জয়ের বিশ্বাস ছিল আরিফুলের
খুলনাকে জিতিয়ে আরিফুলের ভোঁ দৌড়
ক্রীড়া প্রতিবেদক : রাজশাহীর বিপক্ষে খুলনার জয় পেতে ১৮ বলে প্রয়োজন ৩৬ রান। ক্রিকইনফোর স্কোরার লিখলেন, ‘কঠিন কাজ।’ তিন ওভার পর একই স্কোরার লিখলেন, ‘অবিশ্বাস্য এক জয়। দারুণ ফিনিশ আরিফুলের। ও শুধু ম্যাচটি পরিবর্তন করেনি, সম্ভবত টুর্নামেন্টে খুলনার অবস্থানই পরিবর্তন করে দিল।’ আরিফুলের ১৯ বলে ৪৩ রানের ইনিংসে ২ উইকেটে জয় পায় খুলনা।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা এমনই। কখন মোমেন্টাম পরিবর্তন হয়ে যায়, তা কেউ ধারণা করতে পারে না। খুলনার প্রথম সারির ব্যাটসম্যানদের সাজঘরে পাঠিয়ে জয়ের মোমেন্টাম পেয়ে গিয়েছিল রাজশাহী। ১৮ বলে ৩৬ রান। হাতে মাত্র ২ উইকেটে। সেট ব্যাটসম্যানও নেই। সেখান থেকে ম্যাচ হেরে বসে তারা।
বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানের তকমা পাওয়া আরিফুল দলের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে একাই করেন ৩৫ রান। বাকি ১ রান আসে ওয়াইড থেকে। জুনায়েদ খানকে দর্শক বানিয়ে নিজের বুদ্ধিমত্তায় এবং অসাধারণ ব্যাটিংয়ে খুলনাকে চতুর্থ জয়ের স্বাদ দেন আরিফুল।
শেষ ৬ বলে ৯ রানের লক্ষ্যে আরিফুল ছিলেন নির্ভীক। ডোয়াইন স্মিথকে সামলাতে কোনো বেগ পেতে হয়নি। প্রথম বলে ছয়, পরের বলে চার মেরে ৪ বল আগেই জয় নিশ্চিত করেন আরিফুল। ম্যাচসেরার পুরস্কার পাওয়া আরিফুল জানালেন ম্যাচ জয়ের গল্প, ‘আমার বিশ্বাস ছিল যে আমি শেষ পর্যন্ত থাকতে পারলে আমরা জিতব। আমার আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি বিগ শট নিচ্ছিলাম। ফিল্ডার বাইরে ছিল। শট ঠিকমতো না হলেও দুই রান নেওয়ার পর্যাপ্ত সুযোগ ছিল। শেষ ওভারে লক্ষ্য ছিল ছক্কা মারব অথবা দুই-দুই করে রান নিব।’
১৮তম ওভারে আরিফুল আদায় করেন ১৮ রান। পরের ওভারে ৯ ও এবং শেষ ওভারে ১০। ব্যাটিংয়ে নিজের পরিকল্পনা নিয়ে আরিফুল বলেন, ‘হোসেন আলীর ওভারটিই (১৮তম) টার্গেট করেছিলাম। হোসেন চেষ্টা করছিল ব্লকে বল করার। আমার লক্ষ্য ছিল মারব। হয় বড় শট খেলব, নয়তো দুই নেব। এটায় সফল হয়ে গেছি।’
ইনটেনসিটি বেশি থাকায় টি-টোয়েন্টি আরিফুলের প্রিয় ফরম্যাট। পছন্দের ফরম্যাটে আরিফুলের সাবলীল ব্যাটিংয়ের পেছনে রয়েছে কিংবদন্তি ক্রিকেটারের হাত। তিনি খুলনার কোচ মাহেলা জয়াবর্ধনের। আরিফুল বেশ কৃতজ্ঞতা নিয়েই বললেন তার কথা, ‘আগে আমার ব্যালান্সে সমস্যা ছিল। এবার মাহেলা আমার ব্যালান্স নিয়ে কাজ করেছে। আমার বডিওয়েট হয়তো পেছনে যেত মারার সময়। এবার সেই জিনিসটি নিয়ে কাজ করেছে মাহেলা। সেটায় উপকার হয়েছে।’
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সমর্থনের কথা বলতে ভুলেননি ২৫ বছর বয়সি এ ক্রিকেটার, ‘রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) ভাই অনেক সমর্থন দিচ্ছেন। বলেছেন যে, ‘‘শেষ মৌসুমে অনেক খেলা শেষ করে এসেছিস। অপরাজিত ছিলি বেশি, এবারও চিন্তা করবি অপরাজিত থাকার”। এটা আমাকে সাহায্য করছে।’
খুলনার ৪ জয়ের ১টির নায়ক আরিফুল। তবে নিয়মিত ব্যাট হাতে রান করছেন। লোয়ার অর্ডারে দলের চাহিদা পূরণ করছেন। এর আগে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ৪০ এবং ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন। দুটিতেই ম্যাচ জেতে খুলনা টাইটান্স। নিয়মিত রান পাওয়ায় এবং এভাবে শেষ দিকে ম্যাচ জেতানোয় আরিফুলের আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে, ‘এভাবে মাচ জিতলে আসলে আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যায়। আবার এরকম পরিস্থিতে পড়লে মনে পড়বে যে এভাবে ম্যাচ জিতিয়েছিলাম। এসব অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। পাশাপাশি ব্যাটিংয়ের সময় দু-একটি শট ব্যাটের মাঝখানে লাগলে এমনিই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়।’
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ নভেম্বর ২০১৭/ইয়াসিন/পরাগ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন