ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

দেশে নির্বাচনের অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে : সিইসি

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দেশে নির্বাচনের অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে : সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক : সারা দেশে নির্বাচনের অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইটিআই ভবনে নির্বাচনের দিন দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে তিনি এ কথা বলেন।

সিইসি বলেন, ‘আমরা প্রত্যক্ষ করছি, সারা দেশে নির্বাচনের সুবাতাস বইছে, অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচনমুখী আচরণ লক্ষ্য করা গেছে। নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিচ্ছে। তারা তাদের কর্মকাণ্ড সভা-মিছিল করে যাচ্ছেন। ভোটারদের কাছে প্রার্থীরা ভোট প্রার্থনা করছেন। দেশব্যাপী এটি হচ্ছে।’

প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আগামী ৩০ তারিখ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোট নির্বাচন কমিশনের কাছে আমানত। সেই আমানত বা ভোটের ফলাফল আপনাদের হাতে যাবে বিশ্লেষণ ও বিতরণ করার জন্য। সুতারাং বছরব্যাপী পরিশ্রমের ফসল আপনাদের হাতে চলে যাবে। এই ফসল যাতে কোনো রকম ভুলত্রুটির মাধ্যমে প্রার্থীদের অবস্থানের ব্যাঘাত না ঘটে। তাই সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের ওপর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, তা সতর্কতার সহিত পালন করতে হবে।’

নির্বাচনী দায়িত্ব আমরা ইতিমধ্যে ভাগ করে দিয়েছি। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বিকেন্দ্রিকরণ করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের মূল দায়িত্ব প্রিজাইডিং অফিসারের। কারণ কেন্দ্র থেকে আমরা ফলাফল সংগ্রহ করি। প্রার্থীদের কোনো অভিযোগ থাকলে তা নির্বাচন কমিশনে না দিয়ে রিটার্নিং অফিসার, নির্বাচনী তদন্ত কমিটিসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান সিইসি।

মাঠ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে কে এম নূরুল হুদা বলেন, আমরা প্রত্যক্ষ করেছি দেশে নির্বাচনের একটি সুবাতাস, অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের মধ্যে স্বত:স্ফূর্ত আচরণ লক্ষ্য করা গেছে। নির্বাচনের সাথে সম্পৃক্ত প্রার্থীদের মধ্যে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে এবং তাদের কর্মকাণ্ডের মধ্যে তা প্রতিফলিত হচ্ছে। তারা অনবরত সভা-মিছিল করে যাচ্ছেন এবং প্রার্থীরা তাদের ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন।

সিইসি বলেন, আমাদের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে যেসব কর্মকর্তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, তারা সক্ষমতার সাথে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে অবশ্যই সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।  আমরা প্রশিক্ষণের এমন কোনো স্তর বাদ রাখিনি যে কারণে মাঠপর্যায়ে গিয়ে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের কোনো ঘাটতি থাকে।

সিইসি আরো বলেন, নতুন কতগুলো দিক নিয়ে এ বছর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ইভিএমের কথা বলা হয়েছে। অন্যান্য সব প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আরেকটি নতুন যোগ হয়েছে সেটি হলো প্রার্থীদের যে এজেন্ট কেন্দ্রে থাকবেন সেই পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ  দেওয়া। আমরা তাদের প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবো। তারা তাদের এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দেবে। এটার উদ্দেশ্য ছিল এর মাধ্যমে নির্বাচন কার্যক্রমের যে নীতি, আচরণবিধি, নির্বাচন পরিচালনা বিধি, পোলিং বুথের ব্যবস্থাপনা, প্রশাসনিক অবস্থা এগুলো ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে পোলিং  এজেন্টদের ধারণা দেওয়া। যাতে পোলিং এজেন্ট বুঝতে পারে তার দায়িত্ব।

সেখানে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসাররা বিষয়টি বুঝতে পারেন। যার ফলে আইনগত দিকগুলো পোলিং এজেন্টরা ভালোভাবে বুঝতে পারবেন এবং ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু এবং স্বাভাবিক থাকবে বলেও উল্লেখ করেন সিইসি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রায় এক বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়ে ধীরে ধীরে আমরা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাই। ৩০ তারিখে সেটার শেষ দিন। সেদিন প্রার্থী, সমর্থক এবং ভোটাররা ভোট দেবেন। ভোট নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি আমানত। সেই আমানত, সেই ভোটের ফলাফলগুলো বিশ্লেষণ এবং বিতরণ করার জন্য আপনাদের হাতে চলে যাবে।  সুতরাং এই বছরব্যাপী পরিশ্রম এবং বছরব্যাপী প্রস্তুতির ফসল আপনাদের হাতে চলে যাবে। এই ফসল যাতে কোনো রকমের ভুল ত্রুটির মাধ্যমে প্রার্থীদের অবস্থান নির্ধারণে ব্যাঘাত না ঘটে, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, আপনাদের একটু ভুলের কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সঠিকভাবে ফলাফল বিতরণ ও বিশ্লেষণ করা অত্যন্ত কঠিন। অত্যন্ত সতর্কতা সাথে সঠিকভাবে আপনাদেরকে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সিইসি বলেন, প্রকৃতপক্ষে নির্বাচনের মৌলিক ও বেশির ভাগ দায়-দায়িত্ব পরিচলনার ক্ষেত্রে অলরেডি ডেলিগেট করে দিয়েছি। এটা বিন্যাস্ত আছে রিটার্নিং, সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং তাদের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসাদের উপরে। অর্থাৎ প্রকৃকপক্ষে আমরা যদি কেন্দ্রভিত্তিক বিবেচনা করি, তাহলে কিন্তু নির্বাচন কমিশনের মূল দায়িত্বটা চলে যাচ্ছে  কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে। কারণ কেন্দ্র থেকে আমরা নির্বাচনের ফলাফল পাবো। সুতরাং কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তাদের কাছ থেকে আপনারা ফলাফল নেবেন।

সিইসি আরো বলেন, যেহেতু নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বিকেন্দ্রি হয়ে রিটার্নিং, সহকারী রিটার্নং, প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে চলে গেছে এবং সেগুলো দেখভাল করার জন্য কতগুলো কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেগুলো একটি হলো ইলেকটোরাল ইনকুয়ারি কমিটি। সারা দেশে ১২২টি ইনকুয়ারি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা দেশে নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে, আচরণবিধি ভঙ্গ হলে অথবা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো আইন বিচ্যুতি কর্মকাণ্ড ঘটলে সেগুলো সংশোধন করবেন। তারা অনুসন্ধান করবেন এবং ব্যবস্থা নেবেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন চার দিন। তারা মূলত প্রার্থী এবং সমর্থকদের সাহয্যই করবেন যে, কোনটা আচরণবিধি ভঙ্গের কারণ এবং কোনটা সেগুলো সুধরে দেবেন। যদি সেগুলো না শুনেন তাহলে বিচার করার তাদের সুযোগ থাকবে। অপরাধ আমলে নেওয়ার ক্ষমতা আছে তাদের হাতে। এরপর আছে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে।

মাঠপর্যায়ে অভিযোগ জমা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে সিইসি বলেন, আমাদের যেটা অসুবিধা হয়, সেটি হলো অভিযোগগুলো নির্বাচন কমিশনের কাছে কেন্দ্র থেকে চলে আসে। এই অভিযোগগুলো আমাদের কাছে না এসে, যদি তাৎক্ষণিকভাবে রিটার্নিং অফিসার এবং ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কাছে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান পাবেন। আমাদের কাছে পাঠালে তাদের জন্য একটা বাড়তি অসুবিধা হয়। সেখানে এসব পাঠানো জন্য অনুরোধ থাকবে সবার কাছে।

এ সময় ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ ডিসেম্বর ২০১৮/হাসিবুল/ইভা/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়