ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ঢাকাকে আবার হারিয়ে প্লে’অফে চিটাগং

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৫, ৩০ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঢাকাকে আবার হারিয়ে প্লে’অফে চিটাগং

ক্রীড়া প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম থেকে: আবু জায়েদ রাহীর বলে এক রান হতেই পুরো স্টেডিয়ামে গগণবিদারী চিৎকার। জয়ের জন্য তখন তিন বলে ১৫ রান লাগত ঢাকা ডায়নামাইটসের।

রাহী শেষ তিন বলে কোনো অঘটন না ঘটালে ঢাকা ডায়নামাইটসের পরাজয় নিশ্চিত। সাগর পাড়ের স্টেডিয়ামে কোনো অঘটন ঘটল না। পেসার রাহীর দারুণ বোলিংয়ে ১১ রানে ঢাকাকে হারাল চিটাগং। আর এ জয়ে তৃতীয় দল হিসেবে প্লে’অফ নিশ্চিত করল চিটাগং ভাইকিংস। শেষ চারে যেতে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ঢাকাকে।

বুধবার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে ৫ উইকেটে ১৭৪ রান তোলে চিটাগং। জবাবে ঢাকা আটকে যায় ১৬৩ রানে। ঘরের মাঠে টানা তিন পরাজয়ের পর প্রথম জয়ের স্বাদ পেল চিটাগং। স্বাগতিক দর্শকদের জয় উপহার দিয়ে চিটাগং পর্ব শেষ করল স্বাগতিকরা। তাইতো দর্শকদের সম্মানে জয়ের পর ল্যাপ অব অনার দেয় মোসাদ্দেক, শাহজাদ, ফ্রাইলিঙ্ক, রাহী, খালেদরা।



ঢাকাকে হারানোর সুখস্মৃতি ঢাকাতেই পেয়েছিল চিটাগং। সেই আত্মবিশ্বাসে এবার ঘরের মাঠে জয় পেল মুশফিকরা। তবে ম্যাচের পারতে পারতে ছিল উত্তেজনা। শেষ ওভারের আগ পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছিল না কারা হাসবে বিজয়ের হাসি।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে সাকিবের দল। চতুর্থ উইকেটে সোহানকে সঙ্গী করে সাকিব প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নেন। দুজন ৫০ রানের জুটি গড়েন। ২৩  বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় সোহান দ্রুত ৩৩ রান করেন। কিন্তু ডেলপোর্টের স্লোয়ারে সুইপ খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে দলের বিপদ ডেকে আনেন উইকেট কিপার এ ব্যাটসম্যান। পরের বলে সাকিবের সঙ্গে ভুলবোঝাবুঝিতে রান আউট কাইরন পোলার্ড।

সেখান থেকে আন্দ্রে রাসেলের ২৩ বলে ৩৯ রানে জয়ের স্বপ্ন আবার নতুন করে দেখতে শুরু করে ঢাকা।এ ইনিংস খেলার পথেভাগ্যকেও পাশে পেয়েছিলেন রাসেল। ডেলপোর্টের করা ইনিংসের ১৪তম ওভারে নো বলের কল্যাণে বোল্ড হয়েও বেঁচে যান। জীবন পাওয়ার পরও ইনিংস বড় করতে পারেননি এ ক্যারিবীয়ান।



শেষ চার ওভারে জয়ের জন্য মাত্র ৩৯ রান লাগত ঢাকার। প্রথম বলে মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে বেঁচে যান সাকিব। কিন্তু তৃতীয় বলেডিপ মিড উইকেট ক্যাচ দেন রাসেল। স্থির দাঁড়িয়ে বল তালুবন্দি করেন ডেলপোর্ট। এক ওভার পর শানাকার শিকার সাকিব। চার মেরে হাফ সেঞ্চুরির স্বাদ পাওয়ার পরের বলেই লং অনে ক্যাচ দেন ৪২ বলে ৫৩ রান করা সাকিব। ঢাকার জয়ের আশা শেষ হয়ে যায় সেখানেই। পরের ব্যাটসম্যানরা পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছেন মাত্র। ২৫ রানে ৩ উইকেট নেন রাহী। শানাকা ২টি ও ডেলপোর্ট নেন ১ উইকেট।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৪২ রান তোলে চিটাগংয়ের মোহাম্মদ শাহজাদ ও ডেলপোর্ট। চতুর্থ ওভারে রাসেলকে দুই চার ও এক ছক্কা মেরে বড় কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শাহজাদ। কিন্তু ২১ রানে তাকে থামান সুনীল নারিন। ইয়াসির শাহ ভালো শুরু করলেও তাকে আটকে দেন নারিন। ১৯ রানে ব্রিচের হাতে ক্যাচ দেন ইয়াসির।

পরের গল্পটা মুশফিক ও ডেলপোর্টের। দারুণ ব্যাটিংয়ে ঢাকার বোলিং আক্রমণ শক্ত হাতে শাসন করেন তারা। ২২ গজে ঝড় তোলেন মুশফিক। ২৪ বলে করেন ৪৩ রান। ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া ডেলপোর্টের ব্যাট থেকে আসে ৫৭ বলে ৭১ রান। কিন্তু দুজনই শেষ ওভারে হতাশ করেন চিটাগংয়ের দর্শকদের।



শেষ ওভারে পরপর দুই বলে দুই সেট ব্যাটসম্যানকে ফেরান রাসেল। হ্যাটট্রিক বলে তাকে উইকেট উপহার দিয়ে আসেন শানাকা। টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয়বারের মতো হ্যাটট্রিকের স্বাদ পেলেন রাসেল। দুই দিনের মধ্যে বিপিএল পেল আরেকটি হ্যাটট্রিকের দেখা। সব মিলিয়ে রাসেলের হ্যাটট্রিক বিপিএলের পঞ্চম।

দারুণ হ্যাটট্রিকে মুখে হাসি নিয়ে প্রথম ইনিংস শেষ করলেও ম্যাচ শেষ করতে পারেননি রাসেল। জয়ের মুখে দাঁড়িয়ে থেকেও পরাজয় নিয়ে চিটাগং পর্ব শেষ করল তারা। টানা চার ম্যাচ হেরে বেশ বিপদেই আছে তারা। শেষ চারে যেতে হলে শেষ দুই ম্যাচে জয় পেতেই হবে ঢাকাকে।




রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/৩০ জানুয়ারি ২০১৯/ইয়াসিন/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়