ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ট্রাস্ট ব‌্যাংকের ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৬, ৮ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ট্রাস্ট ব‌্যাংকের ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ

এম এ রহমান মাসুম : ইউরোপা গ্রুপের বিরুদ্ধে ট্রাস্ট ব‌্যাংক লিমিটেড থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযোগ প্রমাণ করতে এবং অনুসন্ধানের স্বার্থে এরই মধ‌্যে ইউরোপা গ্রুপ ও ট্রাস্ট ব‌্যাংকের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। শিগগিরই ট্রাস্ট ব‌্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (ডিএমডি) বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ট্রাস্ট ব্যাংকের দিলকুশা শাখার প্রাক্তন চিফ ম‌্যানেজার ও ইভিপি হোসাইন শাহ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন‌্য তলব করেছেন দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা। হোসাইন শাহ আলীকে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত অভিযোগে ব‌্যাংকটি সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

দুদকের উপপরিচালক মো. সামসুল আলম ও সহকারী পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানের সমন্বয়ে অনুসন্ধান দল তাকে আগামী ১৩ মে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

দুদকের ঊর্ধ্বতন সূত্র রাইজিংবিডিকে এসব তথ‌্য নিশ্চিত করেছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে জানান, দুদকের অনুসন্ধানে এরই মধ‌্যে ট্রাস্ট ব‌্যাংক থেকে  ইউরোপা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এমআর গ্লোবাল লিমিটেডের নামে ১০ কোটি টাকার জালিয়াতির প্রমাণ ও ইউরোপা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের নামে ৩৪ কোটি টাকা ওডি হিসাব থেকে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এখন অভিযোগ প্রমাণে নথিপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে। শিগগিরই আইনি ব‌্যাবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, অগ্রণী ও রূপালী ব‌্যাংকের টাকা আত্মসাতের অনুসন্ধানে আরো কিছু তথ‌্য পাওয়া গেছে। যা যাচাই-বাছাইয়ে শিগগিরই ওই ব‌্যাংক ও ইউরোপা গ্রুপের কর্মকর্তাদের তলব করা হবে।

তবে এ বিষয়ে দুদক সচিব ড. শামসুল আরেফিনের জানতে চাইলে তিনি অনুসন্ধানাধীন বিষয়ে কোনো বক্তব‌্য দিতে অস্বীকার করেন।

২০১৭ সালের ২৫ জুলাই মাসে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের এক সময়ের মালিক ও ইউরোপা গ্রুপের স্বত্বাধিকারী সেলিম চৌধুরীর মালিকানাধীন বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নামে অগ্রণী ব‌্যাংক লিমিটেড, ট্রাস্ট ব‌্যাংক লিমিটেড এবং রূপালী ব‌্যাংকের তিনটি শাখা থেকে ঋণের নামে শত কোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপরই অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করতে থাকে দুদকের অনুসন্ধান দল।

সর্বশেষ এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে এমআর গ্লোবাল লিমিটেড, পদ্মা অ্যাগ্রো ট্রেডারস লিমিটেড ও ইউরোপা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের হিসাব ও অডিট রিপোর্ট সংক্রান্ত নথিপত্র তলব করেছিল দুদক। এ অভিযোগ অনুসন্ধানে ট্রাস্ট ব‌্যাংক লিমিটেডের করপোরেট প্রধান কার্যালয়ের ভিপি অ্যান্ড ম‌্যানেজার নাজমুল ইসলাম শিপন, ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার এভিপি অ্যান্ড ম‌্যানেজার বিধান চন্দ্র প্রামাণিক, এফএভিপি মো. মাহমুদুল হাসান এবং এসপিও মো. মোবারক হোসাইনকে গত ৭ মে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্রে আরো জানা যায়, ইউরোপা গ্রুপের স্বত্বাধিকারী সেলিম চৌধুরীর মালিকানাধীন বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নামে অগ্রণী ব‌্যাংক লিমিটেডের পুরানা পল্টন শাখার প্রাক্তন শাখা ব‌্যবস্থাপকের সহায়তায় ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও জাল কাগজপত্রের মাধ‌্যমে অ্যাকাউন্ট খুলে অগ্রণী ব‌্যাংক লিমিটেড ও ট্রাস্ট ব‌্যাংক লিমিটেডের তেজগাঁও শিল্প এলাকা শাখা এবং রূপালী ব‌্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ঋণের নামে শত শত কোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করে। অভিযোগ অনুসন্ধানে এরই মধ‌্যে ট্রাস্ট ব‌্যাংক থেকে এমআর গ্লোবাল লিমিটেডের নামে ১০ কোটি টাকা ও ইউরোপা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের নামে ৩৪ কোটি টাকা ওডি হিসাব থেকে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগের তথ্য পায় দুদক।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ মে ২০১৮/এম এ রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়