ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ব্যাংকগুলোর পুঞ্জীভূত খেলাপি ঋণ কিছুটা কমেছে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০০, ২৫ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ব্যাংকগুলোর পুঞ্জীভূত খেলাপি ঋণ কিছুটা কমেছে

কেএমএ হাসনাত : দেশের আর্থিক খাতে পুঞ্জীভূত খেলাপি ঋণের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। ২০১৮ সালের মার্চ মাসের শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের পুঞ্জীভূত খেলাপি ঋণ কমেছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

গত পঞ্জিকা বছর ২০১৭ এর শেষে ব্যাংকগুলোতে পুঞ্জীভূত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৭৭২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। গত মার্চ শেষে এটা কমে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৮৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে পুঞ্জীভূত খেলাপি ঋণ কমেছে ৬৮৫ কোটি টাকা।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিবেদন ২০১৭-২০১৮’ তে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি পঞ্জিকা বছরের মার্চ মাস শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল) ও দুটি বিশেষায়িত ব্যাংকে মোট পুঞ্জীভূত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৮৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা। গত ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে এর পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৭৭২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর আগের পঞ্জিকা বছর ২০১৬ শেষে পুঞ্জীভূত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ৭৯০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ডিসেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের মার্চ শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল) বাণিজ্যিক ব্যাংকের পুঞ্জীভূত খেলাপি ঋণ ৫৭ কোটি টাকা বেড়েছে। অন্যদিকে দুটি বিশেষায়িত ব্যাংকে (বিকেবি ও রাকাব) পুঞ্জীভূত খেলাপি ঋণ ৭৪৩ কোটি টাকা কমেছে।

আলোচ্য সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের পুঞ্জীভূত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৪১০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ছয়টি ব্যাংকের মধ্যে চলতি পঞ্জিকা বছরের প্রথম তিন মাসে সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমেছে। যদিও টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ রয়েছে সোনালী ব্যাংকে। শতকরা হারে সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ রয়েছে বেসিক ব্যাংকে। এই ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হার ৫৭ দশমিক ১ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে বিডিবিএল। এই ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হার ৪৩ দশমিক ৬ শতাংশ। সোনালী ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হার হচ্ছে ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মার্চ শেষে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে এর পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা। এর আগের বছর ২০১৬ সালে ছিল ১০ হাজার ৯১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

খেলাপি ঋণের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বেসিক ব্যাংক। এ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৮ হাজার ৩৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৫৯৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এর আগের বছর ছিল ৭ হাজার ৩০০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।

এর পরের অবস্থানে রয়েছে জনতা ব্যাংক। এ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৭ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। এর আগের বছর ছিল ৫ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা।

অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ১১৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর আগের বছর ছিল ৬ হাজার ৮০৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

এর পরের অবস্থানে রয়েছে রূপালী ব্যাংক। এ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৪ হাজার কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ২৫০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এর আগের বছর ছিল ৩ হাজার ৪৮৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

বিডিবিএল ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৭৮৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এর আগের বছর ছিল ৭৩০ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংক দুটিতে চলতি পঞ্জিকা বছরের মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৭৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে (বিকেবি) খেলাপি ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৩ হাজার ৬০৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ২৬৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এর আগের বছর ছিল ৪ হাজার ৬৭৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

অন্যদিকে, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে (রাকাব) খেলাপি ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ১ হাজার ৯৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৫৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর আগের বছর ছিল ৯৭১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ জুন ২০১৮/হাসনাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়