ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

হার্টের ডাক্তাররা যা মেনে চলেন (দ্বিতীয় পর্ব)

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১২, ১১ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হার্টের ডাক্তাররা যা মেনে চলেন (দ্বিতীয় পর্ব)

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : বিশ্বে রোগে মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ হলো হৃদপিণ্ডের রোগ বা সংক্ষেপে হৃদরোগ। হার্টকে বাংলায় হৃদপিণ্ড বলে, যাকে আরো আদুরে নাম হৃদয় বলতে পারি। কিন্তু এ হৃদয় আমাদের ভুল জীবনযাপন বা অসচেতনতার কারণে ভুগতে পারে। পরিণতিতে হতে পারে হার্ট ফেইলিউর কিংবা হার্ট অ্যাটাক। হার্টের ডাক্তাররা হৃদরোগের রোগীকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যা তারা নিজেরাও মেনে চলার চেষ্টা করেন, কারণ হৃদয়কে বাঁচাতে হবে। ডাক্তাররা ভালোভাবেই জানেন যে হৃদয় আক্রান্ত হলে মৃত্যু হতে পারে অকালে। হৃদয়কে রক্ষা করতে হার্টের ডাক্তাররা যা মেনে চলেন, তা নিয়ে পাঁচ পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে দ্বিতীয় পর্ব।

* ‘আমি ক্ষুধা না লাগলে খাই না’
‘খাবেন না, যদি ক্ষুধার্ত না হন। এটি শুনতে খুব সাধারণত মনে হতে পারে, কিন্তু অনেক লোক অন্যান্য কারণে প্রচুর খাবার খেয়ে থাকেন, যেমন- একঘেয়েমি অথবা মানসিক চাপ। আমার পরামর্শ হলো ক্ষুধা না লাগলে খাবেন না এবং খাওয়ার সময় হলে বেশি করে খান, কিন্তু অতিভোজন নয়। দিনে তিন বেলা ভারী খাবার খাওয়াকে আমি সমর্থন করছি না। আপনার হার্টের উপকারের জন্য আপনি সবচেয়ে ভালো যা যা করতে পারেন তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত ওজন বজায় রাখা অন্তর্ভুক্ত।’
- রিচার্ড রাইট, কার্ডিওলজিস্ট ও সান্টা মনিকায় অবস্থিত প্রভিডেন্স সেন্ট জন’স হেলথ সেন্টারের অন্তর্গত প্যাসিফিক হার্ট ইনস্টিটিউটের সভাপতি

* ‘আমি হাসিখুশি থাকতে চেষ্টা করি’
‘আমি প্রতিদিনকার পরিস্থিতি থেকে আনন্দ নেওয়ার চেষ্টা করি, যা আমার ভেতরটাকে শিথিল করে এবং প্রায়শ হাসতে সাহায্য করে। আপনার নিয়ন্ত্রণে নেই এমন বিষয়ে হাসি কেবলমাত্র মানসিক চাপই কমায় না, এটি ধমনীকে প্রসারিত করে ও রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণ করে।’
- সুজানে স্টেইনবাউম, কার্ডিওলজিস্ট ও দ্যা আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের গো রেড ফর ওমেন নামক আন্দোলনের মুখপাত্র

* ‘আমি যোগব্যায়াম করি’
‘আমরা জানি যে উচ্চমাত্রার মানসিক চাপ হার্টের জন্য ভালো নয়। তীব্র মানসিক চাপ কেবলমাত্র হার্টের প্রত্যক্ষ ক্ষতিই করে না, এটি এমন খারাপ আচরণের দিকেও ধাবিত করে যা হার্টের জন্য অমঙ্গলজনক, যেমন- ধূমপান, মদপান ও অস্বাস্থ্যকর খাবার ভোজন। আমি যোগব্যায়ামের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানোর চর্চা শুরু করেছি। এটি আমাকে জটিলতার জট খুলতে ও ভারসাম্য খুঁজে পেতে সাহায্য করে।’
- জেনিফার হেথি, কার্ডিওলজিস্ট ও কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক

* ‘আমি প্রচুর পানি পান করি’
‘দিনে পাঁচ বা আরো বেশি গ্লাস পানি পান হৃদরোগ জনিত মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে পারে, কারণ পানিশূন্যতা হেমাটোক্রিট ও রক্তের সান্দ্রতা বৃদ্ধি করতে পারে, যাদের উভয়ের সঙ্গে কার্ডিওভাস্কুলার ইভেন্টের সম্পর্ক পাওয়া গেছে। একটি সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে যে পানি পানের পরিমাণ এক শতাংশ বাড়ালেও সমগ্র ডায়েটের উন্নয়ন হয়, কারণ আপনি শর্করা ও লবণ কম খান ও সার্বিক ক্যালরি গ্রহণ হ্রাস পায়।’
- জেসন গিচার্ড, আলাবামার অন্তর্গত বার্মিংহামের কার্ডিওলজিস্ট

* ‘আমি মেডিটারেনিয়ান ডায়েট খাই’
‘দিনের শেষভাগে যখন আমি ঘরে ক্ষুধার্ত হই তখন চিপস খাওয়ার পরিবর্তে অর্ধেক অ্যাভোকাডোর ওপর অলিভ অয়েল ছিটিয়ে খাই- এ খাবারটি সুস্বাদু ও পেট ভরা রাখে। এ কুইক স্ন্যাকটি মেডিটারেনিয়ান ডায়েটের একটি অংশ, যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।’
- গ্লেন রিচ, কানেক্টিকাটের অন্তর্গত ট্রামবুলের এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট ও স্থূলতা বিশেষজ্ঞ

* ‘আমি ভালো মাল্টিভিটামিন সেবন করি’
‘একজন ফিজিশিয়ান ও ভিটামিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমি আমার হার্টকে সাহায্য করার জন্য একটি পছন্দের মাল্টিভিটামিন সেবন করি। জার্নাল অব নিউট্রিশনে ২০১৫ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় পাওয়া যায়, যেসব নারী তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে মাল্টিভিটামিন সেবন করেছেব তাদের হৃদরোগ ও হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পায়। যদিও আমি ভালো ভারসাম্যের মেডিটারেনিয়ান খাবার খাই, কিন্তু তারপরও আমি জানি যে এ ডায়েটে কিছু পুষ্টির অভাব রয়েছে। তাই আমি আমার ডায়েট, লাইফস্টাইল ও স্বাস্থ্য উদ্বেগের ওপর ভিত্তি করে একটি মাল্টিভিটামিন সেবন করি।’
- অ্যারিয়েল লেভিটান, ভাউস ভিটামিনের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও দ্য ভিটামিন সলুশন: টু ডক্টরস ক্লিয়ার দ্য কনফিউশন অ্যাবাউট ভিটামিন অ্যান্ড ইউর হেলথের লেখক

* ‘আমি প্রতিবছর ফ্লু’র টিকা নিই’
‘প্রায় সকলের ক্ষেত্রে ফ্লু’র টিকা নেওয়া ভালো, বিশেষ করে তাদের জন্য আরো ভালো যাদের ইতোমধ্যে হৃদরোগ ও হার্ট ফেইলিউর বা হৃদয় বিকলতা রয়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, ফ্লু’র টিকা অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন অথবা অনিয়মিত হার্টবিট থেকে সুরক্ষা দিতে পারে।’
- জেসন গিচার্ড, আলাবামার অন্তর্গত বার্মিংহামের কার্ডিওলজিস্ট

* ‘আমি বন্ধুবান্ধব ও প্রিয়জনকে সময় দিই’
‘আপনার সামাজিক সম্পর্কের কোয়ালিটি ও কোয়ান্টিটির সঙ্গে সমগ্র স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাসের সম্পর্ক রয়েছে। হৃদরোগের সঙ্গে মানসিক চাপপূর্ণ ঘটনা, সামাজিক চাপ, কাজের চাপ ও মনস্তাত্ত্বিক বিপর্যের যোগসূত্র পাওয়া গেছে- এসব বিষয়ে বন্ধুবান্ধব ও পরিবার আপনাকে সাহায্য করতে পারে।’
- জেসন গিচার্ড, আলাবামার অন্তর্গত বার্মিংহামের কার্ডিওলজিস্ট

(চলবে)

পড়ুন :

 



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ মে ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়