ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

‘৩-৪ মিনিট আগে এলে ভয়ানক কিছু ঘটতে পারত’

আবু হোসেন পরাগ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৪২, ১৫ মার্চ ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘৩-৪ মিনিট আগে এলে ভয়ানক কিছু ঘটতে পারত’

ক্রীড়া প্রতিবেদক : নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে একটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। নিজেদের তাই খুবই ভাগ্যবান ভাবছেন বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার খালেদ মাসুদ পাইলট।

শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে অনুশীলন শেষে পাশের একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন তামিম-মিরাজরা। মসজিদের কাছে যাওয়ার পর তারা জানতে পারেন, সেখানে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। তখন তারা বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ বাসেই বসে থাকার পর নেমে পায়ে হেঁটে হ্যাগলি ওভালে ফিরে যান। ড্রেসিংরুমে ঘণ্টা দুয়েক অবরুদ্ধ থাকার পর সবাইকে নিরাপদে হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

আল নূর নামের মসজিদে একজন বন্দুকধারীর এই হামলায় ৩০ জন নিহত হয়েছেন। এদিন জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের আরো একটি মসজিদে বন্দুকধারীর হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। দুই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো অনেকে।

হোটেলে ফিরে ম্যানেজার খালেদ মাসুদ সংবাদমাধ্যমকে জানালেন ঘটনার ভয়াবহতা, ‘এটা খুবই স্বাভাবিক (আতঙ্কিত হওয়া)। আপনার সামনে যখন এমন সন্ত্রাসী আক্রমণ হয়েছে এবং আপনি সেটা সরাসরি দেখেছেন। রক্তাক্ত অবস্থায় মানুষ বেরিয়ে আসছে। খুবই স্বাভাবিক যে কোন মানুষই ভেঙে পড়ার কথা। ওই মুহূর্তে নিজের গায়ের ওপর যে আসবে না এটা কেউ জানত না। আমি প্লেয়ারদেরকে দেখেছি বাসের মধ্যে, অনেকেই কান্নাকাটি করছিল, কী করতে পারে, কীভাবে কি করলে এখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। এটা খুবই কঠিন। সবার ওপরেই মানসিক প্রভাব ফেলে। আমি ম্যানেজার হিসেবে প্লেয়ারদেরকে এখানে (হোটেল) নিয়ে আসার চেষ্টা করেছিলাম।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন বন্দুকধারী মসজিদে ঢুকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে মুসল্লিদের ওপর নির্বিচারে বৃষ্টির মতো গুলি করছে। অন্য অনেকের মতো খালেদ মাসুদের কাছেও বিষয়টি সিনেমার মতো লেগেছে, ‘অ্যাকসিডেন্টটা তো দেখেছেন সবাই, আমরা কেউই আশা করিনি এমন কিছু হবে। কোনো দেশেই আমরা চাই না এই ধরনের অ্যাকসিডেন্ট হোক। আমরা ভাগ্যবান, বাসে অনেকেই ছিল। বেশ কয়েক জনই ছিল। সৌম্য সরকার বা যারা ছিল, তারা হয়তো নামাজ পড়তে যাচ্ছিল না, দুই-একজন হোটেলে ছিল। বাদ বাকি সবাই বাসে ছিল।’

‘আমরা খুবই কাছে ছিলাম। মসজিদ আমরা বাস থেকেই দেখতে পাচ্ছিলাম। আমরা হয়তো ৫০ গজ দূরে ছিলাম। আমি বলব আমরা খুবই ভাগ্যবান। আর যদি ৩-৪ মিনিট আগে চলে আসতাম; তাহলে আমরা মসজিদেই হয়তো থাকতাম। হয়তো বিশাল, ভয়ানক একটা ঘটনা ঘটে যেতে পারত। আমরা খুবই ভাগ্যবান ছিলাম। আমরা ভিডিও এর মতন দেখেছি। পুরো মুভিতে যেমন দেখায়। বাস থেকেই দেখতে পাচ্ছিলাম আমরা, মানুষ রক্তাক্ত অবস্থা বেরিয়ে আসছে। আমরা প্রায় ৮-১০ মিনিট বাসেই ছিলাম। সবাই মাথা নিচু করে ছিলাম যদি কোনো কারণে ফায়ার হতে থাকে। পরে দেখলাম যারা আক্রমণ করছে তারা যদি বেরিয়ে এসে এলোপাথাড়ি গুলি করে।’

হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড তৃতীয় ও শেষ টেস্ট বাতিল করা হয়েছে। খালেদ মাসুদ জানালেন, তারা যত দ্রত সম্ভব দেশে ফিরবেন, ‘এখনো চূড়ান্ত সিধান্ত হয়নি। ফ্লাইট শিডিউলের একটা ব্যাপার থাকে। টিকিটের একটা ব্যাপার থাকে। দুই একজন হলে খুব সহজ হতো। কিন্তু আমরা প্রায় ১৯ জন যাব, এখান থেকে ব্যাক করে ঢাকায়। কিছু কোচ আছে কেউ হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাবে, কেউ হয়তো দক্ষিণ আফ্রিকা যাবে। তারা হয়তো খুব দ্রুত সিঙ্গেল টিকিট পেয়ে যাবে। এই ১৯ জনের জন্য যেভাবেই হয় এক ফ্লাইটে না হলেও যেন আগে পিছে করে যত দ্রুত সম্ভব চলে যাওয়া যায়।’

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ মার্চ ২০১৯/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়