ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

গণতন্ত্র রক্ষা আর উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় আ.লীগ চায় তরুণরা

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৩৮, ২ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গণতন্ত্র রক্ষা আর উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় আ.লীগ চায় তরুণরা

ফাইল ফটো

আবু বকর ইয়ামিন: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের টানা বিজয়ের বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে তরুণরা। তবে তারা বলছেন, এবার চ্যালেঞ্জ গণতন্ত্র রক্ষার। পাশাপাশি দেশে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষাও সরকারের দ্বায়বদ্ধতা।

মহাজোট সরকার গঠন ও এবারের নির্বাচন নিয়ে নানামুখী মত ব্যক্ত করেছেন তরুণ-তরুণীরা। তাদের অনেকের ভাবনা দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতার রক্ষা করতে টানা কয়েক মেয়াদে একটি সরকার থাকা উচিত। এতে সরকারের গৃহীত প্রকল্পগুলোর কাজের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। যেটি দেশের উন্নয়নের জন্য জরুরি।

অনেকের মতে, একটি সরকার দীর্ঘদিন থাকলে তার ইতিবাচক দিক যেমন আছে তেমনি কিছু নেতিবাচক দিকও উঠে আসে। যেমন সরকারি দলের লোকদের মাধ্যমে বিরোধী দলের ওপর হামলা, মামলা হয়রানি ওই দলকে অনেকটা কুক্ষিগত করে ফেলে। যেটি দেশের গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। সরকারকে সে জায়গাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তামহিদুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রের জন্য যেমন সরকার প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন একটা শক্ত বিরোধীদল। কারণ জাতীয় সংসদে যদি একটা শক্তিশালী বিরোধীদল থাকে তাহলে সরকারের ত্রুটিগুলো তুলে ধরতে পারে। ফলে সরকার ওই চাপে হলেও তাদের ভুল ত্রুটিগুলো সুধরে নিতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের সংসদে কার্যত তেমন কোনো বিরোধীদল নেই বললেই চলে। এটি দেশের উন্নয়নের জন্য অন্তরায় বলে মনে করেন তামহিদ।

মো. শওকত নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, সরকার বিগত ১০ বছরে যে উন্নয়ন করেছে সেটি বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এ সরকার অনেক প্রকল্প হাতে নিয়ে রেখেছে। এসবের সঠিক বাস্তবায়নের জন্য হলেও এ মেয়াদে আসা দরকার ছিল। তবে আমরা যখন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সরকারি দল কর্তৃক বিরোধী দল বা সাধারণ মানুষের ওপর নানামুখী নির্যাতন ও হয়রানি করার খবর পাই সেটি সত্যিই কষ্টদায়ক। সরকারের উচিত এবার এসব বিষয়গুলোকে শক্তহাতে প্রতিহত করা। গণতন্ত্র সুনিশ্চিত করা।

রেবেকা রিক্তি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, বর্তমান সরকার কয়েকটি বিষয় খুব গুরুত্ব দিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল নারীর ক্ষমতায়ন। এখন আমরা সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। যেটি আমাদের দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। কারণ কোনো দেশ গুটিকয়েকের চেষ্টায় এগুতে পারে না। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসই পারে দেশকে তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে। তবে এক্ষেত্রে সকলেকে এককাতারে শামিল করতে সরকারকে অবশ্যই সকলের স্বাধীন মত প্রকাশ, সকলের অধিকার সুনিশ্চিতে নজর দিতে হবে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. সাজাহান সাকি বলেন, আমার জীবনের প্রথম ভোটটি আমি এবার দিতে পারিনি। এটা আমার অধিকার। রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ধারা ও সুশাসন থাকলে আমি এ ভোট থেকে বঞ্চিত হতাম না। দেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন আছে। তবে শুধু উন্নয়ন করলেই হবে না। উন্নয়নের পাশাপাশি দেশে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। উন্নয়ন স্থিতিশীল করতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করতে হবে। জণগনের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খন্দকার মো. সাইফুল বলেন, সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে তাদের নানামুখী ভুল চোখে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে সরকার যদি বিরোধী দল বা জনগণের মতের ভিত্তিতে তাদের ভুল ত্রুটি সুধরে নেয় তাহলে দেশ আরো দ্রুত এগিয়ে যাবে এটা নিশ্চিত। বিভিন্ন সেক্টরে যেসব দুর্নীতি হয়েছে সেগুলোতে সঠিক তদন্ত জরুরি। সরকারি দল বা বিরোধী দল না দেখে অবশ্যই সবাইকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সবাইকে তাদের স্বাধীন মত প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। এ ছাড়া সকল নাগরিকের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করাও সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।





রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ জানুয়ারি ২০১৮/ইয়ামিন/হাসান/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়