ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

যানজট : প্রয়োজন বিদ্যমান কাঠামোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা

এনএ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:০৬, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যানজট : প্রয়োজন বিদ্যমান কাঠামোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা

রাজধানী ঢাকায় যানজটের কারণে প্রতি মাসে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ২২৭ কোটি টাকা। বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটিই বলা হয়েছে। ঢাকার ভয়াবহ যানজট ব্যয়বহুল কোনো প্রকল্প ছাড়াই কমিয়ে আনা সম্ভব বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। মেগাসিটি ঢাকার যানজট ও নগর পরিস্থিতি নিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় পঞ্চমবারের মতো এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়, যানজটে রাজধানীবাসীর প্রতিদিন শুধু মূল্যবান কর্মঘণ্টাই নষ্ট হচ্ছে না, বিপূল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে এতে।  ‘নগর পরিস্থিতি ২০১৬; ঢাকা মহানগর যানজট-শাসন-ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন তৈরি করে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট।

 

প্রতিবেদনে ঢাকার যানজটের জন্য বিশেষত তিনটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, প্রাইভেট কার দিয়ে সড়কের জায়গা দখল এবং ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকার ৯৮ দশমিক ৩ ভাগ গণপরিবহন ও ৬৮ ভাগ প্রাইভেট কার ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে।

 

বর্তমানে প্রায় দেড় কোটি লোকের বসবাস মাত্র তিনশ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই মহানগরীতে। দিনে দিনে নগরীর লোকসংখ্যাও বেড়ে চলেছে। ছোট শহরে বিপুলসংখ্যক লোকের চলাচলে সংকটও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নগরের আয়তন বাড়লেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। যানজটে প্রতিদিন মানুষের বিপুল কর্মঘণ্টা নষ্টের পাশাপাশি ব্যাপক আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে। 

 

রাজধানীর যানজট নিরসনে অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বিগত দিনে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। যানজটমুক্ত করা যায়নি রাজধানীকে। নগরীর পরিসর বাড়লেও প্রয়োজনের তুলনায় সড়কের সংখ্যা অনেক কম। ফলে ক্রমাগত চাপ বাড়ছে সব রাস্তায়, অলিতে, গলিতে।

 

নগরীতে যন্ত্রচালিত যানবাহনের সংখ্যা অনেক। পাশাপাশি অযান্ত্রিক যান রিক্সার সংখ্যাও প্রচুর। দ্রুতগতির যান্ত্রিক যানের সঙ্গে একই সড়কে চলছে ধীরগতির যান। রিক্সা চলাচলের জন্য নগরীতে কোনো আলাদা লেন নেই।ফল যা হবার তাই হচ্ছে। এদিকে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যালব্যবস্থা থাকলেও অনেক স্থানে কাজ করে না। আবার অনেকেই আছেন সিগনাল মানে না বা মানতে চান না। আবার দেখা গেছে প্রায়ই রাজধানীর কোনো না কোনো রাস্তায় রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা হচ্ছে রাস্তার ওপর। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যেও কোনো সমন্বয় নেই। এ সবের কারণেও যানজটের সৃষ্টি হয়।

 

মূলত: অপরিকল্পিত নগরায়ণই এ জন্য দায়ী। একটি শহরে সড়কপথের পাশাপাশি বিকল্প যোগাযোগব্যবস্থা (শহরের মধ্যে বা পাশে খাল বা দীর্ঘ লেক) থাকলে সড়কে চাপ পড়ে কম।  ঢাকায় এ রকম ব্যবস্থা গড়ে তোলার সুযোগ থাকলেও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে তা গড়ে ওঠেনি। ফলে সড়কের ওপর চাপ বেড়েছে। যার মূল্য দিতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

 

রাজধানীকে যানজটমুক্ত করতে কার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থা গ্রহণ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে গতিশীল করতে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের সংখ্যা কমানোসহ বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এ সব সুপারিশ বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিলে রাজধানীর যানজট অনেকাংশে কমানো সম্ভব হবে। বিদ্যমান কাঠামোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা হলে বহুলাংশে কমে যাবে যানজট।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ডিসেম্বর২০১৬/এনএ/টিআর

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়