ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘কোটার যৌক্তিক মাপকাঠি দিতে হবে’

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:০৫, ৫ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘কোটার যৌক্তিক মাপকাঠি দিতে হবে’

আবু বকর ইয়ামিন: বেশ কিছুদিন ধরে সরকারি চাকুরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন চাকুরি প্রত্যাশীরা। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে কোটা পদ্ধতির সংস্কার।

আন্দোলকারীদের দাবি, কোটা পদ্ধতি একেবারে বাতিল নয়, সংস্কার প্রয়োজন। এ বিষয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন বিশিষ্ঠ সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, শিক্ষাবীদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘কোটা পদ্ধতিকে যুক্তিযুক্ত করতে হবে। এর জন্য একটা যৌক্তিক মাপকাঠি দিতে হবে। এখন যেটা বিদ্যমান রয়েছে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, আমি মনে করি যে, প্রশাসনে যাদের প্রতিভা আছে, মেধা আছে তাদেরকে আনতে হবে। কোটা পদ্ধতিতে যে সবসময় মেধা পাওয়া যায় তা কিন্তু নয়। তাতে আমাদের প্রশাসনের ক্ষতি হতে পারে। সেজন্য কোটা প্রথাটাকে যৌক্তিক করতে হবে।

‘আমি মনে করি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটা কোটা থাকতেই পারে, কারণ তাদের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তবে সেটি হতে হবে যুক্তিযুক্ত। তাদের কোটা কত শতাংশ রাখা যাবে সেটি দেখা যেতে পারে।’

পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য একটা সুযোগ থাকার বিষয়ে মত দিয়ে তিনি বলেন, ‘সব মুক্তিযোদ্ধা যে পিছিয়ে পড়া বিষয়টি এমন নয়। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে তুলে আনার জন্য একটি যৌক্তিক কোটার সুযোগ প্রয়োজন আছে। এর বাইরে আমি কোনো কোটার প্রয়োজন বোধ করি না। আমি মনে করি ২০ শতাংশের বেশি কোটা থাকা উচিত নয়।

‘আমাদের মেয়েরা বর্তমানে অনেক এগিয়ে আসছে। আরো অগ্রসর হবে বলে আমি আশা করি। ধারাবাহিকভাবে সেটিকেও কমিয়ে আনতে হবে। জেলা কোটা খুব বেশি প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ, মানুষ এখন অনেকটা শহরমুখী হয়ে গেছে।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘বর্তমান সময়ে এসে কোটা ২০ শতাংশের বেশি হওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। যেভাবে হোক সবমিলিয়ে এটিকে শতাংশ হারে কমিয়ে আনতে হবে। ৮০ শতাংশকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। অন্যথায় আমাদের প্রশাসনিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়বে। যা দেশের জন্য বিরাট ক্ষতিকর হবে।

আমাদের মতো দেশে কিছু কোটা থাকতেই পারে, সেটি মানতে হবে। তবে সেটি কত শতাংশ হারে ও কেমন হবে সেটি নিয়ে ভাববার প্রয়োজন রয়েছে। প্রশাসনিক নিয়োগে এমন কিছু করা যাবে না যে, দেশের জন্য, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে।’

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী তার এক বক্তব্যে বলেছেন, কোটার ভিত্তিতে পাওয়া না গেলে সেটিকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। আমি প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যকে স্বাগত জানাই। বর্তমানে আমাদের মেয়েরা যেভাবে এগিয়ে আসছে দেখা যাচ্ছে অনেকে কোটা ছাড়াও মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পাচ্ছে।

যেসব খাতে কোটা রয়েছে সেগুলো যৌক্তিক। তবে সময়ের আলোকে সেটির পরিবর্তন অনস্বীকার্য। শতাংশ হারে প্রত্যেক খাতে কোটা কমাতে হবে। তাই বলছি কোটাকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। ধারাবাহিকভাবে সেটিকে আরো কমিয়ে আনা যেতে পারে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ এপ্রিল ২০১৮/ইয়ামিন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়