ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

পাইলস উপশমের ঘরোয়া উপায়

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৭, ৭ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পাইলস উপশমের ঘরোয়া উপায়

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : হেমোরয়েড হলো রক্তনালী, কানেক্টিভ টিস্যু ও মাংসপেশী দিয়ে তৈরি কুশন, যার অবস্থান অ্যানাল ক্যানালে। সাধারণত মলত্যাগের সময় রেক্টামে অত্যধিক বল প্রয়োগের ফলে হেমোরয়েড ফুলে যায়- দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া অথবা কোষ্ঠকাঠিন্যের ক্ষেত্রে এমনটা হয়ে থাকে। দীর্ঘক্ষণ টয়লেটে বসে থাকা, অত্যধিক সময় দাঁড়িয়ে থাকা কিংবা অতিরিক্ত ভার বহনের ফলেও হেমোরয়েড সমস্যা হতে পারে। হেমোরয়েড সমস্যা থেকেই পাইলস (অর্শরোগ) সৃষ্টি হয়।

হেমোরয়েড ফুলে গেলে অবশ্যই ব্যথা হবে এমন কোনো কথা নেই, তবে রক্তক্ষরণ, ফোলা ও অস্বস্তি হতে পারে। এখানে হেমোরয়েড বা পাইলস সমস্যা উপশমের জন্য কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা আলোচনা করা হলো।

* আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খান
কিভাবে পাইলসের চিকিৎসা করবেন? শরীরের ভেতর থেকে নিরাময়ের জন্য উচ্চ আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার মাধ্যমে শুরু করুন, যা পাইলস জনিত রক্তপাত ও ব্যথা হ্রাস করতে পারে। পাইলস উপশমের জন্য আপনার প্লেটে আঁশ সমৃদ্ধ ফল ও শাকসবজি, বাদামী চালের ভাত, হোল গ্রেন ও বাদাম রাখুন। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে পারে।

* টি ব্যাগ ব্যবহার করুন
গরম, ভেজা টি ব্যাগ প্রয়োগের মাধ্যমে বাহ্যিক পাইলস উপশম হতে পারে। চায়ের ট্যানিক অ্যাসিড ফোলা হ্রাসে সাহায্য করবে, ব্যথা কমাবে এবং রক্তক্ষরণ থামাতে রক্ত জমাটবদ্ধতা বৃদ্ধি করবে।

* দীর্ঘক্ষণ বসে থাকবেন না
যদি আপনার ডেস্ক জব থাকে, তাহলে পাইলস সৃষ্টিকারী রেক্টাল প্রেশার দূর করতে প্রতিঘন্টায় অন্তত পাঁচ মিনিট আশপাশে হাঁটুন। জিমে স্টেশনারি বাইক ও স্কোয়াট পরিহার করুন, যাদের উভয়টাই অনুরূপ প্রেশার প্রয়োগ করতে পারে। এর পরিবর্তে, অন্ত্রের কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটুন।

* গরম পানিতে ভেজান
গরম পানি স্ফীত শিরা সংকুচিত করতে রক্তপ্রবাহ বাড়াতে পারে। সর্বোচ্চ উপকারিতা পেতে আপনার বাথটাব অথবা সিটজ বাথকে চার বা পাঁচ ইঞ্চি উষ্ণ পানিতে পূর্ণ করুন। এবার বসে পাইলস আক্রান্ত স্থানে উষ্ণ পানির ছোঁয়া লাগান। গরম পানিতে বসার পূর্বে টাবে এক মুঠো এপসম সল্ট মেশাতে পারেন, যা পাইলসকে আরো বেশি প্রশমিত করবে।

* বরফ ব্যবহার করুন
পাইলসে রক্তনালী ফুলে যায়, কিন্তু বরফ তাদেরকে সংকুচিত করতে পারে এবং পাইলস থেকে বড় ধরনের মুক্তি দেয়। একটি ব্যাগ বরফ দিয়ে পূর্ণ করুন, এটিকে পাতলা কাপড়ে মোড়ান এবং এটির ওপর ২০ মিনিট বসুন। প্রয়োজনে পুনরাবৃত্তি করুন, কিন্তু পুনরায় বসার পূর্বে অন্তত ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন অর্থাৎ দুই বসার মাঝখানে অন্তত ১০ মিনিটের বিরতি থাকবে।

* এটি পরিষ্কার করুন
প্রতিদিন গোসলের সময় উষ্ণ পানিতে আপনার মলদ্বার অঞ্চল ভেজান। সাবান অথবা অ্যালকোহল-বেসড বা পারফিউমড ওয়াইপ ব্যবহার করবেন না, যা পাইলসকে আরো খারাপ করতে পারে। চিন্তা করার কিছু নেই, শুধু উষ্ণ পানিই আপনার মলদ্বার অঞ্চল পরিষ্কার করতে পারবে। টাব থেকে ওঠে আসার পর মলদ্বার অঞ্চল শুকাতে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করুন।

* শুয়ে থাকুন
জেল অথবা ক্রিম ছাড়া কিভাবে পাইলসের চিকিৎসা করবেন? খুব সাধারণ একটি উপায়ে আপনি তা করতে পারেন। সোফায় চিৎ হয়ে শুয়ে পা দুটিকে ওপরের দিকে আধা ঘন্টা রাখুন। এতে ব্যাকসাইডে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পাবে এবং পাইলস উপশম হবে।

* সাধারণ টয়লেট পেপার ব্যবহার করুন
সুগন্ধযুক্ত অথবা রঙিন টিস্যু পেপারে অতিরিক্ত কেমিক্যাল থাকে যা আপনার স্পর্শকাতর অঞ্চলে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। পরিষ্কারের প্রয়োজনে অল্প ভেজা সাধারণ, সাদা ও সেন্টমুক্ত টয়েলট পেপার বা টাওয়েলেট ব্যবহার করুন। এরপর ফেসিয়াল টিস্যু দিয়ে সেন্টমুক্ত ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করুন।

* পেট্রোলিয়াম জেলি প্রয়োগ করুন
আপনি ভ্যাসলিন দিয়েও পাইলসের চিকিৎসা করতে পারেন। আক্রান্ত স্থানে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগালে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়।

* প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে বাথরুমে যান
প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া না দিয়ে মল ধরে রাখার ফলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এটি আপনার পেটে চাপ সৃষ্টি করবে এবং পাইলসের অবস্থা আরো খারাপ করবে। তাই প্রাকৃতিক ডাক আসলে দেরি না করে বাথরুমে যান।

* আলু প্রয়োগ করুন
এটি অদ্ভুত মনে হতে পারে, কিন্তু আলু পাইলস উপশম করতে পারে এটাই সত্য। আলুকে পিষে অথবা টুকরো করে কেটে আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করুন। কাটা আলু উপশমকারক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট হিসেবে কাজ করে।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ নভেম্বর ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়