ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

এলসির অর্থ পরিশোধ না করায় বিপাকে বিপিসি

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০২, ৩ মার্চ ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এলসির অর্থ পরিশোধ না করায় বিপাকে বিপিসি

কেএমএ হাসনাত : এলসির অর্থ সময়মতো পরিশোধ না করায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বেকায়দায় পড়েছে। তাদের অভিযোগ, সোনালী ব্যাংক সময়মতো এলসির অর্থ পরিশোধ করেনি, এজন্য তাদের ওপর একটি বিদেশী তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিলম্ব চার্জ আরোপ করেছে। যার পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার মার্কিন ডলার। এ বিষয়ে বিপিসির পক্ষ হয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।

বিপিসির পক্ষ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, এই চার্জ পরিশোধ না করা হলে দেশে জ্বালানি তেলের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ বিঘ্নিত এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তেল সরবরাহ প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিপিসি তথা দেশের ইমেজ ক্ষুণ্ন হবে।

বিপিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ জ্বালানি তেলের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি তেল আমদানি করা হয়। রাষ্ট্রীয় এই দায়িত্ব পালনে সোনালী ব্যাংক বিপিসিকে জ্বালানি তেল আমদানিতে সহযোগিতা করে আসছে।

বিপিসির চাহিদা অনুযায়ী সোনালী ব্যাংক কর্তৃক ২০১৮ সালের মে মাস থেকে একই বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতের ‘নুমালিগর রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) থেকে রেল ওয়াগনের মাধ্যমে পার্বতীপুর ডিপোতে আমদানিকৃত রিফাইন্ড অয়েলের ২২টি এলসি খোলা হয়। বিপিসি কর্তৃক যথাসময়ে বর্ণিত এলসির বিপরীতে সমপরিমাণ অর্থ সোনালী ব্যাংক লিমিটেডকে পরিশোধ করে। কিন্তু সোনালী ব্যাংক এই এলসির অর্থ সময়মতো পরিশোধ করেনি।

বিপিসির অভিযোগ, ২২টি এলসির মধ্যে সোনালী ব্যাংক ২০টি এলসির অর্থ সময়মতো পরিশোধ করেনি। এজন্য এনআরএল ১৯ হাজার ৮৩৬ মার্কিন ডলার বিলম্ব চার্জ দাবি করে বলে, বিলম্বিত চার্জ দেওয়া না হলে চুক্তিমতে পরে জ্বালানি তেল তারা সরবরাহ করবে না। বিপিসির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করে।

বিপিসির অনুরোধের পর সম্প্রতি জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে একটি ডিও পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, বিলম্ব চার্জ পরিশোধ ব্যর্থ হওয়ার কারণে এনআরএল জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে অনিহা প্রকাশ করেছে। এই কোম্পানি জ্বালানি তেল সরবরাহ না করলে সারা দেশে জ্বালানি তেলের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থায় এনআরএল-ভারতের দাবিকৃত বিলম্বজনিত চার্জ বাবদ ১৯ হাজার ৮৩৬ মার্কিন ডলার জরুরি ভিত্তিতে পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

জানা গেছে, বিপিসির কাছে সোনালী ব্যাংক তেলের এলসি খোলা বাবদ প্রচুর অর্থ বকেয়া রয়েছে। এই বকেয়া অর্থ বছরের পর বছর বিপিসি পরিশোধ করছে না। তাই সোনালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিপিসির এলসির অর্থ সময়মতো পরিশোধ করা সম্ভব হয় না।

এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এলসির অর্থ পরিশোধ করার জন্য আমরা সোনালী ব্যাংককে বলব। পাশাপাশি বিপিসিকে বলব, সোনালী ব্যাংকের কাছে যদি তাদের কোনো বকেয়া থাকে তা যেন দ্রুত পরিশোধ করে। কারণ, কয়েক বছর ধরে বিপিসি তেল বিক্রি করে মুনাফা করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে কম দামে তেল কিনে বিপিসি দেশে তা বেশি দামে বিক্রি করছে। এতে তাদের ভালো মুনাফাও হচ্ছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ মার্চ ২০১৯/হাসনাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়