ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

লিবিয়ায় অপহরণ: মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টসহ আটক ৬

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২১, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
লিবিয়ায় অপহরণ: মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টসহ আটক ৬

নিজস্ব প্রতিবেদক : তিন মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টসহ অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

তারা হলেন, কামাল উদ্দিন (৪৫), নাজনীন বেগম (৩৫), আবু কাশেম (৩৫), বেবী আক্তার (৩৫), মামুন মিয়া (৪২) ও নুরুল হক (৪৫)।

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানার ভৈরবপুর ও নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার মাহমুদাবাদ, পাগলা বাজার ও শিবপুর জংলী বাজার থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা বিদেশে প্রবাসী বাঙালিদের প্রথমে কৌশলে অপহরণ করে ও পরে তাদের নির্যাতন করে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে। মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তারা দেশে বিকাশ, রকেটের মতো মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে। এ কাজে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্টরা অপহরণকারীদের সহযোগিতা করেন।

তিনি বলেন, যেসব বিকাশ নম্বরে অপহরণকারীরা মুক্তিপণের টাকা নিত, সেসব নম্বরের সূত্র ধরেই তাদের আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে দুটি বিকাশের ক্যাশ ইন রেজিস্টার, দুটি বিকাশের ক্যাশ আউট রেজিস্টার, চারটি মোবাইল ফোন, পাওয়ার লোডের টালি বই, তিনটি সিম উদ্ধার করা হয়েছে।

পিবিআই সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে নওগাঁর বাসিন্দা আইয়ূব আলী (২৫) জীবিকার তাগিদে লিবিয়ায় গিয়েছিলেন। চলতি বছরের জুলাইয়ে সেখানে পরিচয় হওয়া একজনের মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি তাকে ইতালি না পাঠিয়ে লিবিয়ার অজ্ঞাত এক জায়গায় রেখে দেয়। পরে জানায় তাকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণের জন্য টাকা লাগবে। টাকা দিতে না চাইলে তাকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়। পরে নির্যাতনের স্থিরচিত্র-ভিডিও ফুটেজ দেশে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেয় অপহরণকারীরা। এভাবে আইয়ূব আলীর পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় চক্রটি। কয়েক দফায় প্রায় পাঁচ লাখ টাকা আইয়ূব আলীর পরিবার দিলেও তাকে মুক্তি দেয়নি অপহরণকারীরা।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, শুধু আইয়ূব নয়, লিবিয়া প্রবাসী এমন আরো শতাধিক বাঙালি অপহরণের শিকার হয়েছে। তাদের অপহরণ করে বাঙালিরাই। এর পর তারা তার পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে।

তিনি জানান, বিদেশে প্রবাসী বাঙালিদের ২০-২৫ জন এ অপহরণ চক্রে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি। ওই চক্রটি ফোন করে দেশে অবস্থানরত নিজেদের পরিবারের বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠাতে বলা হয়। পরে মুক্তিপণের পাঠানো টাকার ভাগ ওই চক্রের অন্য সদস্যদের পরিবারের কাছে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। বড় ধরনের লেনদেনে কয়েকজন বিকাশের এজেন্টের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। চক্রটি বিভিন্ন পরিবারের কাছ থেকে কয়েক দফায় পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা আদায় করে। চক্রের সব সদস্যের প্রাথমিকভাবে নাম-পরিচয় পেয়েছি তবে, এর সঙ্গে বিদেশি কেউ জড়িত থাকার তথ্য আমরা পায়নি।

অপহৃতদের উদ্ধারে সেখানকার দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭/নূর/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়