ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাওয়েল মুভমেন্ট আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে যা বলে (শেষ পর্ব)

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ২ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাওয়েল মুভমেন্ট আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে যা বলে (শেষ পর্ব)

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : টেক্সাস এ অ্যান্ড এম কলেজ অব মেডিসিনের ক্লিনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর এবং ফ্যামিলি মেডিসিন ডা. গ্যাব্রিয়েল নিলের মতে, বাথরুমে আপনার প্রাইভেট টাইম আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে ভালো ইঙ্গিত দিতে পারে।

কিভাবে জানবেন যে আপনার বাওয়েল মুভমেন্ট বা মলত্যাগ স্বাভাবিক আছে? বিশেষজ্ঞরা বাওয়েল মুভমেন্টের স্বাভাবিকতা এবং অস্বাভাবিকতা নিয়ে কথা বলেছেন। এ নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে শেষ পর্ব।

* কোষ্ঠকাঠিন্য থাকা সত্ত্বেও নিয়মিত মলত্যাগ হতে পারে

কিছু লোক ধারণা করে যে, যদি তারা প্রতিদিন বাথরুমে যায়, তাহলে তাদের মধ্যে মল অবশিষ্ট থাকে না। ডা. শেঠ প্রিভেনশন ডটকমকে জানান, ‘কিন্তু যদি আপনার মল ধারাবাহিকভাবে শক্ত হয় এবং নরম ও অখণ্ড মলের পরিবর্তে খণ্ড খণ্ড আকারে বের হয়, তাহলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য থাকতে পারে।’ এর সবচেয়ে বেশি কমন কারণ হচ্ছে, শরীরে অপর্যাপ্ত ফাইবার গ্রহণ। যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ১৫ গ্রাম ফাইবার গ্রহণ করে যা একজন নারীর জন্য সুপারিশকৃত দৈনিক ২৫ গ্রাম ফাইবার এবং একজন পুরুষের জন্য সুপারিশকৃত দৈনিক ৩৮ গ্রাম ফাইবারের তুলনায় সামান্য। কি পরিমাণ ফাইবার গ্রহণ করছেন, তা জানতে প্রয়োজনীয় সাময়িকী কিংবা ওয়েব পোর্টালে চোখ বুলাতে পারেন। যদি ফাইবার কম গ্রহণ করে থাকেন, তাহলে অতিরিক্ত ফল, শাকসবজি, অখণ্ড শস্যদানা, শিম, বাদাম এবং বীজ খান। এছাড়া হাইড্রেটেড থাকতে যেন ভুলে না যান। আমেরিকান জার্নাল অব গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্টে প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানা যায়, ‘শরীরে তরল গ্রহণ হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্যের সবচেয়ে বড় ভবিষ্যতবক্তা।’ যেসব লোক কম পানি পান করে তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা, বেশি পানি পানকারী লোকদের তুলনায় বেশি।

* মলের গঠন সমস্যার সংকেত দিতে পারে

গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, ভালো স্বাস্থ্যের পরিচায়ক মল মসৃণ সসেজ লিংকের মতো। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ও গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট রিচার্ড জে. সাড, ম্যানস হেলথকে বলেন, ‘কখনো কখনো মলের পাশ একটু শক্ত হতে পারে, যেখানে এর আকার হবে সসেজের মতো এবং পৃষ্ঠের ওপর কিছু ক্র্যাক বা ফাটল থাকবে অথবা মলের আকার হবে অর্ধগঠিত ব্লব বা বড়ি বা বটিকার মতো- যার সবদিক নরম থাকবে।’ খুব শক্ত বা অত্যধিক নরম মল কোনো ত্রুটি বা সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। মলের স্বাভাবিক গঠন বা আকার জানতে ব্রিস্টল স্টুল স্কেলের সাহায্য নিতে পারেন। বার্মিংহামের কনসালট্যান্ট এবং ‘ক্লিয়ারিং দ্য এয়ার: আর্ট অব দ্য বাওয়েল মুভমেন্ট’ এর লেখক টি. লি বাউম্যান বলেন, ‘মলের স্বাভাবিক গঠনের বিচ্যুতি যেমন কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সাধারণ সমস্যার নির্দেশ করতে পারে, তেমনি ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা আইবিএস, ক্রোন’স রোগ, বাওয়েল অবস্ট্রাকশন বা অন্ত্রের প্রতিবন্ধকতা, কোলন ক্যানসার বা মলাশয় ক্যানসার এবং স্টমাক ক্যানসার বা পাকস্থলী ক্যানসারের মতো মারাত্মক সমস্যারও ইঙ্গিত দিতে পারে।’ সমস্যা কোষ্ঠকাঠিন্য না হলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। টয়লেটে আপনি যা দেখছেন তার ওপর ভিত্তি করেও সমস্যা বা রোগের নাম বলা যেতে পারে, যেমন- সরু রিবন বা পেন্সিলাকৃতির সুতা হতে পারে বাওয়েল অবস্ট্রাকশনের লক্ষণ অথবা এমনকি কোলন ক্যানসারের উপসর্গ।

* ওষুধ গড়বড়ে বাওয়েল মুভমেন্টের জন্য দায়ী হতে পারে

অস্বাভাবিকভাবে বাথরুমে আসা-যাওয়া করছেন? অনেক ওষুধ ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে চেতিয়ে তুলে বা উত্তেজিত করে। ম্যানস হেলথের মতে, ‘এর জন্য দায়ী সবচেয়ে বড় কালপ্রিটসমূহ হল অ্যান্টিবায়োটিক, এনএসএআইডি পেইন রিলিভার, ম্যাগনেসিয়াম-কন্টেইনিং অ্যান্টাসিড এবং বুকজ্বালার ওষুধ প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর।’ যদি আপনি সন্দেহ করেন যে এসবের যে কোনোটি আপনাকে বাথরুমের দিকে দৌঁড়ানোর জন্য দায়ী, তাহলে ডোজ বা ওষুধ নিয়ন্ত্রণ করতে আপনার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।

* কিছু ওষুধ মলের রঙকে প্রভাবিত করতে পারে

পেপ্টো-বিস্মলের মতো কিছু ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ আপনার মলকে কালো করতে পারে। এরকম তখন হয় যখন আপনার ডাইজেস্টিভ ট্র্যাক বা পরিপাকতন্ত্রের সালফারের সঙ্গে পেপ্টো-বিস্মলের সক্রিয় উপাদান বিস্মুথের সমন্বয় হয়- এ সমন্বয়ে বিস্মুথ সালফাইড গঠিত হয় যা কালো বর্ণের। এ কালো বর্ণ সাময়িক এবং পেপ্টো সেবন বন্ধ করার পর কিছুদিন পর্যন্ত থাকতে পারে।

* মলে রক্ত সবসময় সতর্ক সংকেত

পুনরাবৃত্তির ভিত্তিতে মলের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ রক্ত গেলেও ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ও গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ভাসুধা ধর, এভরিডে হেলথ ডটকমকে বলেন, ‘রক্ত হতে পারে হেমোরয়েড বা পাইলস, অ্যানাল ফিশার, প্রি-ক্যানসারাস কোলন পলিপ বা ক্যানসারপূর্ব কোলন পলিপ অথবা প্রদাহমূলক অন্ত্র রোগের উপসর্গ।’ সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির ক্ষেত্রে, এটি ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট

পড়ুন :




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ নভেম্বর ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়