ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে বন্যায় ঘর-বাড়ি হারিয়েছে ২ শতাধিক পরিবার

বাদশাহ সৈকত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৪, ২৫ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কুড়িগ্রামে বন্যায় ঘর-বাড়ি হারিয়েছে ২ শতাধিক পরিবার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামে বন্যার পানি নেমে গেলেও এবারের বন্যা সর্বশান্ত করে দিয়েছে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর অববাহিকার দুই শতাধিক পরিবারকে।

এর মধ্যে শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে বাড়ির জায়গায় পড়ে থাকলেও শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি, আসবাবপত্রসহ সবকিছুই ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সর্বনাশী বন্যার পানির স্রোত। কোনো কোনো পরিবারের বাড়ির জায়গায় এখন অথৈ পানি।

বাঁধ ও পাকা সড়কে আশ্রয় নেওয়া এসব পরিবার ভিটে-মাটিতে ফিরে সব হারানোর দৃশ্য দেখে শুধুই আর্তনাদ করেই চলেছেন।

ঘর-বাড়ি হারানো এসব পরিবারের থাকার জায়গার পাশাপাশি বাড়ি-ঘর মেরামতে সরকারি সহযোগিতা জরুরি হয়ে পড়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় বন্যার পানিতে ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত ও ভেসে যাওয়া পরিবারের সংখ্যাই শতাধিক।

এ ছাড়াও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চর সারডোব গ্রামে ধরলার অববাহিকায়  বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়া ও বিধ্বস্ত হওয়া বাড়ির সংখ্যা প্রায় ৬৩টি।

সরেজমিনে দেখা যায়, এসব পরিবারের কারো কারো বাড়ির চিহ্ন মাত্র নেই। অনেকের বাড়ির জায়গায় বুক সমান পানি। দেখে বোঝার উপায় নাই এখানে বন্যার আগে কোনো বাড়ি ছিল। আর অনেকের বাড়ি দুমড়ে-মুচড়ে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে আছে। যেন বড় কোনো ঝড় বয়ে গেছে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এসব বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলতেই চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে কষ্টের বর্ণনা দিচ্ছেন তারা।

সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চর সারডোব গ্রামের বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়া বাড়ির মালিক তালুকদার (৫০) সাংবাদিক দেখে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলেন, আমার জীবনে ধরলা নদীর এমন অবস্থা দেখিনি। তীব্র বেগে বন্যার পানি বাড়িতে ঢুকে পড়ায় কিছুই নিতে পারিনি। শুধু বউ-বাচ্চা নিয়ে জান বাঁচিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। তারপর মুহূতেই ঘর-বাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে গেল। বাড়ির জায়গায় এখন অথৈ পানি। থাকার জায়গাও নেই, ঘর তোলার একটি খুঁটিও নেই। এখন যে কি হবে আল্লাই ভালো জানেন।

সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের আবুল হোসেন সাংবাদিকের সামনে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, বাড়ি-ঘর সব বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে আছে। বাড়ির চারটি ঘর ঠিক করতে অনেক টাকা লাগবে। কিভাবে ঠিক করব কোনো উপায় নেই।  চেয়ারম্যান চাল দিছে কিন্তু সে চাল দিয়ে ঠিক মতো খেতেই পারছি না।

যাত্রাপুর ইউনিয়নের ময়না বেগমের বাড়ির জায়গায় শুধু নলকূপটি ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। বন্যার সময় যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন সেখান থেকে আর ফেরার উপায় নেই তার। সব হারিয়ে এখন ছেলে-মেয়েকে বাঁচানোর তাগিদে ছুটে বেড়াচ্ছেন রিলিফের আশায়।  

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মো. ফেরদৌস খান জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়ির তালিকা তৈরি হচ্ছে। তালিকা তৈরি করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা তালিকা তৈরির কাজ করছে। তালিকা তৈরি হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়ির মালিকদের টিন ও টাকা দিয়ে পুনর্বাসন করা হবে।

 

 

রাইজিংবিডি/কুড়িগ্রাম/২৫ আগস্ট ২০১৭/বাদশাহ্ সৈকত/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়