ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

খালেদা দেরিতে আদালতে আসায় বিচারক অসন্তুষ্ট

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ১০ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খালেদা দেরিতে আদালতে আসায় বিচারক অসন্তুষ্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বুধবার আদালতে হাজিরা দিতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেরি হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারক।

পুরান ঢাকার বকশিবাজারস্থ কারা অধিদপ্তরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আকতারুজ্জামান এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

দেরিতে আসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের ভর্ৎসনা করছেন আদালত। আজ বুধবার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান দেরিতে আসার জন্য খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে তার আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করেন। এ সময় তিনি আট দিন ধরে চলতে থাকা যুক্তিতর্ক শেষ করতে বললে হইচই শুরু করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

এ দিন বেলা ১১টা ৫৩ মিনিটে আদালতে হাজির হন খালেদা জিয়া। দুপুর ১২টায় বিচারক এজলাসে বসেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তিতর্ক শুরু করেন তার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। এ সময় বিচারক বলেন, আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা সকাল সাড়ে ৯টায়। আপনারা ১২টার সময় কেন এলেন? আপনারা আসেন না আসেন, এরপর থেকে আমি সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু কর। এ সময় বিএনপির আইনজীবীদের সঙ্গে বিচারকের বাককিতণ্ডা হয়।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বিচারককে বলেন, রাস্তায় যানজট ছিল। তাই ম্যাডামের আসতে দেরি হয়েছে। তখন বিচারক খালেদার আইনজীবীকে বলেন, আপনারা তো সাড়ে ৯টায় আদালতে এসেছেন। উনার আসতে এত দেরি হয় কেন?

এর জবাবে মোহাম্মদ আলী বলেন, এটা সামরিক আদালত নয় যে সঠিক সময় আদালতে হাজির হতে হবে।

এ জে মোহাম্মদ আলীর উদ্দেশে বিচারক বলেন, তিনি অষ্টম দিনের মতো যুক্তিতর্ক শুনছেন। এর আগে খালেদা জিয়ার অপর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুর রেজাক খান বিস্তারিত বলেছেন। আজই আপনারা শেষ করবেন। আদালত এটা বলার সঙ্গে সঙ্গে এজলাসে উপস্থিত বিএনপির আইনজীবীরা হইচই শুরু করেন।

এ সময় বিচারক বলেন, আপনারা হইচই করলে আমি আদালতের কার্যক্রম মূলতবি করব।

তখন খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজাক খান বলেন, আমরা চেষ্টা করছি, মামলার প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে যুক্তিতর্ক তুলে ধরতে। যতক্ষণ প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে আমাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ না হচ্ছে, ততক্ষণ অনুগ্রহ করে আমাদের সময় দেবেন। এরপরই পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এরপর মোহাম্মদ আলী আদালতের উদ্দেশে বলেন, আপনি আমাদের কেন সময় বেঁধে দিচ্ছেন? আমি তো জাল নথিপত্র তৈরি করে মামলাটি করা হয়েছে বলে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছি। জাল নথিপত্র তৈরি করা অপরাধ।

এরপর মামলায় অষ্টম দিনের মতো যুক্তিতর্ক শুনানি শুরু হয়।

এর আগে গত ২০, ২১, ২৬, ২৭, ২৮ ডিসেম্বর এবং ৩ ও ৪ জানুয়ারি অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন তার আইনজীবীরা। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে খালেদা জিয়া ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রাক্তন সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, প্রাক্তন এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানের ৭ বছরের কারাদণ্ড দাবি করেন।

এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ জানুয়ারি ২০১৮/মামুন খান/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়