ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পরিবহনে ঈদ বোনাস নিয়ে বিড়ম্বনা

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৯, ১৫ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পরিবহনে ঈদ বোনাস নিয়ে বিড়ম্বনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদ বোনাসের নামে রাজধানীর বিভিন্ন পরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। লোকাল বাস থেকে শুরু করে সিটিং সার্ভিস ও লেগুনা, এমনকি রিকশায়ও যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, তাদেরকে জিম্মি করে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বাড়তি টাকা আদায় করছেন। ঈদ বোনাসের বিড়ম্বনায় তার অতিষ্ঠ।

ঢাকার বিভিন্ন রুটের বাসযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সব রুটে কমপক্ষে ৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। বাড়তি ভাড়া দিতে যাত্রীরা অসম্মতি জানালেও বাস কন্ডাকটরদের চাপের মুখে তারা তা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেক সময় তারা জোর করে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন। ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

প্রতিবছর ঈদের মতো ধর্মীয় উৎসবে সরকার, পরিবহন সংস্থা ও বেসরকারি যাত্রী কল্যাণ সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া বন্ধের মৌখিক ঘোষণা আসে। তবে ঘোষণার বাস্তবায়ন দেখা যায় না। প্রতিবারের মতো এবারও ঘোষণা থাকলেও পরিবহনে নৈরাজ্য থেমে নেই বলে সবার অভিযোগ।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, তাদের পরিবার নিয়ে ঈদ করতে ঈদ বোনাস নেওয়া হচ্ছে।

তবে বাস মালিকদের কাছ থেকে না নিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে কেন? জানতে চাইলে বেশিরভাগ পরিবহন শ্রমিক এর কোনো জবাব দেননি। কেউ কেউ বলেছেন, পরিবহন মালিকরা তাদের এ বিষয়ে কোনো খোঁজ রাখেন না। শুধু রাতের বেলায় গাড়ির জমার টাকা নিতে চাপ দিতে থাকে।

শুক্রবার দুপুরে ওয়েলকাম পরিবহনের যাত্রী তুহিন মৃধা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘তিনি গাবতলী থেকে গুলিস্তান এসেছেন। এই দূরত্বের ভাড়া ৩০ টাকা। অথচ তার কাছ থেকে ৫০ টাকা রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, ভাড়া দেওয়ার সময় আমি কন্ডাকটরকে ১০০ টাকার নোট দেই। টাকা ফেরত দেওয়ার সময় সে আমাকে ৫০ টাকা ফেরত দেয়। ২০ টাকা বেশি কেন রাখল, জানতে চাইলে সে বলে, ঈদ বোনাস।

মালিবাগ রেলওয়ে ক্রসিংয়ে আব্দুল্লাহ নামে লাব্বাইক পরিবহনের এক যাত্রী জানান, তিনি যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ থেকে এখানে এসেছেন। নিয়মিত ভাড়া ২৫ টাকা হলেও তিনি আজ ৪০ টাকায় এখানে এসেছেন।

তিনি বলেন, টাকা আরো বেশি চেয়েছিল। অনেক বাকবিতণ্ডা করে ৪০ টাকা দিয়ে এসেছি।

সোহান নামের একজন বলেন, গোলাপবাগ থেকে মুগদার ভাড়া হিসেবে ১০ টাকা দিয়েছি। বোনাস চেয়েছিল, দেইনি। এজন্য আমার সঙ্গে তারা খারাপ আচরণ শুরু করে দিল। তবে আমি বাড়তি ভাড়া দেইনি।

সোহান বলেন, আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। নুন আনতে পানতা ফুরায়। আমাদের কাছ থেকে ওরা কেন বোনাস চাবে? আর আমাদের কে বোনাস দেয়?

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী রাইজিংবিডিকে বলেন, নগর পরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য নিয়মে পরিণত হয়েছে। তার ওপর পরিবহন শ্রমিকরা প্রতিবছর ঈদের সময় যাত্রীদের জিম্মি করে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করে। এ বিষয়ে দেখার যেন কেউ নেই।

এ ব্যাপারে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ জুন ২০১৮/আসাদ/নূর/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়