ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পঞ্চাশ পয়সায় পুরি, এক টাকায় পিঁয়াজু

আল আমিন রাজু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৬, ১ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পঞ্চাশ পয়সায় পুরি, এক টাকায় পিঁয়াজু

আল আমিন রাজু : দিন যত যাচ্ছে মানুষের প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। সময়ের পরিক্রমায় এক টাকার ধাতব মুদ্রা এখন অনেকটাই মূল্যহীন। আর এক টাকার কাগজের নোট তো দেখাই যায় না। কেননা ঊর্ধ্বমুখী বাজারে এক টাকায় খাওয়ার মতো কিছুই পাওয়া যায় না, এক গ্লাস পানি ছাড়া। কিংবা বড়জোড় মিলবে একটি চকলেট।

কিন্তু যদি বলা হয়, পঞ্চাশ পয়সায় পুরি আর এক টাকায় পিঁয়াজু পাওয়া যায়! এ কথা শুনলে যে কেউ অবাক হবেন। আবার অনেকেই হয়তো শায়েস্তা খানের আমলের গল্প ভেবে ভুল করবেন। কিন্তু না, এটাই বাস্তব! পঞ্চাশ পয়সার পুরি আর ১ টাকার পিঁয়াজু খেতে যেতে হবে কলাতিয়ায়। ঢাকার মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে কলাতিয়া বাজারে পাওয়া যাবে এই জনপ্রিয় খাবার। কলাতিয়া বাজারে যেতে চাইলে মোহাম্মদপুর থেকে সিএনজি এবং টেম্পুতে করে যেতে পারবেন। কলাতিয়া যেতে যেতে রাস্তার দুই ধারে আপনার চোখে পরবে অপার সবুজে ঘেরা ফসলের মাঠ, কৃষকের ব্যস্ততা- শহরের মানুষের জন্য তাজা ফসলের যোগান দিতে তাদের কি আপ্রাণ চেষ্টা! কলাতিয়া বাজারে নেমেই আপনার চোখে পড়বে শত বছরের পুরোনো একটি রেইনট্রি গাছ দাঁড়িয়ে আছে। সবুজে ঘেরা বাজারটিতে গেলে আপনার মন ভালো হতে বাধ্য।  
 


শত বছরের পুরোনো এই গাছের ঠিক সামনেই ছোট্ট একটি দোকান। কলাতিয়া বাজারের সবাই এ দোকানকে ‘চিনে মানিকের হোটেল’ নামে চেনেন। দোকানের সামনে কোনো সাইনবোর্ড না থাকলেও খুঁজে পেতে কোনো সমস্যা হয় না। মানিক মিয়া গত ২০ বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যতিক্রমী এই ব্যবসা। মানিকের হোটেলটি ছোট হলেও এর ব্যস্ততা কোনো অংশে কম নয়। দোকানে গেলেই দেখবেন, আলুর পুর দিয়ে বানানো ছোট পুরি আর পিঁয়াজু। আকারে ছোট হলেও এর স্বাদে আপনার ক্ষুধার টান বেড়ে যাবে নিমিষেই। আপনি গোটাবিশেক খেয়ে ফেলতে পারবেন। আর যারা খেতে একটু পটু তাদের জন্য অর্ধশতাধিক কোনো বিষয়-ই নয়!

ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রফিক আহমেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘একুশ শতকে এসে এত কম দামে কিছু পাওয়া যাবে সেটা শুধু আমি কেন, অন্য কেউ কল্পনা করতে পারবেন না। কিন্তু আসলে পাওয়া যাচ্ছে। আর সস্তা দামের এই পুরি-পিঁয়াজু যদিও পেট ভরার জন্য না, কিন্তু মন ভরে গেছে।’
পঞ্চাশ পয়সার পুরি ও এক টাকার পিঁয়াজুর চাহিদা সম্পর্কে জানতে চাইলে ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে মানিক মিয়া বলেন, ‘আমার এহানে বাহির থাইকা মেলা লোক আহে পুরি, পিঁয়াজু খাওনের লাইগা। অনেক কাস্টমার আছে যাগো দৈনিক একশো কইরা পুরি পাঠান লাগে।’
 


এলাকায় মানিকের পঞ্চাশ পয়সার পুরি আর এক টাকার পিঁয়াজুর সুনাম দিন দিন ছড়িয়ে পড়ছে। আর তাইতো বেড়েই চলছে মানিকের হোটেলের বেচাকেনা। 
 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ জানুয়ারি ২০১৯/ফিরোজ/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়