ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু ছিলেন সাহসী ও আপোষহীন : ড. কামাল

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩২, ১০ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বঙ্গবন্ধু ছিলেন সাহসী ও আপোষহীন : ড. কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক : গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর গুণাবলীর মধ্যে সাহসীকতা ও আপোষহীনতা অন্যতম। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তাঁর দেশে ফেরার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার স্বীকৃতি সুসংগত করার ধাপ এগিয়ে যায়। এক মাসের মধ্যে বিশ্বের সকল দেশ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অর্জন করে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনী মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে গনফোরাম এ আলোচনার আয়োজন করে।

১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একই বিমানে দেশে ফেরেন ড. কামাল হোসেন। বঙ্গবন্ধুকে কারাগার থেকে মুক্ত করার পর তিনি বলেছিলেন, ‘কামাল কোথায়? বঙ্গবন্ধু অনুমান করতে পেরেছিলেন, কামালও হয়তো কোনো কারাগারে রয়েছে।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘২৮ ডিসেম্বর হরিপুর কারাগার থেকে মুক্ত করে আমাকে বঙ্গবন্ধুর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।’

বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ এই সহচর বলেন, ‘১০ জানুয়ারি আমার জীবনের একটি স্মরণীয় দিন। এই দিন স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে আমাদের পা ফেলার সুযোগ হয়। ভাবিনি জীবিত আমরা বের হবো।’

তিনি বলেন, ‘প্লেন থেকে বঙ্গবন্ধু যখন দেখলেন শুধু মাথা, মাথা আর মাথা। দেখে আমরা আনন্দে উৎফুল্ল। রানওয়েতে লোক আর লোক।  কিছুক্ষণ প্লেনটাকে আকাশে ঘুরাতে হয়েছে। রানওয়েতে জায়গা খালি নেই। এতো লোক গেছে বঙ্গবন্ধুকে দেখতে। একটু খালি করার পর আমরা নামি।

আকাশে থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুকে একটু চিন্তিত লাগছিলো। আমি বললাম, আপনি কি চিন্তা করছেন? তিনি বললেন, মাত্র নয় মাসে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। কারণ, আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এই ঐক্য ধরে রাখতে হবে।’

একই অনুষ্ঠানে জেএসডি সভাপতি আ.স.ম আব্দুর রব বলেন, ‘যাকে (বঙ্গবন্ধু) নিয়ে আমরা আজকের এই আলোচনা করছি, পৃথিবীতে এ ধরনের নক্ষত্র আর নেই।’

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বিদেশি সাংবাদিকরা আমার কাছে প্রশ্ন করেছিলেন তোমাদের দেশ তো স্বাধীন হয়েছে, তোমরা অস্ত্র হাতে রেখেছো কেন?’

আমি বলেছিলাম, ‘বঙ্গবন্ধুকে ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষ হবে না।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এই প্রবীণ নেতা দাবি করেন, তাদের ব্যাপারে জনগণকে ভুল বোঝানো হয়েছে। জামায়াত ও জঙ্গিদের সঙ্গে তাদের কখনোই সম্পর্ক ছিলো না. নেই এবং থাকবেও না।

রব বলেন, ‘বিদেশের কোনো নির্দেশে আমরা রাজনীতি করি না। আমরা রাজনীতি করি জনগণকে সাথে নিয়ে জনগণের জন্য।’

ড. কামাল ও আ.স.ম রবকে নিয়ে কটুক্তি করার ব্যাপারে তিনি বলেন,  ‘যারা বিরূপ মন্তব্য করেন তারা তো দেখেন নি স্বাধীনতার সময় আমাদের ভূমিকা কি ছিলো।’

প্রাক্তন মন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাঈদ বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালে বঙ্গবন্ধুর যথন বিচার হচ্ছিল, তখন তারা বলেছিলো, আপনি চাইলে একজন আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেন। তিনি বলেছিলেন, কামাল হোসেন। আবার তাদের যখন মুক্ত করা হয়, তখনও তিনি বলেছিলেন, কামাল হোসেনকে তার সাথে মুক্ত করে দিতে হবে। তারা কামাল হোসেনকে বঙ্গবন্ধুর কাছে এনে দেয়। এই সেই কামাল হোসেন। আপনারা কামাল হোসেনকে নিয়ে কটুক্তি করবেন না। যাকে বঙ্গবন্ধু এতো ভালোবাসতেন তাকে হেয় করে কথা বলা ঠিক না। উচিত না।’

তিনি বলেন, ‘মুজিব কোট গায়ে পড়লেই মুজিব আদর্শ ধারন করা হয়ে যায় না। মুজিব আদর্শ লালন করতে হয়। তার যে নীতিগুলো ছিলো সেগুলো মেনে চলতে হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার সমর্থক, একটাকে বাদ দিয়ে আরেকটা উপলব্ধি করা যায় না। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে দলবাজী করার কিছু নেই। তিনি ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ বা জাতির নন। তিনি জাতিরও ঊর্ধ্বে, তিনি সবার। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের এই দিনে বলবো, আসুন আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করি।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ জানুয়ারি ২০১৯/সাওন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়