ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আড়াইহাজারে নির্মিত হচ্ছে জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চল

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪১, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আড়াইহাজারে নির্মিত হচ্ছে জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চল

কেএমএ হাসনাত : নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মোট ১১১০ একর জমিতে নির্মাণ হচ্ছে জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চল। জাপানের সুমিতমো করপোরেশন ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পের ৭৬ শতাংশ শেয়ার সুমিতমো করপোরেশনের এবং বাকি ৩০ শতাংশের মালিক বেজা’র হবে।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম বৈঠকে অংশ নেয় জাপান ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এজেন্সি (জাইকা)। প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে সূত্র জানিয়েছে।

সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর মধ্যে ৭৬টির স্থান চূড়ান্ত হয়েছে। ২৩টি প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ চলছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চল পেয়েছে ৩টি দেশ। এর মধ্যে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৭৭৪ একর জমিতে চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে চলছে। ভারত মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১০৫৪ একর জমি চেয়েছে। সৌদি আরবও সেখানে বিনিয়োগের জন্য দুই হাজার একর জমি চেয়েছে।

জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে জঙ্গি হামলা ও নাশকতার বিষয়েও আলোচনা হয়। কোনো ধরনের নাশকতামূলক কার্যকলাপ হলে এবং তা অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়লে সুমিতমো করপোরেশন চুক্তি বাতিল করতে পারবে। এছাড়া বৈঠকে আরো ৩টি সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের কাছ থেকে যৌথ মালিকানায় কোম্পানিটির অনুমোদন নিতে হবে।

যৌথ কোম্পানিটি এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভূমি উন্নয়ন, রাস্তা নির্মান, খাল ও পুকুর খনন, পানি নিষ্কাশন, বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, গ্যাস পাইপ লাইন ও তথ্য প্রযুক্তি যোগাযোগ লাইন স্থাপনের কাজ করবে।

এর আগে ২০১৩ সালে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়। পরের বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। ২০১৫ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ২০১৭ সালের গুলশানের সন্ত্রাসী হামলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ পিছিয়ে যায়। অবশেষে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বেজা ও সুমিতমো করপোরেশন সমঝোতা চুক্তি সই হয়। বেজার পক্ষে সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী ও সুমিতমোর পক্ষে আকিতো শিরায়িশি চুক্তিতে সই করেন।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী জানান, জমি অধিগ্রহণের পর ভূমি উন্নয়নের কাজ শুরু হবে। এরপর সেখানে সুমিতমো করপোরেশন সেখানে উন্নয়ন কাজ শুরু করবে। ২০১৫ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতা খুব ক্ষতি করেছে। জাপানিরা এ ধরনের অস্থিরতা পছন্দ করে না। তাই এই অর্থনৈতিক অঞ্চলটি প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু করতে দেরি হয়েছে।

বেজার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রকল্পটি ইতিমধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে ওই অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের লাইন স্থাপন এবং ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য জাইকার কাছ থেকে ঋণ পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

জাইকা অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তবে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে বেশি উপযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জকে। সেখানে মোট এক হাজার ১০ একর জমিতে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে।

জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের গত ৩০ বছরে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার এবং ভারতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জানুযারি ২০১৯/হাসনাত/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়