ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

নোয়াখালীতে প্রেমের কারণে মায়ের হাতে মেয়ে খুন

মাওলা সুজন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২০, ২৪ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নোয়াখালীতে প্রেমের কারণে মায়ের হাতে মেয়ে খুন

নোয়াখালী প্রতিনিধি : প্রেমের কারণে মায়ের হাতে প্রাণ দিল নোয়াখালীর সোনাপুর ডিগ্রি কলেজের অনার্স (সম্মান) হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তাবাছসুম তানিয়া চমক (২২)।

শনিবার জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে চাঞ্চল্যকর এই খুনের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জেলা শহর মাইজদীর পৌর বাজার সংলগ্ন জয়কৃষ্ণপুর এলাকার এনামুল হক উকিল বাড়ির শাহাজাদা এনামুল হক হিমেলের স্ত্রী ও নিহত চমকের মা সাজেদা আক্তার নিপু (৪০), মেয়ে তাসনিম তাহসিন চাঁদনী (১৯), এনামুলের শ্যালক ও সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের আব্দুল্যা মাস্টার বাড়ির আব্দুল্যা চৌধুরীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম সোহেল (৩০)।

সংবাদ সম্মেলন সূত্রে জানা যায়, অনার্সে পড়া অবস্থায় তাপস নামের এক হিন্দু সহপাঠীর সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে চমক। আর এ সম্পর্ক চলতে থাকে দিনের পর দিন। সময়ের সাথে সাথে তাদের সম্পর্ক গভীর হতে থাকে। ঘটনার পাঁচ/ছয় দিন আগে ডাক্তার দেখানোর জন্য চমকের বাবা শাহজাদা এনামুল হক হিমেলের সাথে মা সাজেদা আক্তার নিপু ঢাকায় যান। এ সময় মাইজদী পৌর বাজার সংলগ্ন জয়কৃষ্ণপুরের বাসায় শুধু চমক এবং তার ছোট বোন চাঁদনী ছিল।

পরে গত ১১ নভেম্বর রাতে ট্রেনে করে ঢাকা থেকে নিজ বাসায় ফেরেন চমকের মা নিপু। এ সময় মায়ের অনুপস্থিতিতে চমক প্রেমিক তাপসের সাথে সারাদিন ফোনে কথা নিয়ে ব্যস্ত ছিল বলে মাকে অবগত করে ছোট বোন চাঁদনী। তখন রাত সাড়ে ১০টা। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত চমককে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে নির্যাতন করেন তার মা। এর এক পর্যায়ে চমক মেঝেতে পড়ে গেলে চাঁদনীর শরীর থেকে ওড়না টেনে নিয়ে চমকের গলায় পেঁছিয়ে শ্বাসরোধ করে চমককে হত্যা করে তার মা।
 


পরে মা নিপু তার ছোট ভাই জাহিদুল ইসলাম সোহেলের সহযোগিতায় ওড়না দিয়ে টেনে ঘরের পাশের একটি ডোবার মধ্যে চমকের মৃতদেহ ফেলে দেয়।

এই ঘটনার পরের দিন ১২ নভেম্বর নিহতের মা সাজেদা আক্তার নিপু রেলস্টেশনে তাকে এগিয়ে আনতে গিয়ে চমক নিখোঁজ হয়, এ মর্মে থানায় একটি জিডি করেন। তিন দিন পর ১৫ নভেম্বর বিকেলে তাদের বাসার পাশের ডোবা থেকে চমকের গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে সুধারাম মডেল থানা পুলিশ। ওই দিন রাতে তার প্রেমিক তাপসকেও আটক করে পুলিশ। পরবর্তীকালে এ ঘটনায় নিহতের মা ও মামাকে আটক করে পুলিশ।

জেলা পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ জানান, শুক্রবার নিহত চাঁদনীর ছোট বোন তাসনিম তাহসিন চাঁদনীকে নোয়াখালী বিচারিক আদালত-২ এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শোহেব উদ্দিন খানের আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে সে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে সে ঘটনার বিবরণ দেয়।

পুলিশ সুপার আরো জানান, এ ঘটনায় নিহতের বাবা শাহজাদা এনামুল হক হিমেল বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং-২১)। আসামিদের মধ্যে চাঁদনীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মা নিপু ও মামা সোহেলের ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।




রাইজিংবিডি/নোয়াখালী/২৪ নভেম্বর ২০১৮/মাওলা সুজন/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়