ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

২১ মাসেও ফেনীতে প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই শিশু হত্যার ক্লু মেলেনি

সৌরভ পাটোয়ারী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
২১ মাসেও ফেনীতে প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই শিশু হত্যার ক্লু মেলেনি

নিহতদের ফাইল ফটো

ফেনী সংবাদদাতা: ফেনীর পশ্চিম উকিল পাড়ায় আলোচিত হত্যাকান্ড প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান হত্যার ক্লু গত ২১ মাসে উদ্ধার করতে পারেনি সিআইডি পুলিশ।

স্বজনদের অভিযোগ, মামলাটি অনেকটা হিমাগারে চাপা পড়ে আছে। আজো অধরা রয়ে গেছে হত্যাকারীরা। জানা গেছে, প্রধান সন্দেহভাজন বিদেশ চলে যাওয়ার অযুহাতে থমকে গেছে মামলাটির অগ্রগতি।

সিআইডি পুলিশ ও মামালার বাদী সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ফেনীর পশ্চিম উকিল পাড়ার আবদুর রউফ ভূঞা নিবাসে নিজ শয়ন কক্ষে গৃহবধূ মর্জিনা আক্তার মুক্তা (২৭), তার শিশু ছেলে মহিন মাহমুদ (৩) ও মেয়ে তাসলিম মাহমুদ মাহিকে (৮) হত্যা করে দূর্বৃত্তরা।  মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার এক বছর পর (১২ ডিসেম্বর ২০১৭) আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করে পুলিশ।

ঘটনাটিকে প্রথমে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হলেও পরে নিহতদের ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা রিপোর্টে প্রকাশ পায় এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। রিপোর্টে নিহতদের শরীরে আত্মহত্যার আলামত পাওয়া যায়নি। হত্যায় তৃতীয় পক্ষ জড়িত ছিল বলে নিশ্চিত করেন সিআইড পুলিশ।

মামলার বাদী নিহত মুক্তার ভাই আনোয়ার হোসেন মাছুম জানান, ঘটনার পর ২১ মাস পার হয়ে গেলেও পুলিশ ক্লু উদঘাটনে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি আসামিদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান।

ঘটনার দিন নিহতদের লাশের ছবি


এদিকে ঘটনার পর মুক্তার স্বামী ইতালী প্রবাসী তারেক আহম্মদ তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও লাইভ ভিডিওতে স্ত্রী-সন্তানের আত্মহত্যার বিষয়টি নাকচ করেছেন। তিনি এ ঘটনায় তার স্ত্রীর পরকীয়াসহ দুজনকে দায়ী করেছেন।

তিনি বলেন, ‘দশ বছর আগে পরকীয়া প্রেমিক সাইফুল ইসলাম ইমনের সাথে কথা বলার কারণে আমরা সবাই আমার স্ত্রীকে বকাঝকা করেছিলাম। আমার শাশুড়ি, মামা শ্বশুর এবং আমার শ্যালকরা সবাই জানে। ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর বকাঝকার পর ১০ ও ১১ ডিসেম্বর আমার স্ত্রী বাসার দরজা বন্ধ করে সিড়ির নিচে গিয়ে কার সাথে কথা বলেছে? তার প্রেমিক ইমন এবং নবীর সাথে জীবনেও কথা বলবে না বলে মুক্তার ওয়াদা ছিল। কিন্তু ভেতরে তাদের সাথে যোগাযোগ ছিল বলে  অভিযোগ করেন স্বামী তারেক। তিনি বলেন তারাই আমার স্ত্রী সন্তানকে খুন করেছে। নবী হচ্ছে মুক্তার চাচাতো ভাই। আর ইমন হচ্ছে মুক্তার খালা আর মামা মামীদের ধর্ম ভাই।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী সিআইডির উপ-পরিদর্শক (সাব-ইন্সপেক্টর) তারেক মাহমুদ বলেন, মোবাইলের কল লিস্ট ধরে তদন্ত চলছে। তিনি আসামির নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,  ‘খুনের প্রধান সন্দেহভাজন বিদেশ চলে যাওয়ায় মামলার অগ্রগতি কিছুটা থেমে গেছে। তবে আসামির খোঁজে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।’

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ফেনীর পশ্চিম উকিল পাড়ার  আবদুর রউফ ভূইঞা নিবাসে দুই শিশু সন্তানসহ প্রবাসীর স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করেছিল স্বামীর সঙ্গে কলহের জের ধরে সন্তানদের হত্যার পর তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এছাড়া উভয়ের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছে বলেও তখন স্বজনরা পুলিশকে জানিয়ে ছিল।




রাইজিংবিডি/ফেনী/১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮/সৌরভ পাটোয়ারী/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়