ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সাকিবের না থাকাটা দুঃখজনক : বিসিবি সভাপতি

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২১, ২৯ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাকিবের না থাকাটা দুঃখজনক : বিসিবি সভাপতি

ক্রীড়া প্রতিবেদক : আবার সাকিব আল হাসানকে ঘিরে বিতর্ক। বাংলাদেশ দল যখন বিশ্বকাপে যাওয়ার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন সাকিব ‘বুড়ো আঙুল’ দেখালেন তারই দলকে! তারই সতীর্থদের! দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিবিকে!

বিশ্বকাপগামী দলের ফটোসেশন আছে জেনেও মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে থাকার প্রয়োজন মনে করেননি দেশের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটার। কেন থাকেননি? সেই উত্তর নেই বিসিবির কারো আছে। এমনকি সাকিব কেন ফটোসেশনে ছিলেন না, সেই উত্তর জানে না তার সতীর্থরা, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগও!

চোট কাটিয়ে ফিরে সাকিব চলে গিয়েছিলেন ভারতে আইপিএল খেলতে। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের জার্সিতে প্রথম ম্যাচ খেলেই সাইডবেঞ্চে চলে যান। নিয়মিত খেলার সুযোগ না পাওয়ায় সাকিবকে ২২ এপ্রিল থেকে বিশ্বকাপের ক্যাম্পে যোগ দিতে বোর্ড চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু সাকিব বোর্ডকে জানান, হায়দরাবাদের দুই-তিনজন বিদেশি ক্রিকেটার চলে যাবে। তার খেলার সম্ভাবনা আছে। দুটি ম্যাচ খেলেই ফিরবেন। 

আইপিএলের মাঝপথ থেকে গত রোববার দেশে ফিরে সোমবার মাঠে এসেছিলেন সাকিব। কিছু সময় থেকে, সতীর্থদের সঙ্গে দেখা করে ত্যাগ করেন মিরপুর শের-ই-বাংলা। বিশ্বকাপের জার্সি, অনুশীলন জার্সি, ব্যাগ, কিট গ্রহণ করে চলে যান নিজের মতো করে।

অফিসিয়াল ফটোসেশনে সবার চোখ ছিল জার্সির দিকে। জার্সি উন্মোচন হবে, তা আগেই জানিয়েছিল বোর্ড। বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন প্রথমেই মাশরাফির হাতে তুলে নেন বিশ্বকাপের জার্সি। এরপর পুরো দল দাঁড়িয়ে বোর্ড প্রধান ও বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে ছবি তোলে। এরপর আলাদা করে পুরো দল ফটোসেশনে অংশ নেয়।  সাকিব বাদে ১৫ জনের দলের বাকিরা সবাই উপস্থিত ছিলেন বিশ্বকাপের জার্সি গায়ে। সাকিবের অনুপস্থিতি নিয়ে নিজের হতাশার কথা জানান নাজমুল হাসান।

‘দুঃখজনক। আর কী বলব। এটা দুঃখজনক, যেহেতু টিম ফটোসেশন ছিল। আমি এসে জিজ্ঞেস করেছিলাম ওর কথা, পরে ফোন করেছিলাম সাকিবকে। জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘কোথায় তুমি?’ ও যে এসেছে আমি জানিও না। পত্রিকাতে পড়ে দেখেছি। আমি বাকিদের জিজ্ঞেস করলাম ফটোসেশনের কথা সাকিব জানে কি না। ওরা বলল, ‘ওকে আগেই বলা হয়েছে যে, আজ ফটোসেশন আছে দলের।’ জাতীয় দল যাচ্ছে বিশ্বকাপে, ফটোসেশন আছে দলের। যেহেতু টিমের প্র্যাকটিসে ও ছিল না, আমরা আশা করেছিলাম থাকবে। কিন্তু সে নেই।’
 


ফটোসেশনের পর মাঠেই এক বোর্ড পরিচালক বিরক্ত হয়ে বলেন,‘যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকে কিংবা কোনো সমস্যা থাকে সেটা জানানো জরুরি। এমনটা তো অশোভনীয়। পুরো দল সকাল থেকে অনুশীলন করেছে। এরপর এখানে এসেছে। ক্লান্ত তো ওরাও।’

অবশ্য সাকিবের এমন ‘এড়িয়ে চলা’ নতুন কিছ নয়। গত নভেম্বরে বিসিবি যখন তামিম-মুশফিকের সঙ্গে তাকেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান করায় বিশেষ সম্মাননা দিয়েছিল, সে অনুষ্ঠানেও সাকিব ছিলেন না।

সাকিবের এমন আচরণে ‘অভ্যস্ত’ সতীর্থরা! বোর্ড প্রধান নিজ মুখেই বললেন এমন কথা, ‘আমার মনে হয় দলের অন্যরা এত দিনে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া আর কী বলব। আমি মনে করি, এটা ওর জন্যই দুর্ভাগ্য। ও যে আমাদের এই দলের সাথে, যে দল বিশ্বকাপে যাচ্ছে, এটার সাথে থাকতে পারল না, আমি মনে করি, ওরই কপাল খারাপ।

তাহলে কি দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাও সাকিবের এমন সব আচরণের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গেল? বোর্ড প্রধান বললেন, ‘প্রশ্নই ওঠে না। ছাড় দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।  যেহেতু পরশু দিনই দল চলে যাচ্ছে, এটি নিয়ে তাই বেশি কথা বলছি না আমরা। কিন্তু আমি অবশ্যই মনে করি, এটি একটি দুঃখজনক ব্যাপার।’

সাকিব বাদে পুরো দল ফটোসেশনের পর বিকেলে টিম মিটিং করেছে।  বিশ্বকাপের আগে এদিনই ছিল দেশে ক্রিকেটারদের শেষ প্রস্তুতি। মিরপুরে এদিন ঘটা করেই ক্রিকেটারদের বিদায় দিল দল। মাশরাফি উপস্থিত হয়েছিলেন সংবাদ সম্মেলনে। এদিন পুরো দল ছিল ‘ফ্রি’। সবাই যার যার মতো করে কথা বলেছেন গণমাধ্যমে।  সাকিব পুরো উৎসবেই যেন পানি ঢেলে দেন!

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ এপ্রিল ২০১৯/ইয়াসিন/পরাগ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়