসুর, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, খেলাফত মজলিসের মাওলানা মজিবুর রহমান, আহমেদ আবদুল কাদের, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার খোন্দকার লুৎফর রহমান ও আসাদুর রহমান খান।

এছাড়া বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের নেতারা সমাবেশে যোগ দিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮/রেজা/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়