ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আবারো বিরোধীদলীয় নেতা হচ্ছেন রওশন

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫৭, ৩ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আবারো বিরোধীদলীয় নেতা হচ্ছেন রওশন

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন : আবারো বিরোধীদলীয় নেতা হচ্ছেন জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। তিনি যদি হতে না চান সেক্ষেত্রে তার সম্মতিতে এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের হতে পারেন। মহাজোটের শীর্ষ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বর্তমান বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের ওপরই এই সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে।

জানা গেছে, শারিরীকভাবে অসুস্থ বয়োবৃদ্ধ এইচ এম এরশাদও এই বয়সে বিরোধীদলীয় নেতা হতে চান। কিন্তু মহাজোট প্রধান শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসেবে রওশন এরশাদকেই শেষ পর্যন্ত নেতা হিসেবে একাদশ সংসদে দেখা যাবে- এমনটাই জানিয়েছেন দলটির নীতি নির্ধারণী সূত্র।

দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম জানান, জাতীয় পার্টির নেতারা চান সরকারে থাকতে। কারণ, সবাইতো মহাজোটের হয়ে নির্বাচিত। রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুরা যদি মহাজোটে নির্বাচিত হয়ে সরকারে থাকতে পারে তাহলে জাতীয় পার্টি পারবে না কেন। তারপরও বৃহত্তর স্বার্থে যদি বিরোধীদলের দায়িত্ব পালন করতে হয়, জাতীয় পার্টি একাদশ সংসদে বিরোধীদল হবে। তবে সবকিছুই মহাজোট নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এখতিয়ার।

জানা গেছে, পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অসুস্থ। এ অবস্থায় তার বিরোধীদলের নেতা হওয়ার সুযোগ নাই। তারপরও দলের একটি অংশ চাচ্ছেন রওশন নয়, শেষ বয়সে এরশাদই হোক বিরোধীদলীয় নেতা। তারা রওশনের বিরুদ্ধে এরশাদের কান ভারী করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। কারণ, রওশনকে দিয়ে এসব নেতা স্বার্থ হাসিল করতে পারেন না। এরশাদ হলে সবকিছুর জন্য সুবিধা হবে। তাকে ভুল বুঝিয়ে যেকোনো কিছু করা যায়। সামনে সংরক্ষিত মহিলা আসনে এমপি নির্বাচনের বিষয়টিও তাদের মাথায় আছে। এ নিয়ে এখন থেকে অনেকেই তদবির করছেন এরশাদের কাছে। বিতর্কিতদের সংরক্ষিত আসনে যাতে এমপি করা যায় তার জন্য জোর তদবিরে নেমেছেন তারা। সবকিছু হিসাব করে দলের এসব নেতা রওশনের পরিবর্তে এরশাদকে অসুস্থ অবস্থায় বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দেখতে চান। দলের ওই অংশের নেতা-কর্মীরা ইতিমধ্যে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রওশনের পরিবর্তে এরশাদকে নেতা করার দাবি তুলেছেন।

তবে ভিন্নমত পোষণ করে প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সল চিশতী জানান, যদি জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধীদল হয়, এক্ষেত্রে পার্টির চেয়ারম্যানের সম্মতিতেই আবারো দলের জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদই বিরোধীদলীয় নেতা হবেন। দশম সংসদে তার গঠনমূলক ভূমিকা দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। দেশবাসীর কাছেও তিনি গ্রহণযোগ্য হয়েছেন। একদিকে তিনি সরকারের ভাল কাজে সমর্থন দিয়েছেন, অন্যদিকে জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকাণ্ডে সরকারের বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখেছেন।’

ফাইল ছোঁড়াছুড়ি, অশালীন মন্তব্য, গালি-গালাজের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির ইতিবাচক ভূমিকায় সংসদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

একাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ শরিকদলগুলোর নিরঙ্কুশ বিজয় হয়েছে, তাতে বিএনপি ঐক্যফ্রন্টের মাত্র ৭ জন নির্বাচিত হয়েছেন। তারা এখনো শপথ নেননি। এরশাদের জাতীয় পার্টি বিরোধীদল হচ্ছে ইতিমধ্যে মহাজোটের শীর্ষনেতারাও ইঙ্গিত দিয়েছেন। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাও বলেছেন, জাতীয় পার্টির বিরোধীদল হতে সমস্যা নেই। তবে সবকিছু ঠিক হবে মহাজোটের সঙ্গে আলাপ আলোচনার পর। সবকিছু মিলিয়ে একাদশ সংসদে দলগত ২২ আসন নিয়ে জাতীয় পার্টি হতে যাচ্ছে বিরোধীদল।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ জানুয়ারি ২০১৯/নঈমুদ্দীন/সাইফ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়