ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

পোকায় খাচ্ছে সরকারি গুদামের ৯৭ কোটি টাকার গম!

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫১, ৮ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পোকায় খাচ্ছে সরকারি গুদামের ৯৭ কোটি টাকার গম!

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা : পোকায় খাচ্ছে খুলনার সরকারি খাদ্য গুদামের গম। ফলে মানুষের খাদ্যের অনুপযোগী হচ্ছে এসব গম।

নগর ও জেলার ১০টি সরকারি খাদ্য গুদামে রক্ষিত ৩৪ হাজার মেট্রিক টন গমেই পোকার আক্রমণ হয়েছে। গুদামে মজুদকৃত গমের বাজার মূল্য ৯৬ কোটি ৭৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি গমের খুচরা মূল্য ২৮ টাকা।

এদিকে, পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রতি মাসে কীটনাশক ব্যবহার করা হলেও প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। আগামী দুই/তিন মাসের মধ্যে মজুদকৃত গম খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়বে। গম বিতরণের কোনো খাত খুঁজে পাচ্ছে না খাদ্য অধিদপ্তর।

গত ছয় মাস ধরে প্রতি মাসে জেলা খাদ্য অফিস এমন তথ্য খাদ্য অধিদপ্তরকে অবহিত করছে। কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদাম ও উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকেও প্রতি মাসে এমন তথ্য জানানো হচ্ছে জেলা খাদ্য অফিসকে। কিন্তু কোনো প্রতিকার মিলছে না। মজুদকৃত এ গম গত বছর রাশিয়া থেকে আমদানি করা হয়।

মহেশ্বরপাশা কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদামের ব্যবস্থাপক শেখ আনোয়ারুল করিম জানান, খাদ্য অধিদপ্তরের নির্দেশ না থাকায় মজুদকৃত গম বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। মজুদকৃত গম গত বছর রাশিয়া থেকে আমদানি করা হয়। মজুদকৃত গমে পোকার আক্রমণের বিষয়টি জেলা খাদ্য অফিসকে প্রতি মাসে জানানো হচ্ছে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন জানান, সরকারি কোনো নির্দেশনা না থাকায় এবং কোনো খাত খুঁজে না পাওয়ায় মজুদকৃত গম বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ওএমএসের মাধ্যমে প্রতি মাসে ১ হাজার মেট্রিক টন এবং বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে ৬৭৫ মেট্রিক টন গম বিতরণ করা হচ্ছে। ৭৮ জন ডিলার প্রতিদিন ১ মেট্রিক টন আটা বিক্রি করতে পারে না। দীর্ঘ দিন মজুদ থাকায় গমে পোকার আক্রমণ হয়েছে। জেলার ১০ গুদামে ৩৪ হাজার ৫৬৯ মেট্রিক টন আমদানিকৃত গম মজুদ রয়েছে।

খাদ্য অধিদপ্তরে পাঠানো জেলা খাদ্য অফিসের তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের শেষ দিকে মোংলা বন্দরের মাধ্যমে ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম খুলনার ১০ গুদামে মজুদ করা হয়। ইতোমধ্যে  সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, আনসার, ফায়ার ব্রিগেড, জেলখানায় ৬ হাজার মেট্রিক টন গম বিতরণ করা হয়েছে। ১০ গুদামে রোববার পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৫৫৯ মেট্রিক টন গম মজুদ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি মজুদ বয়রাস্থ খুলনা কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদামে। এখানে ১৬ হাজার মেট্রিক টন গম এবং মহেশ্বরপাশা কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদামে ১২ হাজার মেট্রিক টন গম মজুদ রয়েছে। বাকি গম উপজেলা পর্যায়ের আট গুদামে মজুদ রয়েছে।

জেলা খাদ্য অফিসের সূত্র জানান, রাশিয়া থেকে আমদানি করা লাল রংয়ের গমকে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রিমিথাইল ও এগ্রিফস নামের কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে।



রাইজিংবিডি/খুলনা/৮ অক্টোবর ২০১৮/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়