ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

চাঁদা না দেওয়ায় জ‌বির ১১ শিক্ষার্থী নির্যাতিত, ৩ পু‌লিশ ক্লোজড

আশরাফুল ইসলাম আকাশ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫০, ৯ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চাঁদা না দেওয়ায় জ‌বির ১১ শিক্ষার্থী নির্যাতিত, ৩ পু‌লিশ ক্লোজড

জ‌বি প্র‌তি‌নি‌ধি : চাঁদা না দেওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ১১ শিক্ষার্থীকে থানায় নিয়ে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে এডিসি নুরুল আমিনকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন পুলিশকে সদস্যকে ক্লোজড করেন ওয়ারী জোনের ডিসি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

গত মঙ্গলবার রাত ১টায় ওয়ারী থানায় এএসআই নজরুল ইসলাম ও তার দলের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন চালানো হয়। বুধবার সকাল ৭টায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত সদরঘাট-গুলিস্তান সড়কের রায়সাহেব বাজার চার রাস্তার মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী মহিদুল ইসলাম ও অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী নিক্সন ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফেরার সময় গোয়ালঘাট লেনে রাজধানীর ওয়ারী থানার পুলিশ এএসআই নজরুল ইসলাম তাদের সন্দেহমূলক তল্লাশি করেন। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে তাদেরকে ইয়াবা ও মাদকের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছে বলে দাবি করেন। এমনকি থানায় নিয়ে মাদক মামলার ভয় দেখান এবং ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।

শিক্ষার্থীদের কাছে যথেষ্ট টাকা না থাকায় এএসআই নজরুল ইসলাম তাদের সিনিয়র কাউকে টাকা নিয়ে আসার জন্য বলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়জন শিক্ষার্থী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় তারা দুই শিক্ষার্থীকে আটক করার কারণ জানতে চাইলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে এসআই আব্দুল আওয়াল ও এএসআই নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে সবাইকে পুলিশের ভ্যানে উঠিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের থানায় বেধড়ক মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে পুলিশ।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল ৮টা থেকে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে। এ সময় সদরঘাট-গুলিস্তান সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। পরে আটককৃত শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেওয়া ও অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ ছেড়ে দিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যান।

ওয়ারী জোনের এডিসি নুরুল আমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের কথা স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ওয়ারী জোনের ডিসি আমাকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্য সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

তিনি আরো বলেন, এই ঘটনায় ইতোমধ্যে ওয়ারী থানার ডিউটি অফিসার এসআই অপু, এসআই আব্দুল আওয়াল ও এএসআই নজরুল ইসলামকে প্রাথমিকভাবে ক্লোজড করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে জবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন. বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীকে আটক করা বেআইনি। এছাড়া, তাদের মারধর করা চরম অন্যায়। আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ করেছি। বৃহস্পতিবার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হবে।



রাই‌জিং‌বি‌ডি/ঢাকা/৯ জানুয়া‌রি ২০১৯/আশরাফুল/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়