ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

প্রতিদিন খাওয়া উচিত ৭ আয়ুর্বেদিক খাবার

সার্জিন শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রতিদিন খাওয়া উচিত ৭ আয়ুর্বেদিক খাবার

আদা, ব্রাহ্মী, অশ্বগন্ধা মূল, তুলসী (ঘড়ির কাটার দিকে)

সার্জিন শরীফ : আয়ুর্বেদিক উপাদানগুলোর গুণের কথা শুনলেই মনে হয় আজ থেকেই এগুলো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে আয়ুর্বেদিক সেবাদানকারী ভারতের বিখ্যাত আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘কৈরালি আয়ুর্বেদিক গ্রুপ’ এর গবেষক ডা. রাহুল ডোগরা বলেন, ‘দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় এমন খাবার থাকা যা উচিত স্বাদের দিক দিয়ে মিষ্টি, টক, নোনতা, ঝাঁঝালো, ঝাল এবং কষপূর্ণ- এই ছয়টির অন্তত একটি।

সঠিক খাবারে থাকে বিশুদ্ধতা যা শরীরকে সুস্থ রাখে, কর্মোদ্যমকে পুনরুজ্জীবিত করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, শারীরিক ও মানসিক শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং হজমশক্তি বাড়ায়। এর সবগুলোই পেতে হলে সময়ে-সময়ে বিশেষ খাবারের স্মরণাপন্ন না হয়ে আয়ুর্বেদিক খাদ্যাভাস গড়ে তোলার বিকল্প নেই। আর সবচেয়ে সুবিধাজনক দিক হচ্ছে- এর সবগুলোই সহজলভ্য।

* আদা : অনেকেই চায়ের সঙ্গে আদা খেয়ে থাকেন। বিভিন্ন উপকারী গুণাগুণের জন্য আদা সুপ্রসিদ্ধ। আদা একইসঙ্গে- পেটের প্রদাহরোধী, ক্ষুধাবর্ধক, গ্যাসরোধী এবং পেটের স্ফীতি রোধকারী। ডা. ডোগরা বলেন, ‘আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে আদা বমি ভাব রোধ করতে ব্যবহৃত হয়। আদার শুকনো মূল কাজু বাদাম তেলের সঙ্গে মিশিয়ে মালিশ করলে সন্ধিস্থলের (হাড়ের জয়েন্ট) ব্যথার উপশম হয়। এছাড়া মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে এবং শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।

* অশ্বগন্ধা মূল : ভারতের বিখ্যাত খাদ্যদ্রব্য ও ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘ডাবর’ তাদের ঔষধি গুণ সম্পন্ন খাদ্য চব্যনপ্রাস-এ মূল অন্যতম মূল উপাদান হিসেবে অশ্বগন্ধার মূল ব্যবহার করে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এটি মূলত মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা ও ক্লান্তি দূর করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া এর পাতা শরীর ফোলাজনিত ব্যথা বা রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধে সহায়তা করে। এছাড়া অশ্বগন্ধা পুরুষের শুক্রাণু বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।

* আমলকী : অন্যান্য অনেক গুণাগুণের পাশাপাশি আমলকী তার শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের জন্যও বিখ্যাত। ডা. ডোগরা বলেন, ‘এটি একইসঙ্গে হজমকারী টনিক, মলাশয় পরিষ্কারক এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত তাপ অপসারক হিসেবে কাজ করে।’ আমলকী প্রাকৃতিক ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়ামের এক বড় উৎস। এছাড়া এতে রয়েছে অ্যান্টি-এজিং গুণাগুণ। আমলকীর তেল খুশকি প্রতিরোধে সহায়তা করে।

* হলুদ : আমাদের দেশে মূলত শুকনো হলুদ রান্নায় মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু বর্তমানে এটি বিশ্বের একটি বহুল প্রচলিত ‘সুপারফুড’। কারণ হল- এর বিশেষ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং ফাংগাসের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে খাবার হিসেবে এর জুড়ি মেলা ভার। ত্বকের চিকিৎসা, যকৃত বিশুদ্ধকরণ এবং ডায়াবেটিস রোগের প্রতিরোধক হিসেবে এর ব্যবহার বিশ্বজুড়ে সমাদৃত।

* ঘি : যারা খাবারের সুস্বাদের জন্য ঘি খেয়ে থাকেন তাদের জন্য সুখবর হল ঘি আসলে শরীরে কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। এতে আছে ওমেগা-৩ নামক ফ্যাটি অ্যাসিড, যা হার্টকে সুস্থ রাখে।

* তুলসী : আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তুলসী, আদা এবং এলাচ একত্রে সেদ্ধ করে গলার ক্ষত, মাথাব্যথা এবং কিছু চর্মরোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। নিয়মিত তুলসী পাতা সেবনে রক্তের বিশুদ্ধতা বাড়ে, ব্লাড সুগারের পরিমাণ কমে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

* ব্রাহ্মী : নিয়মিত ব্রাক্ষ্মীলতা সেবনে মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এটি স্মৃতিশক্তি বর্ধক হিসেবেও কাজ করে। তবে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকার কারণে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ব্যতীত এটি সেবন করা উচিত নয় বলে মনে করেন ডা. ডোগরা।

তথ্যসূত্র: হাফিংটন পোস্ট



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/সার্জিন/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়