ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

পর্যটকদের দৃষ্টি কেড়েছে বরিশালের গুঠিয়া মসজিদ

খায়রুল বাশার আশিক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৩, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পর্যটকদের দৃষ্টি কেড়েছে বরিশালের গুঠিয়া মসজিদ

খায়রুল বাশার আশিক : বরিশাল থেকে বানারীপাড়া বা নেছারাবাদ স্বরূপকাঠি যেতে সড়কের পাশেই চোখে পড়ে একটি সুসজ্জিত মসজিদ কম্পাউন্ড। বায়তুল আমান জামে মসজিদ নামের এই মসজিদটি স্থানীয়দের কাছে গুঠিয়া মসজিদ বা সান্টুর মসজিদ নামেও পরিচিত। বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলাধীন গুঠিয়া ইউনিয়নের জাংগুরিয়া গ্রামের এই মসজিদটি বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ মসজিদ বলে বিবেচিত।

দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ শুধুমাত্র মুসলিম উম্মাহের নামাজ আদায়ের স্থান, এমনটি নয়। বরং সকল ধর্ম ও শ্রেণী পেশার মানুষের কাছেই একটি দর্শনীয় স্থান। এই মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন শত শত পর্যটক আসে দূর-দূরান্ত থেকে।

বরিশাল সদর (নথুল্লাবাদ) থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত গুঠিয়া মসজিদ। মসজিদের পাশাপাশি এখানে রয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন মাদ্রাসা ও এতিমখানা ভবন। সবুজ ফলজ হরেক গাছে ঘেরা মসজিদ এরিয়া। হেলিপ্যাড, টলটলে পানির পুকুরে শান বাঁধানো ঘাট, ফুলের বাগান, চারা গাছের নার্সারি, গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা, ঈদগাহ্, অসহায়-গরীবদের জন্য কবরের ব্যবস্থা, মসজিদের সামনেই পানির ফোয়ারা সহ  অনেক কিছু দিয়ে সুন্দর ও সজ্জিত করা হয়েছে এই মসজিদের প্রাঙ্গণ।

১৪ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত এই মসজিদ। মসজিদ স্থলের সীমানা হিসেবে ইট পাথরের কোনো দেয়াল নির্মাণ করা হয়নি, বরং পানির লেক বেষ্টিত করা হয়েছে। মসজিদটির প্রধান মিনারের উচ্চতা ১৯৩ ফুট। মসজিদের স্তম্ভটি নির্মাণে বিশ্বের কিছু পবিত্র স্থানের মাটি ও জমজম কুপের পানি ব্যবহার করা হয়েছে। মাটি সংগ্রহ করা হয়েছে কাবা শরীফ, আরাফাত ময়দান, মুজদালিফা ময়দান, জাবালে নূর পাহাড়, জাবালে সূর পাহাড়, জাবালে রহমত পাহাড়, নবীজীর জন্মস্থান, মা হাওয়া’র কবরস্থান, মসজিদে রহমত, মসজিদে কুবা, ওহুদের যুদ্ধের ময়দান, হযরত হামজা (রা.) এর মাজার, মসজিদে আল কিবলাতাইন, মসজিদে নববী সহ মুসলিম উম্মার ভক্তিবাদ ও ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু স্থান থেকে।



বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও শিক্ষানুরাগী আলহাজ্ব এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু এই মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা। মসজিদ নির্মাণের সকল ব্যয় ভার বহন করেছেন তিনি। তার নিজ বাসভবনের সন্নিকটে নিজ জমিতেই গড়ে তুলেছেন এই মসজিদ। ২০০৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হলেও শেষ হয় ২০০৬ সালে। কাজ শুরু থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পাদন ও শেষ করার দায়িত্বে ছিলেন এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুর ছোট ভাই আমিনুল ইসলাম।

সন্ধ্যার পরক্ষণে অর্থাৎ গোধূলিলগ্নে এই মসজিদটি দেখতে এতটাই মনোমুগ্ধকর যা বলে ভাষায় বুঝানো যাবে না। পরিকল্পিত ও রুচিশীল লাইটিং ব্যবস্থা গোধূলিলগ্নে মসজিদটিকে সাজিয়ে তোলে শতগুণ।

মসজিদটির ভেতরে প্রায় দেড় হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। বাইরের অংশে আরো ৫ হাজার। পুরুষের পাশাপাশি মহিলাদের জন্যও নামাজের আলাদা জায়গা রয়েছে এই মসজিদে। ৮ গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে উন্নমানের কাঁচ, মূল্যবান মার্বেল পাথর, গ্রানাইট ও সিরামিক। ২০ হাজার মানুষ অধিক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ঈদগাহ্ ময়দান রয়েছে এখানে।

২০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে বরিশালের গুঠিয়ার মাটিতে এই মসজিদটি নির্মাণ করতে, যা আজ দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে খুব পছন্দের একটি মসজিদ ও দর্শনীয় স্থান।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ ডিসেম্বর ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়