ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সরকারের স্ববিরোধিতার পরিচায়ক’

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৩, ৬ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সরকারের স্ববিরোধিতার পরিচায়ক’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সরকারের স্ববিরোধিতার পরিচায়ক বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে বিবেক বন্দি আছে বলেও মনে করে সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংস্থাটির কার্যালয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০১৮ ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ক আলোচনা সভায় সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তারা এ মন্তব্য করেন।

জাতিসংঘ ঘোষিত ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদযাপনে টিআইবির সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন টিআইবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সরকারের স্ববিরোধিতার পরিচায়ক। কারণ, জাতিসংঘের যে সনদের ওপর ভিত্তি করে আমরা আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদযাপন করছি, তার ১৩ অনুচ্ছেদে দুর্নীতি প্রতিরোধে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে জনগণ, সুশীলসমাজ ও গণমাধ্যমের সম্মিলিত প্রয়াসকে অপরিহার্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণ, গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংগঠনসমূহ যাতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে পারে, তার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দায়িত্বও সরকারের। কিন্তু এই আইন সে ধরনের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতে কোনোভাবেই সহায়ক নয়। সুতরাং অবিলম্বে এই আইনটি পরিবর্তন, পরিমার্জন, সংশোধন, এমনকি প্রয়োজনে বাতিল করে আবার নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে।’

সুলতানা কামাল বলেন, ‘একটা সমাজের বাকস্বাধীনতা থাকতে হবে, চিন্তার স্বাধীনতা থাকতে হবে এবং তার সাথে বিবেকের স্বাধীনতাও থাকতে হবে। আর আমাদের সজাগ হওয়ার জন্য বড় ভূমিকা রাখে গণমাধ্যম। যদি এটাই নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাহলে আমাদের সজাগ হওয়ার আর সুযোগ নেই। আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা এজন্যই করছি, কারণ এখানে আশঙ্কা আছে যে, এর মাধ্যমে বিবেক বন্দি আছে। আইনের বিভিন্ন ধারার অপব্যবহার হবে না, মানে এই না যে, তা কখনোই হবে না। তাই আমরা ‘যদি হয়’ এই ভয়ের মধ্যেই আছি।’  

মত প্রকাশের স্বাধীনতার গুরুত্ব তুলে ধরে ড. গওহর রিজভী বলেন, ‘আমরা সামাজিকভাবে দুর্নীতিবাজদের বর্জন করতে পারি না। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দ্বৈত আচরণ থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত নাগরিকসমাজও দুর্নীতির জন্য দায়বদ্ধ থাকবে।’

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম।

এ বছর প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ছয়জন সাংবাদিকসহ অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান সম্প্রচারের জন্য দুটি টেলিভিশনের প্রামাণ্য অনুষ্ঠান এ বছর টিআইবির অনুসন্ধানীমূলক সাংবাদিকতা পুরস্কার অর্জন করেছে।

প্রিন্ট মিডিয়া (জাতীয়) বিভাগে পুরস্কার অর্জন করেছেন দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মো. আনোয়ার হোসাইন, খুলনার দৈনিক প্রবাহ পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মুহাম্মদ নুরুজ্জামান, দৈনিক সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি রাজিব নূর, উপ-সম্পাদক জাহিদুর রহমান, একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মুফতি পারভেজ নাদির রেজা, মাছরাঙা টেলিভিশনের পাবনা ব্যুরো অফিসের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক উৎপল মির্জা ও ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের তালাশ টিম।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ ডিসেম্বর ২০১৮/এম এ রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়