ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ঢাকায় দ্যুতি ছড়িয়েছেন দেশি তারকারা

আমিনুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ২৩ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঢাকায় দ্যুতি ছড়িয়েছেন দেশি তারকারা

মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, আবু জায়েদ রাহী ও ইমরুল কায়েস

ক্রীড়া ডেস্ক : সিলেটের পর বিপিএলের ঢাকা পর্বও শেষ হয়ে গেল। আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হবে চট্টগ্রাম পর্ব। সেখান থেকে আবার ঢাকায় ফিরবে বিপিএল। দুই পর্ব শেষে বিপিএলে দেশি ও বিদেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে সিলেট পর্বের চেয়ে ঢাকা পর্বে দেশি ক্রিকেটাররা ভালো করেছেন। সেটা যেমন ব্যাট হাতে, তেমনি বল হাতেও।

দেশি ও বিদেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের তুলনা করলে দুই পর্ব শেষে মোট উইকেটের দিক দিয়ে এগিয়ে আছেন দেশি বোলাররা। আর মোট রানের দিক দিয়ে এগিয়ে আছেন বিদেশি ক্রিকেটাররা। অবশ্য এবার পাঁচজন করে বিদেশি খেলানোয় দেশি ক্রিকেটারদের জন্য পারফর্ম করাটা খানিকটা চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তারপরও ঢাকা পর্বে দেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স ছিল উল্লেখ করার মতো।

সিলেট থেকে ফিরে ঢাকা পর্বের প্রথম ম্যাচেই দাপুটে ফিফটি করেন মুমিনুল হক। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ৪৪ বলে ৪টি চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৬৩ রানের ইনিংস খেলে রাজশাহীকে প্রথম জয় এনে দেন মুমিনুল। নির্বাচিত হন ম্যাচসেরা।

বিপিএলের একাদশতম ম্যাচে দুই দেশি ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আরিফুল হকের ব্যাটিং নৈপূণ্যে খুলনা টাইটান্স জয় পায় চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে। মাহমুদউল্লাহ ৩৩ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ৪০ রান করেন। আরিফুল ২৫ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায় ৪০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। এরপর আবু জায়েদ রাহী বল হাতে চিটাগংয়ের ৪ উইকেট তুলে নিয়ে খুলনার জয়টাকে সহজ করে দেন। এই ম্যাচে চিটাগংয়ের তাসকিন আহমেদও ৩ উইকেট নেন।

দ্বাদশ ম্যাচে দেশি ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে অপরাজিত ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন। দলের ৯ উইকেটের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

ত্রয়োদশ ম্যাচে খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে বিপাকে পরা ঢাকা ডায়নামাইটসকে দারুণ এক জয় এনে দেন জহুরুল ইসলাম অমি। ৪১ রানে পাঁচ উইকেট হারানোর পর কিরেন পোলার্ডের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ৬.১ ওভারে ৭৩ রানের জুটি গড়েন। পোলার্ড আউট হয়ে গেলেও অমি ৩৯ বলে অপরাজিত ৪৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ম্যাচসেরাও হন তিনি।

চতুর্থদশ ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে সৌম্য সরকার ৩০ রান করেন। এই ম্যাচেই ইমরুল কায়েস ৩৬ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে দলের জয়ে বড় অবদান রাখেন। ম্যাচসেরা হন তিনি।

১৭তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় রাজশাহী কিংস ও সিলেট সিক্সার্স। এই ম্যাচে সিলেট সিক্সার্সের সাব্বির রহমান ২৬ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায় ৪১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। অন্যদিকে রাজশাহী কিংসের মুমিনুল হক ৩৬ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪২ রানের ইনিংস খেলেন। আর জাকির হাসান ২৬ বলে ৪টি চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ম্যাচসেরা হন তিনি।

১৮তম ম্যাচেও বাংলাদেশের এনামুল হক বিজয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নজর কাড়েন। এই ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে বিজয় ৪৭ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৬২ রানের ইনিংস খেলেন। সৌম্য করেন ৩২। তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩৫ বলে অপরাজিত ৪৮ রানের ইনিংস খেলে খুলনাকে জয় উপহার দেন। এই ম্যাচে খুলনার আবু জায়েদ রাহী ৩ উইকেট নেন।

১৯তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় ঢাকা ও রাজশাহী। এই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা আলো ছড়াতে না পারলেও বোলাররা দ্যুতি ছড়ান। এই ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসের আবু হায়দার রনি ৩ উইকেট নেন। আর রাজশাহী কিংসের হোসেন আলী ৩টি ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২টি উইকেট নেন।

 

                    মুশফিকুর রহিম, আরিফুল হক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুমিনুল হক

২০তম ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ইমরুল কায়েস ৩২ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪৭ রানের নজড়কাড়া ইনিংস খেলেন। রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক মাশরাফি ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। কুমিল্লার মেহেদী হাসান ৪ ওভার বল করে ১৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে অবদান রাখেন।

২২তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় রংপুর রাইডার্স ও সিলেট সিক্সার্স। গেইল-ম্যাককালামের দিনে সিলেটের সাব্বির রহমান ও অধিনায়ক নাসির হোসেন নজড় কাড়েন। দলকে জয় এনে দিতে ব্যর্থ হলেও সাব্বির রহমান ৪৯ বলে ৭টি চার ও ২ ছক্কায় ৭০ রানের নজড়কাড়া ইনিংস খেলেন। অন্যদিকে নাসির হোসেন ৪৩ বলে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন।

২৩তম ম্যাচে রাজশাহী কিংসের হয়ে ৩৩ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন মুশফিকুর রহিম। অন্যদিকে খুলনা টাইটান্সের হয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৪৪ বলে করেন ৫৬ রান। তার সঙ্গে ১৯ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন আরিফুল হক।

২৪তম ম্যাচ তথা চট্টগ্রামে যাওয়ার আগে ঢাকা পর্বের শেষ ম্যাচে বল হাতে ভেলকি দেখান সাকিব আল হাসান। ৩.৫ ওভার বল করে মাত্র ১৬ রান দিয়ে রংপুর রাইডার্সের পাঁচ-পাঁচটি উইকেট নেন তিনি। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের এই ম্যাচে বল হাতে রংপুর রাইডার্সের মাশরাফি মুর্তজা, সোহাগ গাজী ও রুবেল হোসেন ২টি করে উইকেট নেন।

এক নজরে শীর্ষ পাঁচ বোলার ও ব্যাটসম্যান :
সেরা পাঁচ বোলার :
ক্র.নং    নাম                     দল                        উইকেট
১.    আবু জায়েদ রাহী        খুলনা টাইটান্স              ১২
২.    শহিদ আফ্রিদি            ঢাকা ডায়নামাইটস        ১১
৩.    আবু হায়দার              ঢাকা ডায়নামাইটস        ১১
৪.    সাকিব আল হাসান      ঢাকা ডায়নামাইটস        ১০
৫.    সুনীল নারিন              ঢাকা ডায়নামাইটস         ৮

সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যান :
ক্র.নং    নাম                             দল                        রান
১.    এভিন লুইস                  ঢাকা ডায়নামাইটস          ২৩৯
২.    রবি বোপারা                  রংপুর রাইডার্স               ২১৯
৩.    উপল থারাঙ্গা                সিলেট সিক্সার্স                 ২০৭
৪.    ইমরুল কায়েস              কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস          ২০১
৫.    মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ        খুলনা টাইটান্স                   ১৮৯

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ নভেম্বর ২০১৭/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়