ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

কেপলার ফিরে এসেছে!

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:৫৩, ১৪ এপ্রিল ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কেপলার ফিরে এসেছে!

কেপলার টেলিস্কোপ

মনিরুল হক ফিরোজ : মহাকাশে বাসযোগ্য গ্রহ অনুসন্ধানের কাজে নিয়োজিত নাসার টেলিস্কোপ কেপলার। সম্প্রতি এই টেলিস্কোপটি নাসার বিজ্ঞানীদের উৎকন্ঠা ও দুশ্চিন্তায় রেখেছিল। কারণ অতি গুরুত্বপূর্ণ এই টেলিস্কোপটি মহাকাশে তার অবস্থান থেকে সরে গিয়ে পৃথিবী থেকে ৭৫ মিলিয়ন মাইল দূরে ‘ইমার্জেন্সি মোডে’ চলে গিয়েছিল।

 

গত ৭ এপ্রিল ছায়াপথে ‘ক্যাম্পেইন নাইন মিশন’ শুরুর সময়ে ক্যাপলার টেলিস্কোপটি তার অবস্থান থেকে দূরে চলে গিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ইমার্জেন্সি মোডে চলে যায়। ইমার্জেন্সি মোড হচ্ছে, ‘সর্বনিম্ন কর্মক্ষম অবস্থা’।

 

বহু দূরে চলে যাওয়ায় পৃথিবীতে থেকে আলোর গতিবেগে সিগন্যাল যাওয়া আসা করার পরও কেপলারের কাছে বার্তা পাঠাতে ও প্রতি বার্তা পেতে সময় লাগতো প্রায় ১৩ মিনিট। কিন্তু সেই সিগন্যালও ঠিকঠাক কাজ করেনি। ফলে সম্ভাব্য সমাধানই নিয়ে ভাবতে ভাবতে দিশাহারা হয়ে পড়ছিলেন নাসার বিজ্ঞানীরা। এমন দূরত্বে থাকা টেলিস্কোপটি মেরামত করা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করা হচ্ছিল। উদ্বেগের মাত্রায় যোগ হয়েছিল তার কোনোদিন না ফিরে আসার শঙ্কাও।

 

কিন্তু হাল ছাড়েনি বিজ্ঞানীলা। ফলস্বরুপ কেপলার নিয়ে বিজ্ঞানীদের প্রায় এক সপ্তাহের উৎকন্ঠা ও দুশ্চিন্তা পরিণত হয়েছে সাফল্যের অপরিসীম আনন্দ ও সীমাহীন খুশিতে! আসলেই তাই।

 

প্রায় এক সপ্তাহের নিরন্তর চেষ্টার পর অবশেষে টেলিস্কোপটির সঙ্গে সংযোগ তৈরি করতে সফল হয়েছেন নাসার গবেষকরা। একই সঙ্গে ইমার্জেন্সি মোড থেকে বের করে আনতেও সক্ষম হয়েছেন।

 

 

এ প্রসঙ্গে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার কেপলার মিশনের গবেষকরা এক টুইটার বার্তায় বলেন, ‘এটা কেপলার এবং দলের জন্য একটা দীর্ঘ ছুটি ছিল, কিন্তু মহাকাশ যানটি উদ্ধার করা হয়েছে!’

 

২০০৯ সালে নাসা কেপলার টেলিস্কোপটি পাঠানোর পর থেকে এটি ব্যস্ত সময় পার করছে। ছায়াপথগুলোর মধ্যে কোথাও কোনো গ্রহে প্রাণের সম্ভাবনা থাকতে পারে কি না, সেই দুরূহ সন্ধানের কাজটিই করে এটি। ২০১২ সালের মধ্যেই কেপলার তার প্রাথমিক লক্ষ্যপূরণ করে ফেলে। আবিস্কার করে ফেলে সৌরজগতের বাইরে থাকা প্রায় পাঁচ হাজার গ্রহ। এর মধ্যে এক হাজার ৭০০ গ্রহের অস্তিত্বের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কেপলার-এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন, সৌরজগতের বাইরে নক্ষত্রপুঞ্জে পৃথিবীর মতই এক ছোট গ্রহ রয়েছে।

 

নাসার পক্ষ থেকে কেপলারের স্বমহিমায় ফেরাকে স্বাগত জানানো হয়েছে। এ জন্য সাহায্যের হাত প্রসারিত করার জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে নাসারই একটি অংশ, ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ককে। পাশাপাশি অন্যান্য মিশনের গবেষকরা যেভাবে নিজেদের কাজ ফেলে রেখে আগে কেপলারকে ইমার্জেন্সি মোড থেকে বের করে আনার কাজে হাত লাগিয়েছিল, তার জন্যও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে নাসা।

 

উল্লেখ্য, ২০১২ সালেও একবার বিপদে পড়েছিল কেপলার। ভারসাম্য রক্ষার্থে যে চারটি চাকা আছে, তার একটি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তবে সে যাত্রায়ও কেপলারকে বাঁচাতে পেরেছিলেন বিজ্ঞানীরা।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ এপ্রিল ২০১৬/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়