ঢাকা     রোববার   ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১৪ ১৪৩১

নেশার জগতে নতুন সংযোজন ‘খাত’

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৪, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নেশার জগতে নতুন সংযোজন ‘খাত’

মাকসুদুর রহমান : নেশার জগতে নতুন সংযোজন হয়েছে আরো একটি নাম- ‘খাত’। বিদেশ থেকে আনা বিপুল পরিমাণ খাত উদ্ধারের পর এমনই তথ্য পেয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। আন্তর্জাতিক মাদক কারবারিরা বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করছে বলে কর্মকর্তারা মনে করেন।

রোববার দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘গ্রিন টি আমদানির নামে একটি চক্র ইথিওপিয়ায় তৈরি এই মাদক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার করছে। তারা বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করছে। আর গ্রেপ্তারকৃত মো. নাজিম একজন আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারী। তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিচজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

এর আগে এ মাদকের কোনো চালান পাচার হয়েছে কি না? এ প্রশ্নের জবাবে মেহেদী হাসান আরো বলেন, ‘নাজিম স্বীকার করেছে, সে একবার খাত পাচার করেছে। সে নিজে ৫ থেকে ৬ মাস ধরে এ ব্যবসা করছে। এ মাদক দেশের ভেতর সরবরাহ করা হয়েছে কি না তা তাকে রিমান্ডে নিলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সর্টিং এয়ারপোর্ট অফিসের ইএমএস শাখার অফিসে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ইথিওপিয়া থেকে বিভিন্ন দেশ ঘুরে গ্রিন টির আড়ালে ২৩টি সিনথেটিকের বড় প্যাকেটের ভেতর ২৩টি বড় কার্টুনে খাত জাতীয় মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। এ সময় মাদক পাচারকারী নাজিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে ওই রাতেই রমনা থানার শান্তিনগর প্লাজার ২য় তলার নওশিন এন্টারপ্রাইজের গোডাউন থেকে আরো ৩১টি কাগজের কার্টুনের ভিতর ৩৯৪ কেজি খাত পাওয়া যায়। সব মিলে ৮৬০ কেজি খাত দেশের ভেতর কীভাবে প্রবেশ করল তা এখন ভাবিয়ে তুলেছে কর্মকর্তাদের।

গ্রেপ্তারের পর নাজিম তথ্য দিয়েছে, ইথিওপিয়ার একজন নাগরিকের সঙ্গে তার দুবাইতে পরিচয় হয়। সেখান থেকে সে দেশে ফিরে আসলে ওই বিদেশীর সঙ্গে গ্রিন টি ঢাকায় পাঠালে তা পরে ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়াতে পাঠানোর চুক্তি হয়। সেভাবেই সে দুইবার খাতের চালান পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে। এক চালানের জন্য তাকে ১ হাজার ৫০০ ডলার দেওয়া হতো।

গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য আছে, ইথিওপিয়া থেকে গ্রিন টি আমদানির নামে বিভিন্ন কার্টুনে ‘খাত’ নামীয় মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। খাত ক্যাথিনোন গ্রুপের উদ্ভিদ। যা চিবিয়ে অথবা চায়ের মতো খাওয়া যায়। এটি ইয়াবার (মেথাএমফিটামিন) মতো স্টিমুলেন্ট ড্রাগ। গ্রিন টির লেবেল লাগিয়ে ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়াতে পাচার করা হচ্ছে খাত। মাদক পাচারকারীরা বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করছে। তবে ঢাকা বা অন্য কোনো শহরে এ মাদক সরবরাহ করা হয়েছে কি না সে বিষয়ে নজরদারি শুরু হয়েছে। এ দেশে অন্য কোনো পাচারকারী আত্মগোপনে আছে কি না তাও নাজিমের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ সেপ্টেম্বর ২০১৮/মাকসুদ/রফিক

রাইজিংবিডি.কম


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়