ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কাঁঠাল পাতায় বাড়তি আয়

মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কাঁঠাল পাতায় বাড়তি আয়

মাগুরার একজন কাঁঠাল পাতা বিক্রেতা

আনোয়ার হোসেন শাহীন, মাগুরা : কাঁঠাল গাছের পাতা থেকে বাড়তি আয় করছেন মাগুরার চারটি উপজেলার দশ হাজার কৃষক।  কৃষকরা বলছেন, কাঁঠাল থেকে মৌসুমে একবার আয় হয় আর পাতা থেকে আয় হয় সারা বছর।

কৃষকরা জানান, ছাগলের খাবারের জন্য শহর-গ্রামে কাঁঠাল পাতার প্রচুর চাহিদা। তাই নতুন এই ব্যবসাটি দিনদিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। এর মধ্যেই অনেকে খুঁজে নিয়েছেন জীবিকা নির্বাহের পথ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মাগুরা সদর, শ্রীপুর, শালিখা ও মহম্মদপুর উপজেলায় পাঁচ লাখের বেশি কাঁঠাল গাছ আছে। এর অর্ধেকের বেশি গাছ আছে সদর উপজেলায়। এখানে কাঁঠাল গাছের অর্ধশতাধিক বড় বাগান রয়েছে । এমন কোন কৃষকের বাড়ি পাওয়া যাবেনা যেখানে দুই-একটি কাঁঠাল গাছ নেই।

এসব গাছে মৌসুমে প্রচুর কাঁঠাল ধরে।  দ্রুত পচনশীল হওয়ায় কৃষক এই ফলের তেমন দাম পাননা বললেই চলে। এতে দিন দিন নতুন করে কাঁঠাল গাছ রোপণে আগ্রহ হারাচ্ছিলেন তারা। কাঁঠাল পাতার চাহিদা সে আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে তাদের। বাণিজ্যিকভাবে ছাগল পালন বেড়েছে এ জেলায়। ছাগলের খাবার হিসেবে প্রথম পছন্দ কাঁঠাল পাতা। এতে কাঁঠাল পাতার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সারা বছর বাড়তি আয় করছেন কৃষক। ব্যাপারিরা নিজেরাই গাছের ছোট ডালের পাতা সংগ্রহ করেন। এজন্য গাছ মালিকের কোন বাড়তি খরচ হয় না।

সদরের বেলনগর গ্রামের কৃষক শারিফুল ইসলাম জানান, তার বাগানে একশ’র বেশি কাঁঠাল গাছ আছে। বছরে একবার কাঁঠাল থেকে সামান্য আয় হয়। গাছ কেটে আমবাগান করার পরিকল্পনা ছিল। এখন পাতা থেকে সারা বছর আয় হচ্ছে। এতে কাঁঠাল বাগান লাভের মুখ দেখছে। পুরনো বড় দশটি গাছ থেকে বছরে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকার পাতা বিক্রি করা যায়।’

শ্রীপুরের সারঙ্গদিয়া এলাকার বাসিন্দা তাহাজ্জুত হোসেন বলেন, ‘ছাগলের প্রিয় খাবার কাঁঠাল পাতা। চারটি ছাগলের জন্য প্রতিদিন দুই আঁটি পাতার দরকার হয়। সাথে কিছু দানাদার খাবার দিলে দিন চলে যায়।’

মাগুরা সদরের কাঁচা বাজারের পাতা বিক্রির ব্যবসায়ি আলতাফ হোসেন বলেন,‘জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে ভ্যান-নসিমনে করে কাঁঠাল পাতা আসে। আমরা পাইকারি কিনে বিক্রি করি। প্রতি আঁটি পাতা ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হয়। সরবরাহ কমে গেলে দাম আরও বেড়ে যায়।’

জেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা কানাই লাল স্বর্ণকার জানান, ‘লাভজনক হওয়ায় বাণিজ্যিকের পাশাপাশি সৌখিন ছাগল পালন বাড়ছে।’

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক পার্থ প্রতিম সাহা জানান, ‘কাঁঠাল পাতা লাভজনক কৃষি পণ্য হিসেবে স্থান পেয়েছে। সারা বছর গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করা যায়। এতে কাঁঠালের ফলনে কোন প্রভাব পড়ে না।’

 

 


রাইজিংবিডি/মাগুরা/২৯ জানুয়ারি ২০১৭/আনোয়ার হোসেন শাহীন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়