ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘বারি বিটি’ বেগুন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকেরা

বাদল সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৮ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বারি বিটি’ বেগুন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকেরা

বাদল সাহা, গোপালগঞ্জ : অল্প জমিতে অধিক ফলন ও কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন না হওয়ায় গোপালগঞ্জে বিটি বেগুন চাষ বাড়ছে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ‘বারি বিটি’ জাতের এই বেগুন চাষ করে অনেক কৃষক লাভবান হয়েছেন। এ কারণে দিন দিন এই জাতের বেগুন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন জেলার কৃষকেরা।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গহরডাঙ্গা গ্রামের আদর্শ কৃষক নাসির হোসেন। আগে তার জমিতে আলুসহ অন্যান্য সবজির চাষাবাদ করতেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফলন না পেয়ে অনেকটা হতাশ ছিলেন তিনি। হতাশ এই কৃষক অবশেষে শরণাপন্ন হন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরামর্শে ‘বারি বিটি-৩ ও ৪’ জাতের বেগুন চাষ করেছেন। তার ৪০ শতাংশ জমির উপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় ১৩০০ চারা রোপণ করেন। কৃষি বিভাগের সহায়তা নিয়ে এখন একজন আদর্শ বেগুন চাষিতে পরিণত হয়েছেন তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের আওতায় ১২০ বিঘা জমিতে ১২০টি প্রদর্শনী প্লট ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আওতায় ২৫ বিঘা জমিতে ৪৪ প্লটে বারি বিটি ৩ ও ৪ জাতের বেগুনের পরীক্ষামূলক চাষাবাদ হয়েছে। এ বছরের শুরু থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক মন বেগুন বাজারে বিক্রি করছেন কৃষকেরা। যা বিক্রি করে ভালো লাভ পাচ্ছেন।

বেগুন চাষের সময় ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণে ৭০-৮০ ভাগ বেগুন মাঠে নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য প্রতিবছর কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। ফলে বেগুন চাষের খরচ বেড়ে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন না। তাছাড়া প্রচুর পরিমাণে কীটনাশকের ব্যবহার মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর।

পোকার আক্রমণে সহনীয় হিসেবে বারি বিটি-১, ২, ৩ ও ৪ নামে চারটি নতুন জাত উদ্ভাবন করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। এসব জাতের বেগুনে ও ডগায় পোকা আক্রমণ করতে পারে না। ফলে বিষমুক্ত বেগুন উৎপাদন সম্ভব হয়। এ সব প্রদর্শনী খামারে অধিক ফলন ও কম খরচে বেশি লাভ দেখে নাসির হোসেনের মতো সাধারণ কৃষকরাও বিটি বেগুন চাষে ঝুঁকছেন। তারা আগামীতে তাদের জমিতে এই জাতের বেগুন চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন।

বারির টুঙ্গিপাড়া অফিসের বৈজ্ঞানিক সহকারী মো. লুৎফর রহমান তামিম জানান, অন্যান্য জাতের বেগুনে পোকার আক্রমণের কারণে বিষ স্প্রে করা লাগলেও বারি উদ্ভাবিত বারি বেগুন গাছে বিষ স্প্রে করা লাগে না। তাছাড়া এর উৎপাদনও সন্তোষজনক। কৃষকেরা এই জাতের বেগুন চাষ করলে লাভবান হতে পারবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

গোপালগঞ্জ বারি’র ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এইচ এম খায়রুল বাসার জানান, এই সবজি বিষমুক্ত এবং খেতে সুস্বাদু। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। তাই কৃষকরা লাভবান হবেন।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সমীর কুমার গোস্বামী বললেন, জেলায় ১৬৪টি পরীক্ষামূলক প্রদর্শনী প্লটে ১৪৫ বিঘা জমিতে এই জাতের বেগুনের চাষাবাদ হয়েছে এ বছর। আগামীতেও আগ্রহী কৃষকদের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে তারা আশ্বাস দিয়েছেন।



রাইজিংবিডি/গোপালগঞ্জ/০৮ মার্চ ২০১৮/বাদল সাহা/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়