ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পুড়ে যাওয়া ক্ষত সারাবে মাছের ত্বক!

স্বপ্নীল মাহফুজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ২৯ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পুড়ে যাওয়া ক্ষত সারাবে মাছের ত্বক!

স্বপ্নীল মাহফুজ : ব্রাজিলের চিকিৎসকবৃন্দ পুড়ে যাওয়া ত্বকের চিকিৎসায় পরীক্ষামূলকভাবে তেলাপিয়া মাছের ত্বক এর ব্যবহার শুরু করেছেন।

সাধারণত পুড়ে যাওয়া ত্বকের জন্য শুকর এবং মানুষের ত্বকের টিস্যু ব্যবহার করা হয়। যা রোগীর ত্বকের পুড়ে যাওয়া অংশে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু ব্রাজিলের ফোর্তালেজায় এই টিস্যুগুলো সহজে পাওয়া যায় না। এই অপ্রাপ্যতার জন্যই জোসে ফোরটা ইনস্টিটিউটের গবেষকরা তেলাপিয়া মাছের ত্বককে বিকল্প হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করেন।

 


সাধারণত দুই এবং তিন ডিগ্রি বার্ন অনেক যন্ত্রণাদায়ক এমনকি কোনো কোনো সময়ে এটা মানুষকে মৃত্যুর মুখেও ঠেলে দেয়। এটা নির্ভর করে তা শরীরের ওপর কতটা প্রভাব ফেলেছে। এসব ক্ষেত্রে চামড়া প্রতিস্থাপন দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে। কিন্তু জোসে ফোরটা ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের হাতে এমন সুযোগ ছিল না বললেই চলে, তাই তাদের ভরসা করতে হতো শুধু বার্ন ক্রিম এবং গজ এর ওপর। অথচ এই প্রক্রিয়াটি যথেষ্ট বেদনাদায়ক। তাই গবেষক দল বিকল্প খুঁজছিলেন। এই জন্য তারা তেলাপিয়া মাছের ত্বক নিয়ে গবেষণা করা শুরু করেন। আর গবেষণায় তারা এক অদ্ভুত ফলাফল লক্ষ্য করেন।



গবেষকরা তেলাপিয়া মাছের ত্বকে প্রোটিন কোলাজেন এর টাইপ ১ এবং ৩ এর পরিমাণ প্রচুর পরিমানে লক্ষ্য করেছেন। যা কিনা মানুষ কিংবা অন্য প্রাণীর ত্বকের থেকে বেশি। আর তেলাপিয়া মাছও প্রচুর পরিমানে ব্রাজিলের নদীতে ও মাছের খামারে পাওয়া যায়।

বাস্তব ক্ষেত্রে ব্যবহার করে আরো ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, তেলাপিয়া মাছের ত্বক ব্যবহারের পর অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর যন্ত্রণা আরো কমে যাচ্ছে। গাড়ির মেকানিক আন্টোনিও জানিও তার হাত পুড়ে যাওয়ার পর তেলাপিয়া মাছের ত্বকের চিকিৎসা নেন। তিনি জানান, এটা ব্যবহারের পরে তিনি অনেক কম যন্ত্রণা অনুভব করেছেন। এমনকি তার কোনো ওষুধ ও প্রয়োজন হয়নি।

 


তেলাপিয়ার ত্বক পুনস্থাপনে খরচ অনেক কম। বরং অন্যান্য ব্যবস্থা থেকে এটার খরচা প্রায় ৭৫ শতাংশ কম। আর এই ত্বক রেফ্রিজারেশন এর মাধ্যমে প্রায় ২ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। ইতিমধ্যে প্রায় ৫৬ জন মানুষ এই চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন এবং সেখানেও আশাতীত ফল পাওয়া গেছে।

গবেষকরা জানান, তারা রোগীর কল্যাণের জন্যই এমনটা আবিষ্কার করেছেন। আশা করা যায় এটা বিশ্বব্যাপী ব্যবহার হলে অগ্নিদগ্ধ রোগীদের জন্য অনেক উপকার হবে।

তথ্যসূত্র : বিজনেস ইনসাইডার

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ মে ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়