ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রোডম্যাপ টার্গেটে ছুটছে আ.লীগ

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৪, ২২ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রোডম্যাপ টার্গেটে ছুটছে আ.লীগ

নৃপেন রায় : একাদশ জাতীয় নির্বাচন ও দলীয় মিশনের রোডম্যাপ নিয়ে জাতীয় সম্মেলন সম্পন্ন করে উদ্যম ও উৎসাহ নিয়ে অবিরাম গতিতে ছুটে চলেছে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

২২ অক্টোবর ২০১৬ থেকে ২২ মার্চ ২০১৭ পর্যন্ত ছয় মাস সময়ে দলটির সাংগঠনিক তৎপরতা ও ভোট চাওয়ার প্রবণতা দেখে এমনটাই প্রতীয়মান হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা রাইজিংবিডির কাছে মত ব্যক্ত করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার, এখন সময় বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার- এই সেøাগান ধারণ করে গত ২২ ও ২৩ অক্টোবর জাতীয় সম্মেলনে নতুন নেতা নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ। সারা দেশ থেকে আগত দলের নেতাকর্মীদের সামনে দলের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে ও রোডম্যাপ তুলে ধরে দিক-নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সম্মেলনে টানা অষ্টমবারের মতো সভাপতি পুনঃনির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু কন্যা। আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্থলাভিসিক্ত হন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মিজানুর রহমান শেলী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল। ক্ষমতা কাঠামোর সুবিধা নিয়ে তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করবে- এটাই স্বাভাবিক। আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মত প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপি তো এখন রাজনীতির মাঠে সাংগঠনিক শক্তি, জনপ্রিয়তা ও আস্থা নিয়ে দাঁড়াতে পারছে না। তাদের যে সাংগঠনিক উদ্দেশ্য তার প্রতিফলন তারা ঘটাতে পারছে না। আওয়ামী লীগ এই সুযোগে সাংগঠনিক শক্তি ও উন্নয়নের বার্তা নিয়ে নির্বাচনী মাঠে ছুটছে। তারা ছুটবে, এটাই স্বাভাবিক।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনা দেশকে সমৃদ্ধির সোপানে নিতে এবং দারিদ্র্যশূন্য করতে আগামী দিনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। পাশাপাশি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও তার সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা পূর্ণব্যক্ত করেন। বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ ও শান্তিময় দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তার ইচ্ছা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করেন। সম্মেলনের শেষে দিনে নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আপনারা যে গুরুদায়িত্ব আমার ওপর আবারও অর্পণ করলেন, তা আমি বহন করব। ৩৫ বছর একটা দলের সভাপতি, তবে একটা সময় আমাকে বিদায় নিতে হবে। আর এখন থেকেই আগামী নির্বাচনের জন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে। তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে জয়ী হয়ে যাতে দেশবাসীর সেবা করতে পারি সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাব। আওয়ামী লীগ দুই দফায় আট বছর ক্ষমতায় রয়েছে। এত উন্নয়ন আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ করতে পারেনি। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে আমরা জনগণের জন্য কাজ করতে সক্ষম হয়েছি। তৃতীয় দফায় নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য নেতাকর্মীদেরকে জনগণের দোরগোড়ায় যেতে হবে। তাদের কল্যাণে আমরা কী কী করেছি, সেটা তুলে ধরতে হবে।’

২৫ অক্টোবর রাজধানীর ধানমন্ডিতে একটি কমিউিনিটি সেন্টারে এক মতবিনিময় সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা দুটি এজেন্ডা হাতে নিয়েছি। এক, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করা। দুই, আগামী নির্বাচনের জন্য দলের প্রস্তুতি নেয়া।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, দলীয় মিশন-ভিশন সফল করার টার্গেট নিয়ে ইতোমধ্যেই মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, বাংলাদেশ তাঁতী লীগ সম্মেলন শেষ করেছে। ২৯ এপ্রিল আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বাকি সহযোগী সংগঠনগুলোও ধারাবাহিকভাবে সম্মেলন করবে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা জেলা পর্যায়ে সভা সমাবেশে তার সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ের ফিরিস্তি দেয়ার পাশাপাশি নৌকায় ভোট চাইতে শুরু করেছেন। তিনি বগুড়া, লক্ষ্মীপুর এবং মাগুরা সফর করেছেন। আগামী ২৮ মার্চ ফরিদপুর, ১৫ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও, ২৩ এপ্রিল বরগুনা, ২৯ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় সফর করবেন।

মাগুরা সদরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে দেশের উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণ করা। আপনারা বারবার নৌকায় ভোট দিয়েছেন। নৌকায় ভোট দিয়েছেন বলেই আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে, দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়েছেন বলেই আপনারা উন্নয়নের মুখ দেখছেন। তাই ২০১৯ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে দেশ সেবার সুযোগ দিন।’

বুধবার সিলেট নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিভাগীয় প্রতিনিধি সমাবেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও একই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র দেড় বছর বাকি। এখন আমাদের কথা কম বলে, বেশি বেশি কাজ করতে হবে। আগামী নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগকে আরও সুশৃঙ্খল, আরও আধুনিক হয়ে শেখ হাসিনাকে জয় উপহার দিতে হবে।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ মার্চ ২০১৭/নৃপেন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়