ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মসলিন পুনরুজ্জীবনে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মসলিন পুনরুজ্জীবনে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মো. ইফতিখার বলেছেন, মসলিন পুনরুজ্জীবন করতে হলে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে মসলিন পুনরুজ্জীবন : সমস্যা ও সম্ভাবনা শীর্ষক এক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।

মুশতাক হাসান মো. ইফতিখার বলেন, আমাদের আগে চিন্তা করতে হবে মসলিনকে আবার ফিরিয়ে আনতে কীভাবে কাজ শুরু করতে হবে। প্রথমে মসলিন তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামাল কীভাবে তৈরি করব? এর সাথে জড়িত শিল্পীদের কীভাবে উন্নত করে গড়ে তুলব এবং আগের সময়ের মত হাতে সুতা কাটা হবে কি না? তবে ভারত এখন মসলিন তৈরিতে সুতা হাতে চরকা ঘুরিয়ে সুতা তৈরি করে না। তারা আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করছে। আমরাও সেদিকে যাব কি না সব কিছুই নিয়ে ভাবতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আমার জানা মতে মসলিন নিয়ে গবেষণার জন্য আমাদের জাতীয় জাদুঘরে দুটি প্রায় তিনশ বছর পুরনো মসলিন কাপড় রয়েছে। তাই জাদুঘর কর্তৃপক্ষের কাছে আমি গবেষণার জন্য সহযোগিতাও কামনা করছি। তবে আমরা শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে সব সময় বাণিজ্যিক চিন্তা করতে চাই। আগে মার্কেট দখল করা। এখন ভারত যদি এই জায়গাটা (মসলিন কাপড় বাণিজ্যিকভাবে তৈরি ও রপ্তানি) দখল করে নেয়, তাহলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। কিন্তু আমরা যদি ভাল কাঁচামাল তৈরি করতে পারে তাহলে মার্কেট পাবার আশা রয়েছে। এরপরেও মার্কেট হারানোর ভয় থাকবে। কারণ ‘জিআই’ যদি তারা (ভারত) ক্লেম করে তাহলে তারা কিন্তু পেয়ে যেতে পারে। কারণ গঙ্গা, ব্রক্ষ্মপুত্র, মেঘনা এই এলাকাতেই মসলিন তৈরি হত, গুজরাটেও হত এবং মুসুলেও হত। উপাদেয় জামদানি তারা যেমন তারা নিয়েছে। তাই মার্কেট হারানোর ভয় থেকেই যাবে। 

সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাংলার হারানো ঐতিহ্য মসলিন ফিরিয়ে আনার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, সেটি বাস্তবে রূপ দেওয়া সম্ভব। যদি বেসরকারি উদ্যোগের সঙ্গে সরকারের নীতিগত ও আর্থিক সহায়তা যোগ করা যায়। কারণ এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। মসলিন তৈরিতে যে ধরনের সুতার প্রয়োজন, তা ব্যাপক ভিত্তিতে উৎপাদন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি রয়েছে, মসলিন উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সরবরাহ এবং কারিগরদের প্রশিক্ষণ। সবকিছু সফলভাবে সম্পন্ন করতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া সম্ভব নয়।

মসলিনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়া সম্ভব। কারণ শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বে এটির একটি সমৃদ্ধ বাজার আছে বলেও জানান বক্তারা।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের সদস্য মো. মিজানুর রহমান, দৃক পিকচার (বেঙ্গল মসলিন) লাইব্রেরি লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক সাইফুল ইসলাম, লোকশিল্প গবেষক চন্দ্রশেখর সাহা প্রমুখ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ ডিসেম্বর ২০১৭/নাসির/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়