ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কারাগারে শীর্ষ সন্ত্রাসী-জঙ্গি ফোনে কথা বলতে পারবেন না

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৮, ৭ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কারাগারে শীর্ষ সন্ত্রাসী-জঙ্গি ফোনে কথা বলতে পারবেন না

মাকসুদুর রহমান : দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দিরা টেলিফোনে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহেই এ সেবা চালু হবে বলে জানা গেছে। তবে শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিরা এ সুযোগ পাবেন না বলে কারা সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

বুধবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, ৮ মার্চ টাঙ্গাইল জেলা কারাগার থেকে এ কার্যক্রম চালু করার কথা ছিল। কিন্তু অনিবার্য কারণে তা হচ্ছে না। তবে আগামী সপ্তাহের যেকোনো দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু নিশ্চিত করেছেন।

রাইজিংবিডির প্রশ্নের জবাবে শরীফ মাহমুদ অপু বলেন, ‘মূলত এ পদ্ধতি বন্দিদের সংশোধন হওয়ার সুযোগ করে দেবে। প্রযুক্তি ব্যবহারের সব ব্যবস্থাও করে রাখা হয়েছে।’

কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বন্দিদের কথা বলার সময় সেখানে গোয়েন্দা সংস্থার একজন সদস্য উপস্থিত থাকবেন এবং ফোনকল রেকর্ড করা হবে। তবে জঙ্গি এবং শীর্ষ সন্ত্রাসীরা ফোনে কথা বলার সুযোগ পাবেন না। শুধু সাধারণ বন্দিরাই কারাগার থেকে টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ পাবেন। ফোনে কোনো ধরনের আদেশ-নির্দেশও দেওয়া যাবে না।’

কারা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্দিদের কারাবাস শুরুর সময় তাদের কাছ থেকে মা, বাবা, স্ত্রী অথবা সন্তানের মধ্যে দুজনের নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর নেওয়া হবে। সেই দুটি নম্বরেই ফোনে কথা বলতে পারবেন বন্দিরা।

কারাগারের কর্মকর্তা বলেন, ‘বন্দিদের সংশোধন, সমাজে পুনর্বাসন’ এ স্লোগানকে সামনে রেখেই মূলত এ কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে। কারাগারে থাকা জঙ্গিরা হাইলি মোটিভেটেড। তাদের মোটিভেশন করতে হলে তারা যেসব বিষয়ে বা যে ব্যাখ্যার ওপর ভিত্তি করে জঙ্গি হয়েছে সেই ভুল ব্যাখ্যার বৃত্ত থেকে বের করে আনতে হবে। সেজন্য নানা প্রচেষ্টাও অব্যাহত আছে। আবার বন্দিরা ফোনে কথা বলার সুযোগ পেলে তাদের সঙ্গে স্বজনদের দেখা করতে আসার প্রবণতা অনেকটাই কমে যাবে। প্রাথমিকভাবে কেরানীগঞ্জ এবং কাশিমপুর কারাগারে এ সুবিধা চালু হবে এবং পর্যায়ক্রমে সব কারাগারে চালু হবে। বছরখানেক আগে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বিবেচনা করে সেটি বাস্তবায়ন করা যায়নি।

কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশের ৬৮টি কারাগারে ৭৮ হাজার বন্দি আছেন। কারাবিধি অনুযায়ী পাঁচ বছরের বেশি সাজা পাওয়া বন্দিকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ফলে অনেক বন্দির নিজ বাড়ি থেকে ওই কারাগারের দূরত্ব বেশি হয়। এ কারণে কারাগারে এসে কথা বলার জন্য তাদের স্বজনদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

কারা কর্মকর্তারা বলেন, বন্দিরা ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা আইনি বিষয়ের বাইরে কোনো কথা বলতে পারবেন না। নির্ধারিত সময়ের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এ কথোপকথন যন্ত্রে রেকর্ড করা হবে। বিষয়টি তদারক ও পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতিটি কারাগারে একজন করে কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকবেন। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও আইনি সহায়তাসংক্রান্ত কথার বাইরে অন্য কোনো কথা হলে বন্দির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ মার্চ ২০১৮/মাকসুদ/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়