ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

হাব নির্বাচন, শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে লড়াই

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫০, ১৯ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হাব নির্বাচন, শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে লড়াই

জামাল উদ্দিন ও শেখ আবদুল্লাহ

মুহাম্মদ নঈমুদ্দীন : শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন (হাব) এর নির্বাচনী লড়াই।

প্রার্থীরা ছুটছেন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে। ভোটারদের দরজায় গিয়ে ভোট চাইছেন নেতারা। কথা দিচ্ছেন যে কোনো সময় বিপদে-আপদে এজেন্সি মালিকদের পাশে থাকার। অঙ্গীকারও করছেন অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের। সেই সঙ্গে টোপ দেওয়া হচ্ছে রাজধানী ঢাকায় মনোরম হাব টাওয়ার, হাব পল্লী বাস্তবায়নসহ নানা সুযোগ সুবিধার। বিশেষ করে নির্বাচনী লড়াইয়ে উঠে এসেছে হাবে বর্তমান নেতৃত্বের সফলতা ব্যর্থতা। এমন কি একে অপরকে ঘায়েল করতে ‘গেল বছরের হজযাত্রী নিয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি ও হজ অব্যবস্থাপনাকে পুঁজি করা হচ্ছে। আবার কেউ কেউ হাবের নেতৃত্বদানের সফলতা তুলে ধরে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, ভোটের বাকী আর মাত্র একদিন। রাত পোহালেই (বৃহস্পতিবার) দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন। এই নির্বাচনে নির্ধারিত হবে হাবের নতুন নেতৃত্ব।

ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে ভোট। ঢাকার নয়াপল্টনের আনন্দ ভবন কমিউনিটি সেন্টার ও চট্টগ্রাম-সিলেটে হাব কার্যালয়ে এই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যেই গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন। প্রধান কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন এজেন্সি মালিক হারুনুর রশীদ। মূলত দেশের এজেন্সির প্রতিনিধি যারা হাবের কাউন্সিলর তারাই ভোট দিয়ে আগামী দুই বছরের জন্য হাবের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।

সূত্র জানায়, ঢাকায় হাবের ভোটার সংখ্যা এক হাজারের ওপরে। আর চট্টগ্রামে ৯৭ ও সিলেটে ভোটার হলো ৪৯ জন।

জানা গেছে, নির্বাচনে মোট তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তার মধ্যে হাবের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে হাব সমন্বয় পরিষদ, হাবের বর্তমান মহাসচিব শেখ আবদুল্লাহর নেতৃত্বে হাব গণতান্ত্রিক ফোরাম আর আব্দুস সোবহানের নেতৃত্বে হাব গণতান্ত্রিক ঐক্য ফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

এজেন্সি মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাবের নির্বাচনে লড়াই হবে মূলত জামাল-বনাম আবদুল্লাহ প্যানেলের সঙ্গে। উভয় প্যানেলের প্রধান হাবের সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ নেতা হওয়ায় ভোটাররাও তাদের দিকে ঝুঁকছেন।

হাবের বর্তমান মহাসচিব শেখ আবদুল্লাহ তার অতীত কর্মকাণ্ড তুলে ধরে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। তিনি ভোটারদের জন্য বেশকিছু নির্বাচনী অঙ্গীকারও তুলে ধরেছেন। তার মধ্যে হাব পল্লী দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নসহ সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার কথা রয়েছে।

নির্বাচনে হাব গণতান্ত্রিক ফোরাম পুর্ণ প্যানেলে জিতবেন দাবি করে এই প্যানেলের প্রধান শেখ আবদুল্লাহ বলেন, ‘হাবের হয়ে আমি ৮ বছর কাজ করেছি। চেষ্টা করেছি তাদের সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে সবসময় পাশে থাকার। সুন্দর ও সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি হজযাত্রী ও এজেন্সিদের জন্যই মাঠে ছিলাম। এই অতীত কর্মকাণ্ড ও তাদের ভালোবাসাই আমার বড় শক্তি। আশা করি, কাজের মূল্যায়ন করে তারা আমাকে পুর্ণ প্যানেলে বিজয়ী করবেন।’

হাব গণতান্ত্রিক ফোরামের মূল প্রতিদ্বন্দ্বি হাবের সাবেক সভাপতি জামাল উদ্দিনের হাব সমন্বয় পরিষদ প্যানেল। জামাল উদ্দিন এই প্যানেলের প্রধান। তিনি এর আগে দুই মেয়াদে হাবের সভাপতি ছিলেন। তার সময়কালের সফলতা এবং গত দুই বছরের হজ অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম দুর্নীতি তুলে ধরে ভোট আদায়ের চেষ্টা করছেন।

জামাল উদ্দিন বলেন, ‘যোগ্য নেতৃত্বের অভাব ও অদক্ষতার কারণে আজকে হজ নিবন্ধনসহ নানা বিষয় নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। আর আমার সময়কালে এমন পরিস্থিতি কখনও হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনাসহ হাবের নেতৃত্বদানে বর্তমান নেতৃত্ব চরম ব্যর্থ। এজন্য বৃহস্পতিবার নির্বাচনে ভোটাররা হাব সমন্বয় পরিষদকে পূর্ণ প্যানেলে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে তাদের সমুচিত জবাব দেবে।’

জামাল উদ্দিনের প্যানেল নির্বাচিত হলে মোট হজযাত্রীর কোটা বৃদ্ধি, ব্যাগ নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের উদ্যোগ নেবে। অতীতের মতো এজেন্সিগুলোর পাশে থেকে সুন্দর হজ ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলবে। হজের কোটা সমস্যা, নিবন্ধনসহ সব বিষয় সততার সঙ্গে সমাধানের অঙ্গীকার করে হাব সমন্বয় পরিষদ।

জামাল উদ্দিন ছাড়াও এই প্যানেল থেকে প্রার্থী হয়েছেন মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ হেলাল খান, মোহাম্মদ রেজাউল করিম, ড. মোহাম্মদ কাফীলুদ্দিন সরকার সালেহী, মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুর রউফ, ওবায়দুর রহমান হানিফ, মাওলানা জাকির হোসাইন প্রমুখ।

আর হাব গণতান্ত্রিক ফোরামে শেখ আবদুল্লাহ ছাড়াও যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তারা হলেন, ফরিদ আহমেদ মজুমদার, ফজলুল ওয়াহাব মামুন, মুহাম্মদ আমিনুল হক, একে এম মাহবুব মান্নান, হাফেজ নূর মোহাম্মদ, মুহাম্মদ আবু সালেহ রাজি (জাভেদ), মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দিন আলমগীর, কে এম মোবারক উল্লাহ (শিমুল), মাওলানা তাজুল ইসলাম আশরাফী, আলহাজ্ব মোহাম্মদ আজাদ, জসিম উদ্দিন লিটন, মোহাম্মদ জাফর উদ্দিন, এ এইচ এম শহীদুল্লাহ, মাওলানা মো. আব্দুর রব, মোহাম্মদ আবদুল মোমেন প্রমুখ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ এপ্রিল ২০১৭/নঈমুদ্দীন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়